নেপালের বিপক্ষে ১০৬ রান করেই অলআউট বাংলাদেশ
- টিডিসি ডেস্ক
- প্রকাশ: ১৭ জুন ২০২৪, ০৮:৪০ AM , আপডেট: ১৭ জুন ২০২৪, ০৮:৪১ AM
টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সুপার এইটের টিকিট কাটতে নেপালের বিপক্ষে কোনোরকম একটা জয় পেলেই নিরাপদ বাংলাদেশের জন্য। সেন্ট ভিনসেন্টে বাংলাদেশের হতাশার ব্যাটিংয়ের পর জয়ের আশা করাই এখন কঠিন ব্যাপার। নেপালের ঘূর্ণির সামনে হাঁসফাঁস করে ১৯.৩ ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হয়ে গেছে বাংলাদেশ।
২০ ওভারের মধ্যে ১৬ ওভারই করেছেন নেপালের ৪ স্পিনার। ৬টি উইকেটও নিয়েছেন তাঁরা। প্রত্যেকের ইকোনমি ৬-এর নিচে। লম্বা সময় ধরে ভঙ্গুর ব্যাটিং অর্ডারে বাংলাদেশের কিছুটা স্বস্তি ছিল মিডল অর্ডারে। মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ-তাওহিদ হৃদয়রা আজ সুবিধা করতে পারেননি। দায়িত্ব নিতে পারেননি অন্যরাও। নেপালের দুই লেগ স্পিনার সন্দ্বীপ লামিচান ও কুশল ভুরটালের ৩–৪ ডিগ্রি টার্ন বুঝতেই পারছিলেন না তাঁরা।
সেন্ট ভিনসেন্টে আগে ব্যাটিংয়ের আমন্ত্রণ পেয়ে পাওয়ার-প্লেতেই ৩০ রানে ৪ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। টপ অর্ডারের দুরবস্থাও আর বদলায়নি। সৌম্য সরকার ব্যর্থ হওয়ায় তানজিদ তামিমের সঙ্গে ওপেনিংয়ে জুটি বাঁধেন শান্ত। আগের দুই ম্যাচে সুবিধা করতে পারেনি তাঁদের জুটিও। আজ আরেকবার এল ওপেনিং জুটিতে পরিবর্তন—তামিমের সঙ্গে নামলেন লিটন। এই জুটিতেও ওপেনিং জুটির ভাগ্য পরিবর্তন হয়নি। টিকেছে মাত্র ১ বল!
ইনিংসের প্রথম বল দেখার চেষ্টাই করলেন না তামিম। সোমপাল কামিকে প্রথম বলেই ডাউন দ্য গ্রাউন্ডে এসে খেলতে চেয়েছিলেন। বলের সঙ্গে ব্যাটের ভালো সংযোগ না ঘটায় কামির ফিরতি ক্যাচে ফেরেন এ বাঁহাতি ব্যাটার (০)।
ইনিংসের দ্বিতীয় বলে নামতে হয়েছে অধিনায়ক শান্তকে। পজিশন পরিবর্তন করেও পাননি ছন্দ। দ্বিতীয় ওভারে দীপেন্দ্র সিং আইরির বল রক্ষাণাত্মক খেলার চেষ্টা করেন শান্ত। বলের সঙ্গে চোখের সংযোগ ছিল না একদমই। ব্যাট-প্যাডের মাঝ দিয়ে স্টাম্পের লালবাতি জ্বালিয়ে দেয় বল।
৫ বলে ৪ রানে ফেরেন বাংলাদেশ অধিনায়ক। এবারের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে শান্তর নামের পাশে আরেকটি ব্যর্থ ইনিংস যোগ হয়েছে। গ্রুপ পর্বে শান্তর চার ইনিংস—৭, ১৪, ১ ও ৪। সব মিলিয়ে এ বাঁহাতি ব্যাটারের রান ২৬। দলে বিপর্যয়ে দায়িত্ব নিতে পারেননি লিটনও। ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েও বড় করতে পারেননি ইনিংস। কামির করা পঞ্চম ওভারে অপ্রয়োজনীয় শটে বল তুলে দেন বেশ ওপরে। সহজেই বল হাতে জমা করেন নেপালের উইকেটকিপার আসিফ শেখ। ১২ বলে ১০ রান এসেছে লিটনের ব্যাট থেকে।
ষষ্ঠ ওভারে রোহিত পাউডেলের বলে সন্দ্বীপ লামিচানেকে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ছন্দে থাকা তাওহিদ হৃদয়। ৭ বলে করেছেন ৯ রান। পাওয়ার-প্লেতে ৪ উইকেটে ৩১ রান তোলে বাংলাদেশ।
সাকিব আল হাসান-মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের পঞ্ম উইকেটে ধাক্কা সামলে উঠছিল বাংলাদেশ। এর মধ্যেই তাঁরা আবার দলকে ফেলে যান কঠিন বিপর্যয়ে। নবম ওভারে লামিচানের ফুলটস বল মিড অফে খেলেছিলেন সাকিব। রান নেওয়া ছিল ঝুঁকি। একটু সময় নিয়ে দৌড় শুরু করেন সাকিব, তা দেখে দৌড়ান মাহমুদউল্লাহও ভুল বুঝতে পেরে সাকিব থেমে যান, মাহমুদউল্লাহ আর ক্রিজে ফেরার সময় পাননি। রানআউট হওয়ার আগে করেছেন ১৩ বলে ১৩ রান। ভাঙে দুই জনের ২২ রানে জুটি।
দ্বাদশ ওভারে এলবিডব্লু হয়ে পাউডলের দ্বিতীয় শিকার হন সাকিব। ২২ বলে ১৭ রান এসেছে তাঁর ব্যাট থেকে। ১৪তম ওভারে লামিচেনের প্রথম বলে তানজিম হাসান সাকিবকে এলবিডব্লুর ফাঁদে একবার আউট দেন আম্পায়ার। রিভিউ নিয়ে বেঁচে যান সেবার। পরের বলেই আবার বোল্ড হয়ে ফেরেন ৩ রানে।
১০০ রানের আগেই গুটিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা জেগে ওঠে তখন। তবে জাকের আলীর ১২, শেষ দিকে রিশাদ হোসেনের ১৩ ও তাসকিন আহমেদের ১৩ রানের কল্যাণে ১৯.৩ ওভারে ১০৬ রানে অলআউট হয়ে যায় বাংলাদেশ। আইরি, লামিচান, কামি ও পাউডেল প্রত্যেকে নিয়েছেন ২টি করে উইকেট।