বিসিবি থেকে পাপনের পদত্যাগের গুঞ্জন
গত ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করতে বাধ্য হয়েছেন শেখ হাসিনা। দায়িত্ব ছেড়ে গোপনে দেশ ত্যাগ করেছেন তিনি। ফলে অবসান ঘটেছে টানা ১৫ বছর বাংলাদেশের শাসনক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের। এর পর দলটির বেশির ভাগ শীর্ষ নেতারা দেশ ছেড়ে পালিয়েছেন।
সদ্য সাবেক ক্রীড়ামন্ত্রী ও বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপনের অবস্থান সম্পর্কেও জানা যায়নি। তবে বিসিবির একজন পরিচালক জানিয়েছেন, বিসিবির সভাপতি পদ থেকে অব্যাহতি নিতে রাজি আছেন পাপন। এ প্রসঙ্গে বোর্ডের প্রভাবশালী পরিচালকদের সঙ্গে আলোচনাও করছেন তিনি।
যদিও মৌখিকভাবে বললেই হবে না, দায়িত্ব ছাড়তে চাওয়ার কথা লিখিতভাবে জানাতে হবে পাপনকে। বোর্ডের প্রধান নির্বাহীর মাধ্যমে একটি সভা ডেকে সেটি অনুমোদনও করাতে হবে। এরপর বিসিবির ভবিষ্যৎ কী হবে? এক্ষেত্রে কয়েকটি বিকল্প পথ রয়েছে। বর্তমানে যে পরিচালকরা আছেন, তাদের মধ্যে থেকে একজন সভাপতি বেছে নেওয়া সম্ভব। এ প্রক্রিয়ার জন্য অন্তত ৯ জন পরিচালককে সভায় উপস্থিত থাকতে হবে। সংখ্যায় এতজন পরিচালক এখনো সরব আছেন।
বৃৃহস্পতিবার (১৫ আগস্ট) বিসিবির একজন পরিচাল বলেন, 'পাপন ভাই কো-অপারেট করতে চান। তিনি সরে যেতে চান। এ নিয়ে আমার সঙ্গে সরাসরি কোনো কথা হয়নি। তবে তিনি সরে যেতে চেয়েছেন। কখন কী করবেন তা বলতে পারছি না। বিসিবির সিনিয়র পরিচালকদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।' পাপন পদত্যাগ করলে আবারও নির্বাচনের মাধ্যমে নতুন সভাপতি নির্বাচিত হবে। সেক্ষেত্রে লম্বা সময় পর পরিবর্তন আসবে বিসিবির শীর্ষ নেতৃত্বে।
গত ৫ আগস্টের পর থেকে বিসিবির কোনো কার্যক্রমে অংশ নিচ্ছেন না পাপন। বোর্ডের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী, প্রতি দুই মাসে একটি করে পরিচালক সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে। পরপর তিন সভায় কেউ অনুপস্থিত থাকলে তার পরিচালক পদ বাতিল বলে গণ্য করা হয়। তাই নিজে থেকে পদ ত্যাগ না করে যদি কার্যক্রমে অনুপস্থিত থাকেন পাপন, তাহলে অন্তত ৬ মাসের জন্য বাংলাদেশ ক্রিকেটের পরিচালক ও সভাপতি পদে বহাল থাকবেন পাপন।
যদি পরিচালকদের সরকারের পক্ষ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়, তাহলে আইসিসির নিষেধাজ্ঞা নেমে আসতে পারে। এক্ষেত্রে এক যোগে পদত্যাগ করতে পারেন বিসিবির সব পরিচালক। তখন একটি অন্তর্বর্তী বোর্ড তৈরি করা হবে, যাদের বেধে দেওয়া হতে পারে নির্বাচন আয়োজনের সময়সীমা।
তবে অক্টোবরে বাংলাদেশের মাটিতে নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ হওয়ার কথা রয়েছে। এই টুর্নামেন্ট আয়োজনে যেন কোনো বাধা না আসে, সেদিকেই এখন বোর্ডের সব নজর। বিসিবির সব পরিচালক একসঙ্গে পদত্যাগ করলে ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হতে পারে, বিশ্বকাপও চলে যেতে পারে ভিন্ন দেশে; এটি মাথায় রেখেই কাজ করছেন বিসিবির সংশ্লিষ্টরা।