১০ অধিনায়কের বিশ্বকাপ ভাবনা, মাশরাফি কী বললেন? (ভিডিও)

কড়া নাড়ছে আইসিসি ক্রিকেট বিশ্বকাপ। কয়েক দিন পর ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের দশটি মাঠে প্রায় দেড় মাস ধরে চলবে এ ক্রিকেট লড়াই। যেখানে দশটি দেশ লড়াই করবে একটি শিরোপার জন্য। ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে বসবে ক্রিকেট বিশ্বকাপের দ্বাদশ আসর। এ আসরের সবচেয়ে হাইভোল্টেজ ম্যাচের স্বীকৃতি পেয়েছে চির প্রতিদ্বন্দ্বী ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার প্রথম রাউন্ডের ম্যাচটি। যা আগামী ১৬ জুলাই ইংল্যান্ডের ওল্ডট্রাফোডে অনুষ্ঠিত হবে।

রাজনৈতিক কারণে এ দুটি দেশ একে অপরের মুখোমুখি না হলেও আইসিসির মেগা ইভেন্টে মুখোমুখি হতে বাধ্য দেশ দুটি। তাই বিশ্বকাপে সবার দৃষ্টি ১৬ জুলাইর ম্যাচটির দিকে। দর্শকদের আগ্রহের কমতি নেই ম্যাচটি ঘিরে। তবে ম্যাচের আগের পরিসংখ্যান বলছে বিশ্বকাপের মঞ্চে ফেভারিটের তকমা নিয়েই নামবে ভারত। কারণ এখন পর্যন্ত ওয়ানডে ফরমেটের বিশ্বকাপ মঞ্চে খেলা ৬টি ম্যাচের সবগুলোতে জয় পেয়েছে ভারত। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের চারটি ম্যাচ তালিকায় আনলে ম্যাচ সংখ্যা দাঁড়াবে দশটিতে।

ভারত-পাকিস্তান ছাড়াও বিশ্বকাপের অন্যসব ম্যাচ নিয়ে অধিনায়করা কী ভাবছেন? আমাদের মাশরাফি বিন মর্তুজার বক্তব্য বা কী?

ইয়ন মর্গান: আমার মনে হয় না কেউ কারও চেয়ে খুব এগিয়ে আছে। বিশ্বের সেরা দশটি দল খেলতে এসেছে। নজিরবিহীন প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা যাবে এ বার। উঁচু মানের ক্রিকেটও দেখা যাবে। আমরা প্রত্যেকে উন্মুখ হয়ে আছি। এখানে যে কয়জন অধিনায়ক বসে আছেন, তাঁরা প্রত্যেকে এক পা হারিয়েও লর্ডসে বিশ্বকাপ ফাইনাল খেলতে চাইবেন। ছোটবেলা থেকে এই স্বপ্ন তো সবাই দেখেছেন। এখন আমরা সকলে তৈরি। প্রথম ম্যাচ খেলার জন্য ছটফট করছি।

বিরাট কোহলি: আগামী ৩০ মে ওভালে ইংল্যান্ড বনাম দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচ দিয়ে শুরু হচ্ছে ২০১৯ বিশ্বকাপ। ভারত প্রথম নামছে ৫ জুন সাউথ্যাম্পটনে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে। মর্গানের ইংল্যান্ডকে সকলে ফেভারিট বলছেন। এই নিয়ে বাকি নয় অধিনায়কও একমত। এর মধ্যে টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক কোহালির মতে, এবারের বিশ্বকাপ হবে হাইস্কোরিং।

“হাইস্কোরিং টুর্নামেন্ট হতে চলেছে। তবে ৩৭০-৩৮০ রানের মতই বিশ্বকাপের মঞ্চে ২৬০-২৭০ রান তাড়া করাটা কঠিন হবে। পরের দিকে খুব বেশি হাইস্কোরিং ম্যাচ হওয়া কঠিন। প্রথম দিকে কোনও কোনও দল বড় রান করতে পারে কিন্তু পরে ২৫০ রানের মতো ম্যাচই হবে। বিশ্বকাপের মঞ্চে চাপটা এমনটাই থাকবে।''

অ্যারন ফিঞ্চ: অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক অ্যারন ফিঞ্চ স্বাগত জানালেন স্টিভ স্মিথ এবং ডেভিড ওয়ার্নারের প্রত্যাবর্তনকে। বল-বিকৃতি কেলেঙ্কারির জেরে এক বছরের জন্য নির্বাসিত হয়েছিলেন তারা। অধিনায়ক ফিঞ্চ তার দলের শক্তি নিয়ে বলেছেন, “ফিরে আসার পর থেকেই স্মিথ আর ওয়ার্নার অসাধারণ খেলছে। দলের জন্য প্রচুর অবদান রাখছে ওরা। আমাদের মনোবল এখন তুঙ্গে।”

“খেলা শুরু হলে দর্শকেরা হয়তো একটা ভূমিকা নেবেন, আমি জানি। বিশেষ করে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে বিশ্বকাপ ম্যাচে বা যখন পরে আমরা অ্যাশেজ খেলব। কিন্তু সেটা তো বিশ্বের যে কোনও জায়গাতেই সামলাতে হতে পারে।”

