৩১ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:৫৫

ইনিংস পরাজয়ের ‘লজ্জা’ এড়াতে পারবে কী বাংলাদেশ?

দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম টেস্টে লজ্জাজনক পরাজয়ের ‍মুখোমুখি বাংলাদেশ  © সংগৃহীত

টেস্ট ক্রিকেটে বাংলাদেশ ইনিংস পরাজয়ের স্বাক্ষী হয়েছে অনেকবারই। তবে তা বেশি ছিল শুরুর দিকে। টানা দুই যুগ টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা থাকার পরও দেশের মাটিতে ইনিংস পরাজয় লজ্জার বটে। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম টেস্টে লজ্জাজনক পরাজয়ের ‍মুখোমুখি বাংলাদেশ। টাইগার বাহিনী কি পারবে ইনিংস পরাজয়ের ‘লজ্জা’ এড়াতে?

বাংলাদেশের ব্যাটিং লাইনআপ হুড়মুড়িয়ে ধসে পড়ে নিয়মিতই। মাঝে মধ্যে দুই একটা জুটিতে যা রান হয়, সেটা পরাজয়ের ব্যবধান কমানো ছাড়া আর কিছুই করতে পারে না। হতশ্রী ব্যাটিংয়ের বৃত্তে ঘুরপাক খেতে থাকা বাংলাদেশকে এখন চোখ রাঙাচ্ছে ইনিংস পরাজয়ের ‘লজ্জা।’

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে ব্যাটিংবান্ধব উইকেটের সুবিধা কাজে লাগিয়ে ৫৭৫ রানের পাহাড় গড়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। টেস্ট সিরিজ ড্র করতে বাংলাদেশের যেখানে সিরিজের দ্বিতীয় টেস্ট জয়ের কোনো বিকল্প নেই, তারা এখন চোখে সর্ষেফুল দেখছেন। তিন দিনেই পরাজয়ের শঙ্কা এখন কাজ করছে স্বাগতিকদের। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাটিংয়ে নেমে ৬ উইকেটে ৭০ রান করে ব্যাটিং করছেন টাইগাররা। 

প্রথম ইনিংসে বাংলাদেশ অলআউট হয়েছে ১৫৯ রানে। সেই রানটুকু হয়েছে মুমিনুল হকের ৮২ রানের কল্যাণে। ১১২ বলে ৮ চার ও ২ ছক্কা মারেন তিনি। ৪১৬ রানে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করতে নামা বাংলাদেশের উদ্বোধনী জুটি ভেঙে গেছে ১৫ রানে। ষষ্ঠ ওভারের প্রথম বলে সাদমান ইসলামকে ফেরান ড্যান প্যাটারসন। সাদমান এবার ৬ রান করে উইকেটরক্ষক ভেরেইনের হাতে ক্যাচ দিয়েছেন। চট্টগ্রামে কোনো ইনিংসেই দুই অঙ্ক স্পর্শ করতে পারেননি এই বাঁহাতি ব্যাটার।

মাহমুদুল হাসান জয়ও ইনিংস বড় করতে পারেননি। ৩১ বলে করেন ১১ রান। ১১তম ওভারের পঞ্চম বলে বাংলাদেশের এই ওপেনারকে ফেরান সেনুরান মুথুসামি। দ্বিতীয় স্লিপে ডাইভ দিয়ে দুর্দান্ত ক্যাচ ধরেন দক্ষিণ আফ্রিকার অধিনায়ক এইডেন মার্করাম। এরপরই মুমিনুল এক রকম আত্মহত্যা করলেন তাঁর ‘হোম ভেন্যু’ চট্টগ্রামে। ১২তম ওভারের দ্বিতীয় বলে কেশব মহারাজকে স্লগ সুইপ করতে যান মুমিনুল। ডিপ মিড উইকেটে ক্যাচ ধরেন মুথুসামি। প্রোটিয়াদের পাতা ফাঁদে পা দিয়ে রানের খাতা খোলার আগেই বিদায় নেন মুমিনুল। বাংলাদেশের এই ব্যাটার এবার খেলেছেন মাত্র ২ বল।

জয়, মুমিনুলের বিদায়ে বাংলাদেশের স্কোর পরিণত হয় ১১.২ ওভারে ৩ উইকেটে ২৯ রান। খুব দ্রুত দেখা গেল জাকির হাসানের উইকেট বিলানোর ঘটনাও। ১৫তম ওভারের শেষ বলে মুথুসামিকে কী বুঝে উইকেট ছেড়ে বেড়িয়ে এসেছেন, সেটা জাকিরই ভালো বলতে পারবেন। এই সুযোগ কাজে লাগিয়ে ভেরেইনে স্টাম্পিং করে ফেলেন। ১৫ ওভারে ৪ উইকেটে ৪৩ রানে পরিণত হতেই দ্বিতীয় সেশনের খেলা শেষ ঘোষণা করে।

প্রথম ইনিংসে নবম উইকেটে মুমিনুল ও তাইজুল ইসলামের ১৭২ বলে ১০৩ রানের জুটি বাংলাদেশকে একটি বিব্রতকর পরিস্থিতি থেকেই রক্ষা করেছে। কারণ আজ তৃতীয় দিনে প্রথম ইনিংসে ৪৮ রান তুলতেই ৮ উইকেট হারিয়ে ফেলে বাংলাদেশ। আজই কি ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সর্বনিম্ন টেস্ট ইনিংসের ঘটনা ঘটায় কি না, সেই আশঙ্কা তৈরি হয়েছিল প্রবলভাবে। কারণ ঘরের মাঠে বাংলাদেশ সর্বনিম্ন ৮৭ রানে অলআউট হয়েছিল। এই ঘটনা ঘটেছিল দুই বার। প্রথমবার ২০০২ সালে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে। দ্বিতীয়টি ১৯ বছর মিরপুর শেরেবাংলায় পাকিস্তানের বিপক্ষে।