২৫ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:৩৪

বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ তারকা জিসান আলাম, কে এই ক্রিকেটার?

জিসান আলম  © সংগৃহীত

সদ্য সমাপ্ত এনসিএল টি-টোয়েন্টির ক্রিকেটে অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছেন ‘পাওয়ার হিটার’ জিসান আলাম। ইতোমধ্যে তাকে নিয়ে শুরু হয়েছে আলোচনার ঝড়। ২০২৩ যুব এশিয়া কাপজয়ী দলের এই ওপেনার এনসিএল টি-টোয়েন্টির প্রথম ম্যাচেই ঝোড়ো সেঞ্চুরি করে আলোচনায় আসেন। ৭ ইনিংসে ৪০.১৪ গড়ে ১৫৮.৭৬ গড়ে ২৮১ রান করে হয়েছেন টুর্নামেন্টের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রানসংগ্রাহক। ১৯ বছর বয়সী ওপেনার রাঙাতে চান আসন্ন বিপিএলেও। ক্রিকেটের খোঁজখবর যারা রাখেন, তারা জানেন যে জিসানকে অনেকেই বলেন ‘বাংলাদেশের রোহিত শর্মা’। রোহিতের মতোই প্রায় অবিকল জোরে ব্যাট চালাতে পারেন, দ্রুত রান তুলতে পারেন। আকার-গড়ন ও ব্যাটিং স্টাইলেও তিনি যেন অন্য এক রোহিত শর্মা। আগামীর তারকা ক্রিকেটার কে এই জিসান আলম?

কে এই জিসান আলম
জিসান আলমের রক্তেই ক্রিকেট। বাবা-চাচাদের ক্রিকেট খেলা দেখে বড় হয়েছেন। ক্রিকেটার হয়েছেন। বাবা জাহাঙ্গীর আলম ও চাচা জুয়েল হোসেন মনা দুজনই বাংলাদেশের জার্সিতে মাঠ মাতিয়েছিলেন। আরেক চাচা সোহেল হোসেন পাপ্পু জাতীয় দলে সুযোগ না পেলেও প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট খেলেছেন। এমন পরিবারের সন্তানের ক্রিকেটার না হয়ে উপায় আছে! বাবা-চাচাদের দেখেই ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্ন বুনে নেন হৃদয়ে। তাই তো একদম ছোট্টবেলায় নারায়ণগঞ্জ ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে ক্রিকেটে হাতেখড়ি হয়ে যায় এই ওপেনারের। স্বপ্ন দেখেন, একদিন বাবার মতো জাতীয় দলে খেলবেন। বাবার মতো ওপেনিংয়ে নেমে প্রতিপক্ষ বোলারদের শাসন করবেন।

অনেকেই বলেন, ভুল সময়ে জন্মেছিলেন জাহাঙ্গীর আলম। বলার কারণও আছে। বয়সভিত্তিক ক্রিকেট থেকে শুরু করে আন্তর্জাতিক ও ঘরোয়া ক্রিকেটে তার যা কীর্তি সেইসব যে রেকর্ডে নেই। ১৯৮৯ সালে অনূর্ধ্ব ১৯ দলের ইংল্যান্ড সফরের এক ম্যাচে ১৩২ রান করে নজরে আসেন তিনি। জাভেদ ওমরের সঙ্গে এক ম্যাচে ২১৯ রানের ওপেনিং জুটিও আছে। ১৯৯৪ সালের আইসিসি ট্রফিতে দলের সেরা পারফর্মার। চ্যাম্পিয়ন সংযুক্ত আরব আমিরাতের বিপক্ষে খেলেন অপরাজিত ১১৭ রানের ইনিংস। পরবর্তীতে খালেদ মাসুদ পাইলটের কাছে জাতীয় দলের জায়গা হারিয়েছিলেন। ঢাকা লিগে তিনবারের সর্বোচ্চ স্কোরার জাহাঙ্গীর। মোহামেডান, বিমানে, আবাহনীর মতো দলে খেলেছেন। সেই তারই সন্তান জিসান আলম।

ভবিষ্যতে জাতীয় দলে প্রতিষ্ঠিত হয়ে পূরণ করতে চান বাবার থমকে যাওয়া ক্রিকেট ক্যারিয়ারের আক্ষেপ। জিসান বলেন, ‘বাবার যে আক্ষেপ, সেটা আমি ঘোচানোর চেষ্টা করব। সর্বাত্মক চেষ্টা করব, বাবার যেটা হয়নি, সেটা পূরণ করতে পারি।’ সে পথ মাড়ানো যে সহজ নয় সেটি জানা জিসানের, ‘জাতীয় দলে খেলা অনেকটা ভাগ্যেরও ব্যাপার। তবে এখন ওসব নিয়ে ভাবছি না। সেরা খেলাটা খেলতে পারলে নিশ্চয় সুযোগ আসবে।’

সেরা ‘পাওয়ার হিটার’ হতে চান জিসান
ছোটবেলা থেকেই আক্রমণাত্মক ব্যাটিং পছন্দ জিসানের। তিনি বলেন, ‘স্ট্রোক খেলতে বরাবরই পছন্দ করি। আর মেরে খেলাটা আমাকে অন্য রকম আনন্দ দেয়। ভবিষ্যৎতে সেরা পাওয়ার হিটার হওয়ার চেষ্টা করব।’

অনেকে বলেন জিসান আলমের আইডল রোহিত শর্মা। ব্যাটিংয়ে কি তাকে অনুসরণ করেই পাওয়ার হিটিং বা বেশি বেশি ছক্কা মারার চেষ্টা করেন, প্রশ্নে জবাবে তিনি বলেন, ‘আসলে পাওয়ার হিটিং নিয়ে নিয়মিত কাজ করি। প্রস্তুতির সময় যেভাবে ব্যাটিং করি, ম্যাচেও ঠিক একইভাবে ব্যাটিং করার চেষ্টা করি। আমার প্রিয় শট পুল। পুল শটে ছক্কা মারতে সবচেয়ে বেশি ভালো লাগে। সব সময় বোলারের ওপর চড়াও হতে চাই, বোলারকে জায়গা (রুম) দিই না। যখন বোলারকে আক্রমণ করি, দেখি বোলাররা আমার মার খেয়ে ঘাবড়ে যায়, তখন মনে হয় এটাই আমার শক্তির জায়গা। এ কারণে মেরে খেলতে পছন্দ করি। যদি এই খেলা ধরে রাখতে পারি, তাহলে যেকোনো বোলারের বল খেলতে পারব স্বাচ্ছন্দ্যে।’