সাকিবকে টাইমড আউটের বুদ্ধি যিনি দিয়েছিলেন
আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের ইতিহাসে গতকাল প্রথমবারের মত টাইমড আউট হয়েছেন অভিজ্ঞ লঙ্কান অলরাউন্ডার অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউস। আর এ নিয়েই মাঠে এবং মাঠের বাইরে ছড়িয়েছে উত্তেজনা। এমন ম্যাচেই এক আউটে হইচই পড়ে গেল বিশ্ব ক্রিকেটে। তবে টাইমড আউটের এই চিন্তা সাকিব আল হাসান নিজে থেকে করেননি।
সোমবার (৬ নভেম্বর) ভারতের দিল্লির অরুণ জেটলি স্টেডিয়ামে বিশ্বকাপের গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নামে শ্রীলংকা। ইনিংসের ২৫তম ওভারে ঘটেছে ম্যাচের সবচেয়ে আলোচিত ঘটনাটি।
ম্যাচের ২৫তম ওভারে সাদেরা সামারাবিক্রমা আউট হয়ে ফিরে যাওয়ার পর ক্রিজে আসেন ম্যাথিউস। দুই মিনিটের মধ্যে গার্ড নেওয়ার পর পরই হেলমেটের সমস্যা দেখিয়ে আবার সেটা বদলাতে সময় ব্যয় করেন তিনি। আর তখন বোলার সাকিব আল হাসান আউটের আবেদন করলে ম্যাথিউসকে টাইমড আউট দিয়ে দেন মাঠে থাকা আম্পায়াররা।
বাংলাদেশ তখন টাইমড আউটের আবেদন করে বসে। সাকিব আবেদন প্রত্যাহার না করায় আম্পায়ার আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে প্রথম টাইমড আউটের সিদ্ধান্ত দেন ম্যাথিউসের বিরুদ্ধে। টাইমড আউটের এই চিন্তা সাকিব আল হাসান নিজে থেকে করেননি। তিনি এই বুদ্ধি পেয়েছিলেন দলেরই অন্য এক সতীর্থের কাছ থেকে।
লঙ্কান অভিজ্ঞ তারকার বল মোকাবিলায় দেরি দেখে আবেদন করার কথা সাকিবকে জানান সেই ক্রিকেটার। দলের অন্য একজনের কাছ থেকে এই বুদ্ধি পাওয়ার কথা ম্যাচ শেষে জানান সাকিব, ‘যখন তার (ম্যাথিউসের) দেরি হচ্ছিলো তখন আমাদের দলের একজন আমাকে টাইমড আউটের কথা জানায়। তার কথা থেকেই আমরা আবেদনটা করি।'
আরও পড়ুন: সাকিবের আবেদনে ক্রিকেট ইতিহাসে এই প্রথম ‘টাইমড আউট’ ম্যাথুস
পরে সাকিবের কাছে জানতে চাওয়া হয়, আসলে এমন চতুর বুদ্ধি তাকে দিয়েছিলেন? সাকিব সতীর্থের নাম গোপনই রাখেন। সাকিবের আবেদনের সময় তার পাশে ছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত ও লিটন দাস। দলের লিডিং গ্রুপেরও অংশ এই দুজন। তাদের মধ্য থেকে কেউও এই বুদ্ধি দিয়ে থাকতে পারেন অধিনায়ককে। এছাড়া সে সময় সাকিবের কাছাকাছি ছিলেন লিটন দাসও।
তবে দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সাকিবকে পরামর্শটা দিয়েছিলেন নাজমুল হোসেন শান্ত, যিনি দলের সহ-অধিনায়ক। গতকাল যাঁর ব্যাটও হেসেছে দলকে স্বস্তির জয় এনে দিতে।
ম্যাচ শেষে এই ঘটনা নিয়ে প্রচণ্ড ক্ষোভ ঝেড়েছেন ম্যাথিউস। বাংলাদেশ দল এবং সাকিবের কমনসেন্স নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। এছাড়াও জানিয়েছেন তিনি নাকি আউট ছিলেন না। তাদের কাছে ভিডিওসহ প্রমাণ আছে বলেও জানিয়েছেন লংকান অলরাউন্ডার।
আইন অনুযায়ী ঠিক থাকলেও খেলার চেতনা নিয়ে অনেক প্রশ্ন উঠছে। তবে সাকিবের মোটেও অনুশোচনা নেই এ ঘটনায়। কেন, সেই ব্যাখ্যায় তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, ‘আজকের (কাল) ম্যাচে আমাদের জেতার দরকার ছিল। আমরা যদি যুদ্ধে নামি, যুদ্ধে আপনার দলের কিংবা দেশের জন্য সবই করতে রাজি থাকা উচিত। আমি সেটিই করেছি।’