কোনো রান না করেই টুর্নামেন্টসেরা হওয়া প্রথম খেলোয়াড় বুমরাহ

জসপ্রিত বুমরাহ
জসপ্রিত বুমরাহ  © সংগৃহীত

প্রায় এক যুগ পর বিশ্বকাপের শিরোপার দেখা পেল ভারত। দ্বিতীয়বার ঘরে তুললো টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা। আর দক্ষিণ আফ্রিকা প্রথম শিরোপার খুব কাছে গিয়েও ব্যর্থ হলো। ভারতকে চ্যাম্পিয়ন করতে দারুণ ভূমিকা রাখেন জসপ্রিত বুমরাহ। আসর জুড়ে দুর্দান্ত বোলিং উপহার দেয়া এই পেসার ফাইনালেও রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। এবারের বিশ্বকাপের ‘ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট' হয়েছেন তিনি। তবে কোন রান না করেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে টুর্নামেন্টসেরা হওয়া প্রথম খেলোয়াড় তিনি।

সব মিলিয়ে এবারের বিশ্বকাপে ৮ ম্যাচে ১৫ উইকেট নিয়েছেন বুমরাহ। তাতে আসরের সেরা উইকেট শিকারীর তালিকায় তিনে আছেন তিনি। যেখানে তার গড় মাত্র ১১, ইকোনমিও অবিশ্বাস্য; ৪.১৭। দুর্দান্ত এমন পারফরম্যান্সের পুরস্কারও পেয়েছেন তিনি।  বিরাট কোহলির পর দ্বিতীয় ভারতীয় হিসেবে এবারের বিশ্বকাপের ‘ম্যান অফ দ্য টুর্নামেন্ট' হয়ে এই কীর্তি গড়লেন তিনি।

এদিকে, ২০২২ সালের প্রথম পেসার হিসেবে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টুর্নামেন্টসেরা হয়েছিলেন ইংল্যান্ডের স্যাম কারেন। ওই আসরে ১৩ উইকেট নেয়ার পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৬ রান করেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় পেসার হিসেবে টি-টোয়েন্টির বিশ্ব আসরে টুর্নামেন্টসেরা হয়েছেন ভারতের জাসপ্রিত বুমরাহ। তবে তার সঙ্গে স্যাম কারেনের একটি জায়গায় অমিল আছে স্যাম কারেন ৬ রান করলেও বুমরাহ একটি রানও করেননি। 

তবে তাও কেন বুমরাহ টুর্নামেন্টসেরা হলেন? কারণ ভারতের শিরোপা জেতায় যথেষ্ট প্রভাব রেখেছেন তিনি, বা বলা যায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব। তার ছোটখাটো প্রমাণ পাওয়া যায় বুমরাহর বোলিং ইকোনমির দিকে তাকালে। বিশ্বকাপের এক আসরে অন্তত পাঁচ ইনিংসে হাত ঘোরানো বোলারদের মধ্যে তার চেয়ে কম ইকোনমি নেই আর কারও। যা কমপক্ষে ৫ ম্যাচ খেলাদের মধ্যে সর্বনিম্ন।

প্রতিপক্ষ সব দলেরই সাধারণত লক্ষ্য থাকে, বুমরাহকে কোনোভাবেই উইকেট দেওয়া যাবে না। যতটা সম্ভব নিরাপদে খেলে পার করে দিতে হবে। তার পরও এতগুলি উইকেট তিনি আদায় করে নিয়েছেন। পাওয়ার প্লেতে তিনি ব্যাটসম্যানদের বিভীষিকা, শেষের সময়টায় তো যেন সাক্ষাৎ যম। অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়িয়েছে, ২০ ওভারের ম্যাচে তার চার ওভার হিসেবের বাইরে রেখে সমীকরণ সাজাতে হয় প্রতিপক্ষকে।

শনিবার বার্বাডোজে রোমাঞ্চকর ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে ভারতের দ্বিতীয়বারের মতো টি-টোয়েন্টির বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পেছনে বুমরাহ রাখেন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। আরও একবার বল হাতে আঁটসাঁট থেকে ৪ ওভারে ১৮ রান খরচায় তিনি নেন ২ উইকেট। অর্থাৎ তার ইকোনমি ছিল মোটে ৪.৫০।

আসরের সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার নিতে এসে বুমরাহ তুলে ধরেন তার অনুভূতি, 'আমি এমন একজন মানুষ যে সাধারণত তার আবেগ নিয়ন্ত্রণে রাখার ও দায়িত্বটা ঠিকভাবে সম্পন্ন করার চেষ্টা করে। কিন্তু আজ (শনিবার) আমার কাছে (অনুভূতি প্রকাশের জন্য) পর্যাপ্ত শব্দ নেই। আমি সাধারণত খেলার পরে কাঁদি না। তবে (এখন) আবেগ আমাকে ভাসিয়ে নিচ্ছে। আমরা বিপাকে ছিলাম। তবে সেই পরিস্থিতি থেকে (ঘুরে দাঁড়িয়ে) জেতার জন্য আমরা ভীষণ আনন্দিত।'

বুমরাহর আগে সর্বনিম্ন ইকোনমির এই রেকর্ড ছিল ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্পিনার সুনিল নারাইনের দখলে। তিনি ২০১৪ সালের আসরে প্রতি ওভারে গড়ে কেবল ৪.৬০ রান দিয়েছিলেন। 


সর্বশেষ সংবাদ