আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন সুয়ারেজ
উরুগুয়ে ফুটবলের কিংবদন্তি লুইস সুয়ারেজ। দুবার বিশ্বকাপ জেতা লাতিন দলটির হয়ে করেছেন সবচেয়ে বেশি ৬৯ গোল। তাকে ঘিরে ২০২৬ বিশ্বকাপের পরিকল্পনাও আঁটছিলেন দলটির কোচ। কিন্তু সোমবার সংবাদ সম্মেলনে আন্তর্জাতিক ফুটবলকে বিদায় বলে দিলেন ৩৭ বছর বয়সী সুয়ারেজ।
আগামী শুক্রবার উরুগুয়ের জার্সিতে শেষবার দেখা যাবে সুয়ারেজকে। এদিন প্যারাগুয়ের বিপক্ষে ঘরের মাঠে ২০২৬ বিশ্বকাপের বাছাইপর্ব খেলবে উরুগুয়ে। বাংলাদেশ সময় ভোর সাড়ে ৫টায় প্যারাগুয়ের বিপক্ষে মাঠে নামবে সুয়ারেজের দল। জাতীয় দল থেকে অবসর নিলেও ইন্টার মায়ামির হয়ে খেলা চালিয়ে যাবেন এই স্ট্রাইকার।
সংবাদ সম্মেলনে আবেগজড়িত কণ্ঠে জানালেন, এরপরই পরই তুলে রাখবেন বুট-জোড়া, ‘আমি অবসর নিয়ে অনেক ভেবেছি। এরপর মনে হয়েছে এটাই সঠিক সময়। শুক্রবার প্যারাগুয়ের বিপক্ষে খেলেই অবসর নেব জাতীয় দল থেকে।’
সুয়ারেজ বলেন, ‘কখন অবসর নেওয়ার সঠিক মুহূর্ত, তা জানার চেয়ে গর্ব করার মতো ভালো আর কিছু নেই। আমি আত্মবিশ্বাসী যে জাতীয় দল থেকে অবসর নিচ্ছি। কারণ, আমি নতুন কোনো জায়গায় যেতে চাই। আমার বয়স ৩৭ বছর। আমি জানি যে পরের বিশ্বকাপে খেলা খুব কঠিন। এটা আমাকে অনেক সান্ত্বনা দেয় যে আমি নিজে অবসর নিতে পারছি। ইনজুরির কারণে আমাকে অবসর নিতে হচ্ছে না। অথবা দল থেকে বাদ পড়ার কারণেও অবসর নিতে হচ্ছে না।’
তবে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ ছিল না তার, ‘আমি মনে শান্তি নিয়ে যাচ্ছি যে শেষ খেলা পর্যন্ত আমি আমার সবকিছু দিয়েছি। তবে শিখা ধীরে ধীরে জ্বলে না। সে কারণেই আমি সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে এটি (অবসর) এখনই হওয়া উচিত।’
উরুগুয়ের সর্বকালের সর্বোচ্চ গোলদাতা সুয়ারেজ। ১৭ বছরের আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারে ১৪২ ম্যাচে ৬৯ গোল করেছেন এই তারকা। ক্লাব ফুটবলেও দাপিয়ে বেড়িয়েছেন তিনি। লা লিগার ক্লাব বার্সেলোনায় বন্ধু লিওনেল মেসি ও নেইমার জুনিয়রের সঙ্গে জুটি করে খেলেছেন বহুদিন। তার আগে খেলেছিলেন লিভারপুলে।
২০০৭ সালে ১৯ বছর বয়সে উরুগুয়ের জার্সিতে অভিষেক সুয়ারেজের। তখন ভাবেননি একদিন জাতীয় দলের হয়ে করবেন সর্বোচ্চ গোল। বিদায় বেলায় তাই সন্তুষ্ট ক্যারিয়ার নিয়ে, ‘২০০৭ সালে প্রথম ম্যাচের আগে যেমন রোমাঞ্চিত ছিলাম, শেষ ম্যাচটাও খেলব একইভাবে। জাতীয় দলের হয়ে স্মৃতিগুলো থেকে যাবে আজীবন। একটা সময় তো থামতেই হতো। সত্যিই ভবিনি, অবসর নেব উরুগুয়ের সর্বোচ্চ গোলদাতা হয়ে।’
সবশেষ এ বছরের কোপায় খেলেছেন সুয়ারেজ। তৃতীয় স্থান নির্ধারণী ম্যাচে কানাডার বিপক্ষে লক্ষ্যভেদও করেছিলেন পেনাল্টি থেকে। ক্লাব ফুটবলে ইন্টার মায়ামির হয়ে সবশেষ ম্যাচেও করেছেন জোড়া গোল। শিকাগোর বিপক্ষে তার জোড়া গোলেই ৪-১ ব্যবধানে জিতেছে মেসিহীন মায়ামি। এমন ছন্দে থেকেই ছেড়ে দিচ্ছেন জাতীয় দল। তবে ক্লাব ফুটবলে আরও কিছুদিন দেখা যাবে সেই ছন্দ।