বাসায় ফিরলেন রুবেল
সম্প্রতি গুজব ছড়ায় মারা গেছেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোশাররফ হোসেন রুবেল। তবে সেদিন স্ত্রী জানিয়েছিলেন, রুবেলের সুস্থতার উন্নতি ঘটছে,তাকে বাসায় নিয়ে যাওয়া হবে।
অবশেষে সেই গুজব গুঁড়িয়ে দিয়ে বাড়ি ফিরেছেন রুবেল। শুক্রবার (১৫ এপ্রিল) হাসপাতাল থেকে মুক্তি মিলেছে রুবেলের। হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরেছেন তিনি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রুবেলের স্ত্রী ফারহানা রুপা জানিয়েছেন, আলহামদুলিল্লাহ, মোশাররফ রুবেলকে আজ হাসপাতাল থেকে বাসায় নিয়ে আসা হয়েছে। তিনি ভালো আছেন। সকলের দোয়াপ্রার্থী।
মোশাররফ হোসেন বাংলাদেশের একমাত্র ক্রীড়া শিক্ষা প্রতিষ্ঠান (বিকেএসপি) থেকে তার উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা সম্পন্ন করেন। এরপর প্রথমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটে (আইইআর) ১৯৯৯-২০০০ শিক্ষাবর্ষে ভর্তি হন। এর পরের বছর এই ইন্সটিটিউট পরিবর্তন করে ইতিহাস বিভাগে চলে যান।
আরও পড়ুন : রিকসা চালকদের মাঝে ইফতার বিতরণ
২০০৮ সালে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলার মধ্য দিয়ে জাতীয় দলে অভিষেক হয় তাঁর। তিন ম্যাচ ওয়ানডে খেলে মাত্র ১ উইকেট পাওয়ায় দল থেকে বাদ পড়েন। এরপর তাঁকে ২০১৩ সালে শ্রীলঙ্কা সফরে নিয়েছিল দল। কোনো ম্যাচ খেলার সুযোগ না পেয়ে আবার বাদ পড়েন। ২০১৬ সালে আট বছর পর জাতীয় দলের জার্সিতে মাঠে নেমে ৩ উইকেট পান। দলকে জেতাতে বড় ভূমিকাও রাখেন তিনি। কিন্তু পরের ম্যাচে উইকেট না পাওয়ায় আবার জাতীয় দল থেকে বাদ পড়েন।
জাতীয় দলে জায়গা হারালেও ঘরোয়া ক্রিকেটে তিনি ছিলেন নিয়মিত মুখ। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ১১২ ম্যাচে তার ঝুলিতে ৩৯২ উইকেট। ব্যাট হাতে দুইটি শতক ও ১৬টি অর্ধশতকে ৩৩০৫ রান তার সংগ্রহে। ঘরোয়া ক্রিকেটে সর্বশেষ খেলেছেন ২০১৯ বিপিএলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ানসের হয়ে।
২০১৯ সালে ব্রেইন (মস্তিষ্কে) টিউমার ধরা পড়লে মাঠ থেকে ছিটকে পড়েন মোশাররফ রুবেল। দেড় বছর চিকিৎসা নিয়ে সুস্থ হয়ে উঠছিলেন। কিন্তু ২০২১ সালের জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে এমআরআই করার পর দেখা গেছে, পুরনো টিউমারটি আবার নতুন করে বাড়া শুরু করেছে। তারপর থেকে আবার শুরু হয় কেমোথেরাপি দেয়া। সব মিলিয়ে ২৪টি কেমোথেরাপি নিয়েছেন তিনি।
অবস্থার উন্নতি না হওয়াতে গত বছরের নভেম্বরের দ্বিতীয় সপ্তাহে ভারতের একটি হাসপাতালে আবারও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে রুবেলের ব্রেন টিউমার অপসারণ করা হয়। তাতেও খুব একটা উন্নতি হয়নি। এরপর সর্বশেষ চলতি মাসের ১৪ তারিখ রাতে চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে স্কয়ার হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) নেওয়া হয়।
চিকিৎসায় প্রচুর অর্থ ব্যয় হওয়ায় এক সময় নিজের ফ্ল্যাট বিক্রির কথাও জানিয়েছিলেন ৩৯ বছর বয়সী ঘরোয়া ক্রিকেটের এই পরিচিত মুখ। বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি) এবং খেলোয়াড়েরাও তাঁর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন সময় সাহায্যের হাত বাড়িয়েছেন।