নেইমারের জোড়া গোলে পিএসজি’র জয়

গোলের পরে সতীর্থদের সাথে উল্লাস
গোলের পরে সতীর্থদের সাথে উল্লাস  © সংগৃহীত

ব্রাজিলিয়ান তারকা নেইমারের জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়ন্স লিগের নকআউট পর্বে ওঠার সম্ভাবনা জোরালো করেছে পিএসজি। বুধবার রাতে এইচ গ্রুপের ম্যাচে ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে ম্যানচেস্টার ইউনাটেডকে ৩-১ গোলে হারিয়েছে ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। ফলে প্রথম লেগে ঘরের মাঠে হারের মধুর প্রতিশোধও নেওয়া হলো নেইমার-এমবাপ্পেদের। গত অক্টোবরে ইউনাইটেডের বিপক্ষে ২-১ গোলে হেরে আসর শুরু করেছিল গতবারের রানার্সআপরা।

কিছুটা সৌভাগ্যের ছোঁয়া, সঙ্গে নেইমারের নৈপুণ্যে ম্যাচের ষষ্ঠ মিনিটে এগিয়ে যায় পিএসজি। কিলিয়ান এমবাপ্পের শটে বল প্রতিপক্ষের একজনের পায়ে লেগে চলে যায় ছয় গজ বক্সের ডান দিকে, সেখানে দুরূহ কোণ থেকে জোরালো শটে গোলটি করেন বিশ্বের সবচেয়ে দামি ফুটবলার নেইমার। আসরে এটা তার দ্বিতীয় গোল।

চার মিনিট পর ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারতো; তবে আলেস্সান্দ্রো ফ্লোরেন্সির জোরালো শট ঝাঁপিয়ে ঠেকান গোলরক্ষক ডেভিড ডি গেয়া।

২১তম মিনিটে লেয়ান্দ্রো পারেদেসের সঙ্গে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের মাঝে তাকে মাথা দিয়ে গুতো মেরে বসেন ইউনাইটেডের মিডফিল্ডার ফ্রেড। ঘটনাটি কেন্দ্র দুই দলের খেলোয়াড়রা কিছুক্ষণের জন্য বিবাদে জড়িয়ে পড়েন। পরে ভিএআরের সাহায্যে ফ্রেডকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। তাকে সৌভাগ্যবানই বলা যায়, কারণ প্রতিপক্ষকে মাথা দিয়ে আঘাত করায় লাল কার্ড পেতে পারতেন তিনি।

৩২তম মিনিটে সৌভাগ্যসূচক গোলে সমতায় ফেরে ইউনাইটেড। অ্যান্থনি মার্সিয়ালের শট পিএসজি গোলরক্ষক ঝাঁপিয়ে ঠেকানোর পর এক সতীর্থের পা ঘুরে ডি-বক্সের মুখ থেকে জোরালো শট নেন র‌্যাশফোর্ড। বল ডিফেন্ডার দানিলোর পায়ে লেগে কিছুটা দিক পাল্টে পোস্ট ঘেঁষে জালে জড়ায়।

দ্বিতীয়ার্ধের চতুর্থ মিনিটে এগিয়ে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ নষ্ট হয় ইউনাইটেডের। দারুণ এক প্রতি-আক্রমণে র‌্যাশফোর্ড মাঝমাঠ থেকে বল নিয়ে এগিয়ে সতীর্থের সঙ্গে একবার দেওয়া নেওয়া করে ডি-বক্সে ঢুকে পেনাল্টি স্পটের কাছে মার্সিয়ালকে খুঁজে নেন। কিন্তু ফাঁকায় বল পেয়ে অবিশ্বাস্যভাবে উড়িয়ে মারেন ফরাসি এই ফরোয়ার্ড। আট মিনিট পর পাল্টা আক্রমণে আবারো প্রতিপক্ষ শিবিরে ভীতি ছড়ায় স্বাগতিকরা। মাঝমাঠ থেকে বল ধরে এগিয়ে প্রায় ২৫ গজ দূর থেকে কাভানির নেওয়া শট আগুয়ান গোলরক্ষকের ওপর দিয়ে গিয়ে ক্রসবারে লাগে। ফিরতি বলে মার্সিয়ালের শট প্রতিহত করেন মার্কিনিয়োস।

৬৪তম মিনিটে বাঁ দিক থেকে ফ্লোরেন্সির ক্রসে মার্কিনিয়োসের হেড ক্রসবারের একটু ওপর দিয়ে চলে যায়। এর পাঁচ মিনিট পর আর ব্যর্থ হননি এই ব্রাজিলিয়ান ডিফেন্ডার। ডান দিক থেকে আবদু দিয়ালোর পাস ছোট ডি-বক্সের মুখে নিয়ন্ত্রণে নিয়ে টোকা দিয়ে গোলরক্ষককে পরাস্ত করেন তিনি।

পরের মিনিটেই রেফারির বিতর্কিত সিদ্ধান্তে ১০ জনের দলে নেমে আসে ইউনাইটেড। আন্দের এররেরাকে ফাউল করায় দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখেন ফ্রেড, যদিও স্লাইড ট্যাকলে বলে পা লাগিয়েছিলেন তিনি।

এক জন কম নিয়ে বাকি সময়ে আর তেমন কোনো সুযোগ তৈরি করতে পারেনি ওলে গার্নার সুলশারের দল। নির্ধারিত সময়ের শেষ পাঁচ মিনিটে চাপ বাড়ায় পিএসজি। ৮৮তম মিনিটে ম্যাচ শেষ করে দেওয়ার সুযোগ পেয়েছিলেন এমবাপ্পে, কিন্তু তার কোনাকুনি শট একটুর জন্য লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।

যোগ করা সময়ের প্রথম মিনিটে সব অনিশ্চয়তার ইতি টানেন নেইমার। রাফিনিয়ার কাটব্যাক ডি-বক্সে ফাঁকায় পেয়ে অনায়াসে প্লেসিং শটে স্কোরলাইন ৩-১ করেন তিনি।

গ্রুপের অন্য ম্যাচে সাত গোলের রোমাঞ্চকর লড়াইয়ে ইস্তানবুল বাসাকসেহিরকে ৪-৩ গোলে হারায় লাইপজিগ। পাঁচ রাউন্ড শেষে ইউনাইটেড, পিএসজি ও লাইপজিগের পয়েন্ট সমান ৯ করে। শীর্ষে আছে ইংলিশ ক্লাবটি। পরের দুটি স্থানে যথাক্রমে পিএসজি ও লাইপজিগ। শেষ রাউন্ডে আগামী সপ্তাহে মুখোমুখি হবে পিএসজি-বাসাকসেহির ও ইউনাইটেড-লাইপজিগ।


সর্বশেষ সংবাদ