বাংলাদেশ কি কিংস্টনে ইতিহাস গড়তে পারবে?
কিংস্টন টেস্টে ইতিহাস গড়ার পথে এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ। প্রথম দুই দিন ব্যাকফুটে থাকলেও তৃতীয় দিন শেষে চালকের আসনে আছেন টাইগাররা। শেষ পর্যন্ত তৃতীয় দিন শেষে ৫ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ১৯৩ রান। তাতে দিন শেষে ২১১ রানের লিড পেয়েছে সফরকারীরা। লিড আরও কিছুটা হলেও বাড়বে তা বলাই যায়। ২৩০ থেকে ২৫০ রান লিড হলে জয়ের সম্ভাবনা বাড়বে, ইতিহাস পড়তে পারবে বাংলাদেশ।
এর আগে নাহিদ রানা-তাসকিন আহমেদ-হাসান মাহমুদদের দুর্দান্ত বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে উইন্ডিজ ১৪৬ রানে গুটিয়ে যায়। স্বল্প রানের পুঁজি হলেও বাংলাদেশ ১৮ রানের লিড পায়। তারপর দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকে বাংলাদেশি ব্যাটসম্যানরা। যার ফলে লিড বৃদ্ধি পায় বাংলাদেশের।
রেকর্ড থেকে জানা গেছে, কিংস্টনে এর আগে টেস্টের চতুর্থ ইনিংসে সর্বোচ্চ ২১১ রান তাড়া করে জয়ের রেকর্ড আছে। ২১ বছর আগে লঙ্কার বিপক্ষে এ রান টপকে জিতেছিল স্বাগতিক উইন্ডিজ। বাংলাদেশ যে এর চাইতে আজ বড় লক্ষ্য দেবে স্বাগতিকদের, সেটা না বললেও চলে। তাতেই রচিত হতে পারে ইতিহাস।
তৃতীয় দিনে বল হাতে উইন্ডিজকে ধসিয়ে দিতে নেতৃত্ব দিয়েছেন নাহিদ রানা। ডান হাতি এ পেসারের গতির সঙ্গে দারুণ লাইন-লেংথে দিশেহারা হয়ে পড়েন স্বাগতিক ব্যাটসম্যানরা। টপাটপ উইকেট বিলিয়ে অলআউট হওয়ার আগে গতকাল স্কোরবোর্ডে যোগ করতে পেরেছে ৭৬ রান। নাহিদ রানা একাই নিয়েছেন ৫ উইকেট। টেস্ট ক্যারিয়ারে এবারই প্রথম এ কীর্তির দেখা পেলেন ২২ বছর বয়সী পেসার। এছাড়া হাসান মাহমুদ ২টি ও তাসকিন, তাইজুল, মিরাজ ১টি করে উইকেট পেয়েছেন।
দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে শুরুতে ধাক্কা খেয়েছিল বাংলাদেশ। স্কোরবোর্ডে কোনো রান যোগ হওয়ার আগে ওপেনার মাহমুদুল হাসান জয়কে (০) হারায় সফরকারীরা। শুরুতে উইকেট হারালেও দমে যায়নি বাংলাদেশ। উল্টো আক্রমণাত্মক ব্যাটিং করতে থাকে। যদিও আরেক ওপেনার সাদমান কিছুটা দেখেশুনে খেলেছেন, কিন্তু প্রান্তে শাহাদাত হোসেন দীপু ছিলেন আগ্রাসী।
সাদমান-দীপুর দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে ৪৭ রান পায় বাংলাদেশ। ইনিংসের ১১তম ওভারের প্রথম বলে দীপুকে (২৬ বলে ২৮ রান) ফিরিয়ে জুটি ভাঙেন আলজারি জোসেফ। চারে নেমে অধিনায়ক মিরাজ আরও বেশি মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন। সাদমান-মিরাজের তৃতীয় উইকেট জুটিতে আসে ৭৪ বলে ৭০ রান।
দলকে ১১৭ রানে রেখে বিদায় নেন ৮২ বলে ৪৬ রান করা সাদমান। সঙ্গী হারিয়ে বেশিক্ষণ টিকতে পারেননি মিরাজও। স্কোরবোর্ডে আর ১৫ রান যোগ হতেই শামার জোসেফের বলে উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন তিনি। মিরাজ যখন ফিরলেন, তখন তাঁর নামের পাশে ৩৯ বলে ৭ চারে ৪২ রান। পাঁচে নামা লিটন ৩৪ বলে ২৫ রান করে ড্রেসিংরুমের পথ ধরেছেন।
দিনের শেষ ভাগে আর কোনো বিপদ হতে দেননি জাকের আলী ও তাইজুল ইসলাম। তাতে ৪১.৪ ওভার ব্যাটিং করে ১৯৩ রানে তৃতীয় দিন শেষ করে বাংলাদেশ। ২১১ রানে এগিয়ে চতুর্থ দিনে ব্যাটিংয়ে নামবে সফরকারীরা। অসুস্থতার জন্য মুমিনুল হক গতকাল ব্যাটিংয়ে নামেননি। আশা করা যায়, আজ ব্যাটিংয়ে নামবেন মুমিনুল হক। তাতে বাড়বে বাংলাদেশর ব্যাটিং জোর, বাড়বে লিড, বাড়বে জয়ের সম্ভবনা।