২৫ অক্টোবর ২০২৪, ১৫:৪৩

১ রান নিতেই ৮ উইকেটের পতন!

ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ১ রান নিতেই হারিয়েছে ৮ উইকেট  © সংগৃহীত

ক্রিকেটে কত রকম হিসেব-নিকেশ হয়, তার ইয়ত্তা নেই। শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) অন্যরকম রেকর্ড দেখল ক্রিকেট বিশ্ব। ১ রান নিতেই ৮ উইকেট ‘নাই’ হয়ে গেল। আশ্চর্যজনক মনে হলেও সেটাই হয়েছে অস্ট্রেলিয়া ঘরোয়া ওয়ানডে কাপে। টুর্নামেন্টের ডিফেন্ডিং চ্যাম্পিয়ন দল ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া ১ রান নিতেই হারিয়েছে ৮ উইকেট।

তাসমানিয়ার বিপক্ষে ২ উইকেটে ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ার ছিল ৫২ রান। এরপর ৫৩ রানে অলআউট হয়ে গেছে তারা। এতে ওয়ানডে কাপের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন রানে গুটিয়ে যাওয়ার রেকর্ডও করেছে দলটি। এর আগে ২০০৩ সালে এই তাসমানিয়ার বিপক্ষেই ৫১ রানে অলআউট হয়েছিল সাউথ অস্ট্রেলিয়া।

আজ পার্থের ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়ান ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন গ্রাউন্ডে তাসমানিয়ার মুখোমুখি হয় ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া। বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির পিচ হিসেবে পরিচিত পার্থের ওয়াকা গ্রাউন্ডে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নামা স্বাগতিক পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার শুরুটা খুব ভালো না হলেও একেবারে মন্দও ছিল না। তাসমানিয়ার বিপক্ষে তারা প্রথম উইকেট হারায় ১০ রানে, দ্বিতীয় উইকেটের পতন ৪৫ রানে। দুই ওপেনার অ্যারন হার্ডি ও ডার্চি শর্ট আউট পরপরই দলীয় স্কোর ৫০ পেরিয়ে যায়।

দুই পেসার বিউ ওয়েবস্টার ও বিলি স্ট্যানলেকের তোপে এরপরই পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের আসা–যাওয়ার মিছিল শুরু হয়। এই মিছিল যেন শেষও হয় চোখের পলকে। ওয়ানডে কাপের সফলতম দল ও বর্তমান চ্যাম্পিয়ন পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া যে শেষ ৮ উইকেট হারায় মাত্র ২৭ বলে। তাসের ঘরের মতো ব্যাটিং লাইনআপ ভেঙে পড়া দলটি অলআউট হয় মাত্র ৫৩ রানে, যা ঘরোয়া লিস্ট ‘এ’ ইতিহাসের দ্বিতীয় সর্বনিম্ন দলীয় স্কোর এবং পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার সর্বনিম্ন।

২০০৩ সালে হোবার্টে তাসমানিয়ার বিপক্ষেই ৫১ রানে গুটিয়ে গিয়েছিল দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়া। আর পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া এর আগে ৫৯ রানে অলআউট হয়েছিল ১৯৬৯ সালে মেলবোর্নে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে।

অবিশ্বাস্য ব্যাটিং ধসের দিনে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার ওপেনার শর্ট (২২) ও তিনে নামা ক্যামেরন ব্যানক্রফট (১৪) ছাড়া আর কেউ দুই অঙ্ক ছুঁতে পারেননি। ব্যাট হাতে বাকিদের অবদান মুঠোফোন ডিজিটের মতো—৭, ১, ০, ০, ০, ০, ০, ০, ০*! অর্থাৎ শেষ সাত ব্যাটসম্যানের কেউ রান করতে পারেননি, ছয়জন মেরেছেন ডাক।

অস্ট্রেলিয়ার লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে শেষ সাত ব্যাটসম্যানের কোনো অবদান রাখতে না পারার নজির এটাই প্রথম। ২০০২–০৩ মৌসুমে ভিক্টোরিয়ার বিপক্ষে দক্ষিণ অস্ট্রেলিয়ার শেষ সাত ব্যাটসম্যানের অবদান ছিল ১৪ রান (১, ৫, ০, ০, ০, ৮, ০)। আজকের আগেই সেটিই ছিল সর্বনিম্ন।

ভাগ্যিস আজকের ম্যাচে ‘অতিরিক্ত খাত’ থেকে ৯ রান (লেগ বাই ৩, ওয়াইড ৬) এসেছে, নয়তো পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া ৫০ রানের গণ্ডিও ছুঁতে পারত না। সেটা হলে তাদের রানই হতো অস্ট্রেলিয়ার লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে দলীয় সর্বনিম্ন।

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া ৫২/২ থেকে ৫২/৭–এর দলে পরিণত হয় ১৪ বলের মধ্যে। তখন ইনিংসের সবে ১৮ ওভার শেষ হয়েছে। ১৯তম ওভার করতে এসে প্রথম বলটাই ওয়াইড করেন স্ট্যানলেক। তাসমানিয়া এরপর আর কোনো রান দেয়নি। স্ট্যানলেক ও ওয়েবস্টার মিলে পরের ১৩ বলে পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার শেষ ৩টি উইকেটও নিয়ে ফেলেন। শেষ পর্যন্ত ওয়েবস্টার ৬টি ও স্ট্যানলেক ৩টি উইকেট নেন। আর প্রথম শিকার ছিল টম রজার্সের।

পশ্চিম অস্ট্রেলিয়া ৫৩ রানে অলআউট হওয়ার পর ম্যাচের ফল কী হতে পারে, তা সহজেই অনুমেয়। মামুলি লক্ষ্যটা ৭ উইকেট আর ২৪৯ বল বাকি রেখে টপকে গেছে তাসমানিয়া। এ হারে টানা চতুর্থবারের মতো পশ্চিম অস্ট্রেলিয়ার শিরোপা জয়ের স্বপ্ন হুমকির মুখে পড়েছে। এখন পর্যন্ত ৪ ম্যাচের ৩টিতেই হেরে পয়েন্ট তালিকার তলানিতে আছে তারা।