নিজের গোলেই বল জড়াল বেলজিয়াম, কোয়ার্টার ফাইনালে ফ্রান্স
এবারের ইউরো চ্যাম্পিয়শিপের পর্দা উঠেছে জার্মানিতে। যেখানে ইতোমধ্যে গ্রুপ পর্বের খেলা শেষ হয়েছে। এখন চলছে শেষ ষোলোর লড়াই। লড়াইয়ে আজ মুখোমুখি হয়েছিল ফ্রান্স ও বেলজিয়াম। ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের দুই আর তিনের লড়াই ছিলো। এ যেন ফাইনালের আগে আরেক ফাইনাল। তবে শেষ পর্যন্ত বেলজিয়ামকে ১-০ গোলে হারিয়ে কোয়ার্টার-ফাইনালের টিকিট কাটে ফ্রান্স। খেলার শেষ দিকে র্যান্ডাল কোলো মুয়ানির শট তাদের খেলোয়াড়ের পায়ে লেগে জাল কাঁপায়।
সোমবার (১ জুলাই) রাত ১০টায় ডুসেলডর্ফের মেরকুর স্পিয়েল-অ্যারেনায় মুখোমুখি হয়েছিলো ইউরোপ সেরা দুই দল ফ্রান্স আর বেলজিয়াম। তবে ফ্রান্সকে গোলের জন্য অপেক্ষা করতে হল ৮৫ মিনিট পর্যন্ত। তাও আবার আত্মঘাতী গোল। কলো মুয়ানির শট বেলজিয়ামের ভারতোনঘেনের শরীরে লেগে গোল হয়ে যায়। এমন সময়ে ফ্রান্স এগিয়ে যায় যে বেলজিয়াম আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি।
এদিন ম্যাচের শুরু থেকেই গতিময় ফুটবল খেলতে থাকে ফ্রান্স। দারুণ খেলেও প্রথমার্ধে কোনো গোলের দেখা পায়নি ফ্রান্স। গোল পায়নি বেলজিয়ামও। দ্বিতীয় মিনিটের মাথায় আদ্রিয়ান রাবিওর ভলি শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়ে বাইরে চলে যায়। ১০ মিনিটের মাথায় অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদে খেলা অ্যান্টোনিও গ্রিজম্যান বাইরে থেকে শট নিলে সেটি ভালোভাবেই তালুবন্দি করেন বেলজিয়ামের গোলরক্ষক কোয়েন কাস্টিলস।
১৮ মিনিটে ফ্রান্সের মার্কাস থুরামের হেড চলে যায় গোলবারের বাইরে দিয়ে। ২৭ মিনিটে ডি-বক্সের ভেতর ফ্রান্সের ডিফেন্ডারের হাতে বল লাগলেও পেনাল্টির সিদ্ধান্ত দেননি রেফারি। ৩৪ মিনিটে কুন্ডের ক্রস থেকে থুরামের জোরালো হেড বাম গোলবারের বাইরে দিয়ে চলে যায়। বল দখলে বেশ এগিয়ে থাকে ফ্রান্স। অন্যদিকে মিস পাসের মহড়া দিয়ে বসে বেলজিয়াম। ৪০ মিনিটে সুয়ামেনির দূরপাল্লার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে গোলশূন্যভাবে শেষ হয়েছিলো প্রথমার্ধের ৪৫ মিনিটের খেলা।
হাফটাইমের পর দুই দল মরিয়া হয়ে গোল খুঁজতে থাকে। এমবাপ্পে ও সালিবার শট লক্ষ্যভ্রষ্ট হলে ফ্রান্সকে হতাশ হতে হয়। ওদিকে মাইক মাইগনান গোলপোস্টের নিচে মজবুত হাতে বেলজিয়ামের দারুণ দুটি প্রচেষ্টা নস্যাৎ করে দেন। ৭০ মিনিটে রোমেলু লুকাকু ও ৮২ মিনিটে কেভিন ডি ব্রুইনার শটের সামনে বাধা হয়ে দাঁড়ান ফ্রান্সের গোলকিপার।
তাতে ম্যাচ অতিরিক্ত সময়ের দিকে এগোচ্ছিল। কিন্তু নির্ধারিত সময় শেষ হওয়ার পাঁচ মিনিট আগে আত্মঘাতী গোলে সর্বনাশ হয় বেলজিয়ামের। এন’গোলো কাঁতের বাড়ানো বলে শট নেন মুয়ানি। বেলজিয়ান কিপার কোয়েন ক্যাস্টিলস তার শটের গতি বুঝতে পেরে ডানদিকে ঝাঁপ দেন। কিন্তু জ্যান ভারটনঘেনের পায়ে লেগে দিক পাল্টে জালে জড়ায় বল। শটটা কোনও বাধার মুখে না পড়লে বেলজিয়ান কিপার হয়তো বল থামাতে পারতেন।
এই আসরে দ্বিতীয়বার আত্মঘাতী গোলে জয়ের মুখ দেখলো ফ্রান্স। নিজেদের প্রথম ম্যাচে অস্ট্রিয়ার আত্মঘাতী গোলে শুভ সূচনা হয়েছিল ফ্রান্সের। গ্রুপের পরের দুটি ম্যাচ তারা গোলশূন্য ও ১-১ এ ড্র করে শেষ ষোলোতে উঠেছিল। সোমবার ডুজলডর্ফে তারা গোল করতে না পারলেও উঠে গেলো শেষ আটে। কোনও রকমে জিতে কোয়ার্টার ফাইনালে জায়গা করে নিল ফ্রান্স।
শেষ আটে উঠে গেলেও ‘ওপেন প্লে’ থেকে আসরে এখনও গোল করতে পারেনি ফ্রান্স! চার ম্যাচে ফরাসিরা নিজেরা গোল করতে পেরেছে মাত্র একটি, গ্রুপ পর্বের শেষ রাউন্ডে পোল্যান্ডের বিপক্ষে পেনাল্টি থেকে। প্রতিপক্ষের আত্মঘাতী গোল পেয়েছে তারা দুটি। বড় টুর্নামেন্টে (বিশ্বকাপ, ইউরো) বেলজিয়ামের বিপক্ষে ফ্রান্সের জয়ের ধারা অব্যাহত রইল, পাঁচ ম্যাচের সবগুলোই জিতল তারা।