ফাফ দু প্লেসি: দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক ফাফ দু প্লেসিও উত্তেজিত বিশ্বকাপের এবারের ফরম্যাট নিয়ে। বলছেন, “প্রত্যেক দলের সঙ্গে খেলার ব্যাপারটা খুবই উপভোগ্য হতে চলেছে।”

কেন উইলিয়ামসন: ২০১৫ বিশ্বকাপে অস্ট্রেলিয়ায় রানার্সআপ হয়েছিল নিউজিল্যান্ড। এবার আরো একধাপ এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যের কথা জানালেন দলটির এবারের অধিনায়ক- “গত বিশ্বকাপের কয়েকজন ক্রিকেটার এবারেও আছে। কিন্তু মাঝখানে চার বছর পেরিয়ে গিয়েছে। তাই অনেক নতুন মুখও এসেছে।”

“র‌্যাঙ্কিং, ফেভারিট, আন্ডারডগ-এ সব নিয়ে অনেক কথা হচ্ছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হচ্ছে, ভারসাম্য। যেকোনও দিন যেকোনো কিছু ঘটতে পারে। এবারের টুর্নামেন্ট সে রকমই হতে যাচ্ছে।”

জেসন হোল্ডার: ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়কও বাকিদের সঙ্গে সুর মিলিয়ে বলছেন, ‘‘প্রত্যেক দলের সঙ্গে খেলতে পারা দারুণ এক অভিজ্ঞতা হতে যাচ্ছে। আমরা কোয়ালিফায়ার্স খেলে অনেক পরিশ্রম করে এখানে এসেছি। বিশ্বের সেরা দশটি দল বিশ্বকাপে রয়েছে। প্রত্যেকে প্রত্যেকের সঙ্গে খেলবে। উত্তেজনাপূর্ণ এই ফরম্যাটের দিকে সকলে তাকিয়ে রয়েছে। যে দল এবার বিশ্বকাপ জিতবে, তারা সত্যিকারের বিশ্বজয়ী।”

মাশরাফী বিন মোর্ত্তজা: টাইগারদের অধিনায়ক জানিয়ে দিলেন, তাদের দল চমক দেখাতে পারে।- ‘‘দারুণ একটা গ্রুপ রয়েছে আমাদের। অভিজ্ঞতা আর তারুণ্যের ভাল মিশ্রণ রয়েছে। ক্রিকেট এমন একটা খেলা, যেখানে যে কোনও দল অন্য একটা দলকে হারিয়ে দিতে পারে। যদি শুরুটা ভাল হয়, বিশ্বকাপে অনেক দূর যেতে পারি।”

সরফরাজ আহমেদ: পাকিস্তান দলের অধিনায়ক বিশ্বকাপে দলকে নেতৃত্ব দিতে পারাটাকে দারুণ একটি ব্যাপার হিসেবে দেখছেন। দলকে সাফল্য এনে দিতে সর্বোচ্চ চেষ্টা করে করবেন বলে জানালেন তিনি, “এই প্রতিযোগিতার অংশ হতে পারা এবং দলকে নেতৃত্ব দিতে পারাটা অসাধারণ। আমরা খেলতে প্রস্তুত। এই বিশ্বকাপে দল হিসেবে ভালো করতে চাই, ইনশাল্লাহ।”

শেষ মুহূর্তে বিশ্বকাপ দলে ফাহিম আশরাফ ও জুনায়েদ খানের জায়গায় ওয়াহাব রিয়াজ ও মোহাম্মদ আমিরকে নেওয়া প্রসঙ্গে পাকিস্তান অধিনায়ক বলেন, “তারা উভয়ই আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়। এই জন্যই তাদের নেওয়া হয়েছে।”

দিমুথ করুণারত্নে: এই মুহূর্তে ফর্মের বিচারে অনেক পিছিয়ে রয়েছে শ্রীলঙ্কা। কিন্তু তাদের নতুন অধিনায়ক মনে করিয়ে দিলেন- “ইংল্যান্ডে খেলার প্রচুর অভিজ্ঞতা রয়েছে আমাদের। অনেক আগে এখানে এসে গিয়েছি আমরা, যাতে পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নিতে পারি। ভাল ছন্দ তৈরি করে নিতে পেরেছি আমি। আশা করছি, সেরাটা দিতে পারব।”

গুলবাদিন নায়েব: আফগানিস্তানের অধিনায়ক বলছেন- “বিশ্বকাপে আসতে পেরে আমরা উত্তেজিত। ক্রিকেট বিশ্বের সামনে নিজেদের মেলে ধরতে চাই। সেরা দলগুলোর সঙ্গে সেরাটা দিতে চাই। বিশ্বের সামনে আফগানিস্তানকে মেলে ধরার সুযোগ রয়েছে সকলের সামনে। আমরা প্রত্যেকে উন্মুখ হয়ে রয়েছি।’’


সর্বশেষ সংবাদ