কী হয়েছিল ম্যারাডোনার?

ডিয়েগো ম্যারাডোনা
ডিয়েগো ম্যারাডোনা  © ফাইল ফটো

আর্জেন্টিনা ফুটবল লিজেন্ড ডিয়েগো ম্যারাডোনা মারা গেছেন। বুধবার রাতে নিজের বাড়িতে তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন বলে জানিয়েছে আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলো। তার বয়স হয়েছিল ৬০ বছর।

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলোর খবরে বলা হয়েছে, ফুটবলের এই জাদুঘর বেশ কিছুদিন ধরেই অসুস্থ ছিলেন। গত মাসে মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হলে হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। করা হয় সফল অস্ত্রোপচারও। এরপর সুস্থ হয়ে সম্প্রতি হাসপাতাল থেকে বাসায়ও ফিরেছিলেন। সম্প্রতি ৬০ বছর পূর্তির জন্মদিনও উদযাপন করেন এই বিশ্ব তারকা।

১৯৬০ সালের ৩০ অক্টোবর। বুয়েন্স আইরেসের লানুস শহরে জন্ম দিয়েগো আর্মান্দো ম্যারাডোনার। চিতরো দিয়েগো ম্যারাডোনা ও দোনা তোতা দালমা সালভাদর ফ্রাঙ্কোর তিন কন্যা সন্তানের পর ঘর আলো করে জন্ম নেয় এক পুত্র সন্তানের। দরিদ্র পরিবারটি সে সময় ঘুণাক্ষরেও টের পায়নি, এই ছেলেই একদিন বিশ্বজয় করবে। তার হাত ধরেই বিশ্বকাপ ফুটবল জিতবে আর্জেন্টিনা।

এক প্রতিবেদনে বলা হয়, প্রথম দিকে দ্রুত হাসপাতাল ছেড়ে যাওয়ার কথা ছিল তার। কিন্তু অ্যালকোহল আসক্তির কারণে নানা জটিলতা দেখা দেয়। অনেক বেশি সময় সেখানে থাকতে হয়।

যদিও তার চিকিৎসকদের অভিযোগ ছিল, জীবনের প্রতিটি সময় নিয়মকে ‘বুড়ো আঙুল’ দেখিয়েছেন ম্যারাডোনা। নিজের স্বভাবসূলভ আচরণে মগ্ন থাকা ম্যারাডোনা হাসপাতালে থাকতে চাননি। চিকিৎসকের নিষেধের পরও হাসপাতাল ‍ছাড়তে উঠেপড়ে লেগেছিলেন। এরমধ্যেই শেষপর্যন্ত গত ১২ নভেম্বর অ্যাম্বুলেন্সে করে হাসপাতাল ছাড়েন ম্যারাডোনা। কিন্তু বুধবার হৃদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে থেমে যায় তার জীবনযাত্রা।

খবরে বলা হয়েছে, মাদকাসক্তি নিয়ে ভীষণ সমস্যায় ভুগেছেন ম্যারাডোনা। তাকে পুনর্বাসনের জন্য নেওয়া হয়েছিল তিগ্রে-র একটি মাদকাসক্তি নিরাময় কেন্দ্রে।

আর্জেন্টিনা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (এফএ) এক টুইট বার্তার খবরটি নিশ্চিত করেছে। বলেছে, ‘আমরা ভীষণ শোকার্ত আমাদের কিংবদন্তির মৃত্যুতে। আপনি সবসময় থাকবেন আমাদের হৃদয়ে।’

আর্জেন্টাইন সংবাদমাধ্যম টিওয়াইসি স্পোর্টস জানিয়েছে, বুধবার স্থানীয় সময় বিকেলে হৃদরোগে আক্রান্ত হন এ ফুটবল কিংবদন্তি। এ থেকে আর ফিরতে পারেননি।

১৯৮৬ বিশ্বকাপে ফুটবলের জাদু দেখিয়েছিলেন এ কিংবদন্তি। সে বছর আর্জেন্টিনাকে প্রায় একাই শিরোপা জিতিয়েছিলেন তিনি। এছাড়া ইতালিয়ান ক্লাব নাপোলির হয়ে স্মরণীয় মৌসুম উপহার দিয়েছেন ম্যারাডোনা। নাপোলিকে দুবার সিরি ‘আ’ ও উয়েফা কাপ জিতিয়েছেন এ তারকা।

ম্যারাডোনা ক্লাব ক্যারিয়ারে খেলেছেন বোকা জুনিয়র্স, বার্সেলোনা, নাপোলি, সেভিয়া, নিউওয়েলস ওল্ড বয়েজের হয়ে। তিনি বিশ্ব একমাত্র ফুটবলার যিনি দলবদলে রেকর্ড গড়েন। একবার বার্সেলোনায় যাওয়ার সময় আরেকবার নাপোলিতে গিয়ে। কোচিং ক্যারিয়ারে আর্জেন্টিনা জাতীয় দল ছাড়াও তিনি দুবাইয়ের ক্লাব আল ওয়াসলের কোচ হিসেবে কাজ করেছেন।