আলোচনায় জাপানি-বাংলাদেশি সুমাইয়া, কে এই ফুটবলার?

মাতসুশিমা সুমাইয়া
মাতসুশিমা সুমাইয়া  © সংগৃহীত

পিটার বাটলারকে আবারও বাংলাদেশ জাতীয় নারী ফুটবল দলের কোচ করে আনায় বিদ্রোহের ডাক দিয়েছেন ফুটবলাররা। ১৮ জন বিদ্রোহী ফুটবলার সম্প্রতি এক চিঠিতে বাফুফেকে জানিয়ে দিয়েছেন, বাটলার কোচ থাকলে বাংলাদেশের হয়ে খেলা দূরে থাক, অনুশীলন ক্যাম্পেও অংশ নেবেন না এবং প্রয়োজনে গণ–অবসরে যাবেন।

চিঠিতে বাটলারের বিরুদ্ধে নিজেদের অভিযোগগুলোও তুলে ধরেছেন সাবিনা-মাসুরা-সানজিদারা। সেই চিঠি ইংরেজিতে লেখা ছিল। বাফুফের বিশেষ কমিটি বিদ্রোহী ফুটবলারদের ডেকে জিজ্ঞাসা করেছিল, চিঠিটি কে লিখেছে? সবাই জাপানে জন্ম নেওয়া ও বেড়ে ওঠা মাতসুশিমা সুমাইয়ার নাম বলেন। সুমাইয়াও কমিটির সামনে স্বীকার করেছেন, ওই চিঠি তিনিই লিখেছেন। এর পর থেকেই তাকে নিয়ে ফুটবল অঙ্গণে শুরু হয়েছে আলোচনা-সমালোচনা। কে এই ফুটবলার সুমাইয়া।

জানা গেছে, তার পুরো নাম মাতসুশিমা সুমাইয়া। বাংলা ভালো বলতে পারলেও লিখতে পারেন না। তবে বাংলা ভাষা বা বাংলাদেশের সঙ্গে তার সম্পর্কটা এখন বেশ নিবিড়। জন্ম ও বেড়ে ওঠা জাপানের নাগোয়া শহরে হলেও মাতসুশিমা সুমাইয়া এখন পুরোদস্তুর বাংলাদেশি।

সুমাইয়া একজন জাপানি-বাংলাদেশি ফুটবলার। সুমাইয়া বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বৈত পাসপোর্টধারী। বাংলাদেশের নারী ফুটবলে সুমাইয়াই প্রথম প্রবাসী ফুটবলার, যিনি জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশ মহিলা ফুটবল দলের নিয়মিত সদস্য।

তিনি জাপানে জন্মগ্রহণ করেছেন। তার মা মাতসুশিমা তমোবি জাপানের নাগরিক। আর তার বাবা মাসুদুর রহমানের বাড়ি ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার চুড়াইন গ্রামে।

মাতসুশিমা সুমাইয়ার বাবা মাসুদুর রহমান সাংবাদিকদের জানান, দুই বছর বয়সে বাংলাদেশে আসেন সুমাইয়া। পরে ২০০৮ সাল থেকে বাবার দেশ বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন।

সুমাইয়ার জাপানি মা মাতসুশিমা তমোবি বাংলা ভাষায় জানান, তাদের মেয়ে সুমাইয়া রাজধানীর নর্থসাউথ ইউনিভার্সিটিতে পড়ছেন। পাশাপাশি জাতীয় ফুটবলে খেলছেন। এদেশের মানুষ তার খুব ভালো লাগে। তিনি এদেশকে ভালোবেসে ফেলেছেন। 

বাংলাদেশ দলের অন্যান্য খেলোয়াড়ের মতো পথচলা নয় সুমাইয়ার। ২০২০ সালে বাফুফের কোচদের নজরে এসেছিলেন সুমাইয়া। কিন্তু তখন দলে ডাক পাননি। সুমাইয়া বাংলাদেশ ও জাপানের দ্বৈত পাসপোর্টধারী হওয়ায় তার জন্য জাপান ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের অনাপত্তিপত্র নিতে হয়েছে বাফুফেকে। ফলে বাংলাদেশের হয়ে খেলতে আর কোনো সমস্যা সৃষ্টি হয়নি। ২০২৩ সালে তাকে প্রথম অনুশীলন ক্যাম্পে ডেকেছিল বাফুফে। অন্যরা বয়সভিত্তিক দলগুলো পার করে এলেও, সুমাইয়া সরাসরি সুযোগ পেয়েছেন জাতীয় দলে। ইতোমধ্যে জাতীয় ফুটবলের হয়ে খেলেছেন গুরুত্বপূর্ণ অনেক ম্যাচ, পেয়েছেন সাফজয়ী ফুটবলারের স্বীকৃতি।


সর্বশেষ সংবাদ