২৭ অক্টোবর ২০২৪, ১১:১০

শান্তকেই অধিনায়ক রাখতে চায় বিসিবি

নাজমুল হোসেন শান্ত  © সংগৃহীত

ব্যাট হাতে ধারাবাহিক হয়ে ওঠায় গত বছরের নভেম্বরে নাজমুল হোসেনকে শান্তকে তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশ জাতীয় দলের অধিনায়ক করা হয়। তবে দায়িত্ব নেয়ার ৮ মাসের মধ্যেই হুট করে টাইগারদের অধিনায়কত্ব ছেড়ে দেয়ার ইচ্ছা পোষণ করেছেন তিনি। যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডে (বিসিবি) চিঠি দেননি তিনি, মৌখিকভাবে টিম ম্যানেজমেন্ট ও বোর্ড পরিচালকদের এ কথা জানিয়েছেন। কিন্তু শান্তকেই অধিনায়ক হিসেবে রেখে দিতে চায় বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। 

বিসিবি পরিচালক নাজমুল আবেদিন ফাহিম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, শান্ত এখনও বিসিবিকে লিখিত কিছু দেননি। ‘অফিসিয়াল কোনো ডকুমেন্ট আমার কাছে এখনও আসেনি। অফিসিয়ালি জানতে পারিনি এটার সত্যতা কতটুকু। যদি হয়ে থাকে এটা আমাদের জন্য একটা বড় খবর। নতুন ক্যাপ্টেন যদি তৈরি করতে হয় ক্রিকেট বোর্ডকে বড় স্টেপ নিতে হবে। কিংবা তাকেই আবার অনুরোধ করে রাখা হয় কি না, বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।

তিনি আরও বলেন, আমাদের বিচার-বিবেচনা করতে হবে কী অবস্থা, কী সিদ্ধান্ত নেব। একটু অপেক্ষা করতে হবে আমরা আসলে কী সিদ্ধান্ত নিই।’ ব্যক্তিগত ফর্মের কারণে শান্তকে নিয়ে সমালোচনা হলেও, বোর্ডে তার নেতৃত্ব নিয়ে কোনো আলোচনা হয়নি জানিয়ে ফাহিম বলেন, ‘আলোচনা বলতে যেটা বোঝায় তেমন কিছু না। অনেক সময় আন-অফিসিয়ালি অনেক ধরনের কথাবার্তা হয়। যেহেতু ব্যক্তিগতভাবে আমি একজন কোচ, ওদের সঙ্গে কথাবার্তা হয়, মেন্টরিং করি, বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয়।

তিনি বলেন, যে এখন ক্যাপ্টেন নেই সে-ও ক্যাপ্টেন হলে কেমন করবে সেসবও আমরা আলাপ করি। কোচ হিসেবে এটা এখানে নিয়ে আসতে চাই না। এ ধরনের কথাবার্তা অনেক সময় হয়। অফিসিয়ালি ধরে নেওয়ার সুযোগ নেই।’ যেকোনো ক্রিকেটারকেই নেতৃত্বে আনা হলে তাকে যথেষ্ট সময় ও সুযোগ দেওয়ার পক্ষে বিসিবির এই পরিচালক।

এই দায়িত্বে নতুন কাউকে আনার ক্ষেত্রে আলোচনার কথা বললেন ফাহিম, ‘অবশ্যই বিসিবি আলোচনা করতে চাইবে। শান্ত এতদিন ধরে ক্যাপ্টেন্সি করছে। এটা তো সময়ের ইনভেস্টমেন্ট। আমরা একজনকে তৈরি করার চেষ্টা করছি। আগামী মাসে আফগানিস্তানের বিপক্ষে অনুষ্ঠেয় সিরিজে সম্ভাব্য নতুন অধিনায়কসংক্রান্ত আলোচনা বাড়তে দিলেন না নাজমুল আবেদীন, ‘ওকেই (নাজমুল) আবার অনুরোধ করে রাখা হয় কি না, বসে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সে এত দিন ধরে অধিনায়কত্ব করছে। এটা তো সময়ের বিনিয়োগ।’

নাজমুলের নেতৃত্বে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তানে ঐতিহাসিক টেস্ট জিতেছে বাংলাদেশ। তবু তাঁর দল পরিচালনার কৌশল নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সে জন্যই কি আট মাসের মাথায় সরে দাঁড়াতে চাচ্ছেন তিনি? গতকাল তেমনই ইঙ্গিত দিলেন বিসিবির পরিচালক নাজমুল আবেদীন, ‘এত প্রতিভাবান একজন খেলোয়াড়। আমাদের কারণেই অধিনায়কত্ব করতে পারছে না। আমাদের মতো একটা দেশের অধিনায়ক হওয়া মানে সব সময় চাপে থাকতে হয়। আমরা যে পরিমাণ সমালোচনা করি, তাঁর জন্য কঠিন হয়ে যাচ্ছে।’

এদিকে, গত রাতে সভাপতি ফারুক আহমেদ দেশে ফিরেছেন। তিনি নাজমুলের সঙ্গে কথা বলে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ করবেন বলে জানিয়েছে বোর্ডের একটি সূত্র। 

প্রসঙ্গত, চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে অধিনায়ক হওয়ার পর থেকে এখন পর্যন্ত তিন ফরম্যাটে বাংলাদেশকে ৪২ ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছেন শান্ত। এর মধ্যে ৯ টেস্টে এসেছে স্মরণীয় তিনটি জয় (নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দেশে প্রথম এবং পাকিস্তানের মাটিতে প্রথমবার দুই ম্যাচের সিরিজ)। শান্ত’র অধীনে বাংলাদেশ ৯টি ওয়ানডেতে ৩টি জয় ও ৬টিতে হেরেছে। একই সময়ে ২৪টি টি–টোয়েন্টি খেলে ১০টিতে জিতেছে বাংলাদেশ।