৭০০ উইকেট ও ১৪ হাজার রানের রেকর্ড একমাত্র সাকিবের
বিশ্বসেরা ক্রিকেট অলরাউন্ডারের মধ্যে একজন সাকিব আল হাসান। দেশ-বিদেশে সাকিবের অসংখ্য ভক্ত। অনেক উঠতি ক্রিকেটার অনুসরণ করেন তাকে। সাকিব আল হাসান ব্যতিক্রমি এক চরিত্র। সাকিব বাংলাদেশের ইতিহাসের সেরা ক্রীড়াবিদ তো বটেই, নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন আধুনিক ক্রিকেটের অন্যতম সেরা ক্রিকেটার হিসেবে। তবে এবার দারুণ এক মাইলফলক স্পর্শ করলেন সাকিব। বিশ্বের একমাত্র অলরাউন্ডার হিসেবে তিন সংস্করণ ১৪ হাজারের বেশি রান ও ৭০০ উইকেটের মালিক বাংলাদেশ অলরাউন্ডার।
শনিবার প্রেইরি ভিউ ক্রিকেট কমপ্লেক্সে যুক্তরাষ্ট্রের বিপক্ষে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ টি-২০ ম্যাচে ১ উইকেট নিয়েই বিশ্বরেকর্ড গড়েন সাকিব। ম্যাচে নিজের দ্বিতীয় ওভারের শেষ বলে যুক্তরাষ্ট্রের দলীয় ৪৬ রানের মাথায় ওপেনার আন্দ্রিস গুসকে সাজঘরে ফেরানর সাকিব। এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সব ফরম্যাট মিলিয়ে ৭০০ উইকেটের মালিক হয়েছেন তিনি।
৭০০ উইকেটের ক্লাবে সব মিলিয়ে বিশ্বের ১৭তম বোলার সাকিব। স্পিনারদের মধ্যে সপ্তম, তবে বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে সাকিব দ্বিতীয়। এর আগে প্রথম বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৭০০ উইকেট শিকার করেছেন নিউজিল্যান্ডের ড্যানিয়েল ভেট্টোরি। ৪৪২ ম্যাচে ৭০৫ উইকেট নিয়েছেন ভেট্টোরি। অর্থাৎ বাঁহাতি স্পিনারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়া সাকিবের জন্য এখন সময়ের ব্যাপার।
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সাকিবের এখন ৭০০ উইকেট। করেছেন ১৪ হাজারের বেশি রান। সব মিলিয়ে সবাইকে পেছনে ফেলে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১৪ হাজার রান এবং ৭০০ উইকেটের ডাবল রেকর্ডের মালিক শুধু সাকিব। তিন সংস্করণের ক্রিকেটে এমন কীর্তিতে সাকিবের ধারেকাছেও নেই কেউ। দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার জ্যাক ক্যালিস অবশ্য ২৫ হাজারের বেশি রান করলেও উইকেট সংখ্যায় সাকিবের চেয়ে ১২৩টি কম তার।
পরিসংখ্যান বলছে, ভবিষ্যতে সাকিবের এমন কীর্তি ছুঁতে পারার মতো ক্রিকেটারও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে খুব একটা নেই। ১২৮ বছরের ক্রিকেট ইতিহাসে অনন্য উচ্চতায় জায়গা করে নিয়েছেন বাঁহাতি এই স্পিন অলরাউন্ডার। শুধু বোলার সাকিবের ধারেকাছেও নেই কোনো বাংলাদেশি বোলার। অলরাউন্ডার হিসাব করলে দেশের ক্রিকেটে তিনিই এখন সবচেয়ে বড় কীর্তির মালিক।
আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে ১২২ ম্যাচ খেলে সাকিবের উইকেট সংখ্যা ১৪৬টি। সংক্ষিপ্ত সংস্করণের আন্তর্জাতিক অঙ্গনে এই বাঁহাতি স্পিনারের চেয়ে বেশি উইকেট শুধু কিউই পেসার টিম সাউদির, ১২৩ ম্যাচে ১৫৭টি। দুজনই বোলিং করেছেন সমান ১২০ ইনিংস। তবে টেস্টে ১১৩ ইনিংসে ২৩৭ ও ওয়ানডেতে ২৪১ ইনিংসে সাকিব নিয়েছেন ৩১৭ উইকেট। এরমধ্যে ২৫ বার পাঁচ উইকেট এবং দু’বার ১০ উইকেট শিকার করেছেন তিনি।
আর ব্যাট হাতে টেস্টে ১২৩ ইনিংসে করেছেন ৪ হাজার ৫০৫ রান, ওয়ানডেতে ২৩৪ ইনিংসে ৭ হাজার ৫৭০ ও টি-টোয়েন্টিতে ১২০ ইনিংসে ২ হাজার ৪৪০ রান।
আরও পড়ুন: বিশ্বকাপে ৩ উইকেট পেলে নতুন যে রেকর্ডের অপেক্ষায় সাকিব
এদিকে, এবার আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩ উইকেট পেলে প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে কীর্তি গড়বেন সাকিব। সব ঠিক থাকলে আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ খেলবেন সাকিব। বিশ্বকাপে ৩ উইকেট নিতে পারলেই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হবেন সাকিব। ৪৭ উইকেট নিয়ে সাকিব আল হাসানই বাংলাদেশের সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি। শুধু বাংলাদেশরই নন, ৪৭ উইকেট নেওয়া সাকিব টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপেরই সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি।
এবার আসন্ন টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ৩ উইকেট পেলে প্রথম বোলার হিসেবে ৫০ উইকেট নেওয়ার কীর্তি গড়ার কথা সাকিবেরই। কারণ শীর্ষ ৫ উইকেট শিকারির বাকি সবাই অবসর নিয়েছেন। বিশ্বকাপে খেলবেন, এমন ক্রিকেটারদের মধ্যে সাকিবের পর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি ওয়ানিন্দু হাসারাঙ্গা, তার উইকেট ৩১টি।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ও যুক্তরাষ্ট্রে অনুষ্ঠেয় এবারের বিশ্বকাপে সাকিব খেললে নতুন আরেকটি কীর্তি গড়বেন তিনি। ২০০৭ থেকে ২০২৪-সব টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলা দুই ক্রিকেটারের একজন হবেন সাকিব। তালিকার অপর নামটি ভারতের রোহিত শর্মার। রোহিতের পর টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সবচেয়ে বেশি ম্যাচও খেলেছেন সাকিব।