উইলিয়ামসন-আর্চার বিশ্বকাপে, ভাগ্য হলো না তামিমের
দরজায় কড়া নাড়ছে আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ১৩তম আসর। ভারতে অনুষ্ঠেয় বাংলাদেশের বিশ্বকাপ দলে থাকছেন না তামিম ইকবাল। শুরু থেকে বিশ্বকাপ দলের পরিকল্পনায় ছিলেন তামিম। এজন্য লন্ডন থেকে চিকিৎসা নিয়ে এসে প্রস্তুতিও নিচ্ছিলেন। কিন্তু বিশ্ব আসরের জন্য দেশ ছাড়ার একদিন আগেই হঠাৎ বাদ পড়লেন সদ্য সাবেক অধিনায়ক। কোমরের ইনজুরি থেকে পুরোপুরি ফিট হননি তিনি। সেজন্য তাকে বিশ্বকাপ দলে না রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
হাফ-ফিট তামিম ইকবালকে নিয়ে বিশ্বকাপে যেতে আগ্রহী নন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান এবং কোচ চন্ডিকা হাথুরুসিংহে। শেষ পর্যন্ত সেটাই ঘটল, তামিমকে ছাড়াই দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ। তবে প্রশ্ন আসে, কেন উইলিয়ামসন কিংবা জোফরা আর্চারের মতো ভাগ্য কেন হলো না ওই ওপেনারের।
চোট নিয়ে বিশ্বকাপের দলে রয়েছেন অন্যান্য দেশের একাধিক ক্রিকেটার। অস্ট্রেলিয়ার ট্রেভিস হেড থেকে ধরে ইংল্যান্ডের জোফরা আর্চার ও নিউজিল্যান্ডের কেন উইলিয়ামসনের মতো ক্রিকেটারদের চোট থাকা সত্ত্বেও তাদের নিয়ে বিশ্বকাপ দল সাজিয়েছে তাদের ক্রিকেট বোর্ড।
উইলিয়ামসন নিউজিল্যান্ডের নিয়মিত অধিনায়ক। ইনজুরিতে পড়েছেন এবারের আইপিএলের ঠিক প্রথম ম্যাচে। এসিএল ইনজুরির কারণে শঙ্কা ছিল বিশ্বকাপই হয়তো মিস করতে যাচ্ছেন তিনি। তবে উইলিয়ামসনের জন্য শেষ পর্যন্ত অপেক্ষা করেছে নিউজিল্যান্ডের ক্রিকেট বোর্ড। উইলিয়ামসন ফিরেছেন। বিশ্বকাপেও থাকছেন। তবে তামিম ইকবাল এক ম্যাচ খেললেও উইলিয়ামসনের সেটাও খেলা হয়নি। অনেকটা অনিশ্চিত হয়েই ভারতের ফ্লাইট ধরছেন কিউই অধিনায়ক।
অপরদিকে জোফরা আর্চার চোটে থাকায় তাকে মূল স্কোয়াডে না রাখলেও তাকে রিজার্ভ ক্রিকেটার হিসেবে ভারতে নিয়ে যাচ্ছে ইংল্যান্ড। চোট নিয়ে বিশ্বকাপের দলে রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ার ট্রেভিস হেড। হেড-আর্চার-উইলিয়ামসন কেউই পুরোপুরি ফিট নন, ঠিক তেমনি তামিম ইকবালও শতভাগ ফিট নয়, তবে তিনি আংশিক বিশ্বকাপ খেলতে পারতেন তা সবারই জানা।
তামিমের কোমরের ইনজুরি দীর্ঘদিনের। সেরে উঠতে লন্ডন থেকে চিকিৎসাও নিয়ে আসেন তিনি। বিশ্বকাপ খেলার জন্য নিজেকে প্রস্তুত করে তুলতে এশিয়া কাপ না খেলে করেন দীর্ঘ পুনর্বাসন। প্রায় ৮০ দিন পর নিউজিল্যান্ড সিরিজে মাঠে ফিরেছিলেন তামিম। বৃষ্টিতে প্রথম ম্যাচ ভেসে যাওয়ায় ব্যাট করা হয়নি তার।
তবে দ্বিতীয় ম্যাচে পুরো সময় ফিল্ডিং করার পাশাপাশি ব্যাট হাতে ৫৮ বল মোকাবিলায় করেছিলেন ৪৪ রান। দীর্ঘদিন পরে মাঠে ফিরেও তার এমন স্বস্তির ইনিংসে সবাই ধরেই নিয়েছিল বিশ্বকাপে যাচ্ছেন তামিম। কিন্তু সমস্যাটা দেখা দেয় ম্যাচশেষে যখন তামিম জানান, তিনি কিছুটা অস্বস্তিবোধ করছেন। এরপর তাকে বিশ্রাম দেয়া হয় তৃতীয় ওয়ানডেতে। এর মধ্যে গণমাধ্যমে গুঞ্জন ওঠে, আনফিট বা হাফফিট কোনো ক্রিকেটারকে দলে চান না কোচ ও অধিনায়ক।
আরও পড়ুন: তামিমের বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ পড়া নিয়ে যা বললেন মাশরাফি
শেষ পর্যন্ত সিদ্ধান্ত হয়, বিশ্বকাপ দলে থাকবেন না তামিম। অনেকের ধারণা, কেবল সাকিব ও হাথুরুসিংহের চাওয়াতে তামিমকে বাদ দেয়া হয়েছে। তবে নান্নু আবারও স্পষ্ট করেন যে, সিদ্ধান্ত কারও একার না, পুরো ম্যানেজমেন্টের। নান্নু বলেন, ‘মিডিয়ায় অনেক কথাই দেখছি, শুনছি। কিন্তু এ ধরণের কোনো তথ্য আমাদের কাছে ছিল না। একটা দল, স্কোয়াড ঘোষণা করার জন্য আমরা সবসময় ম্যানেজমেন্টর সঙ্গে আলোচনা করি।
এদিকে, বিশ্বকাপ দলে জায়গা হয়নি বাংলাদেশ দলের সাবেক অধিনায়ক তামিম ইকবালের। সেই ধারাবাহিকতায় এবার তার বড় ভাই নাফিস ইকবালকেও বোর্ডের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি দিয়েছে বিসিবি। বাংলাদেশ-নিউজিল্যান্ডের ম্যাচ চলাকালে স্টেডিয়াম থেকে বের হয়ে যান নাফিস। তবে প্রথমে ধারণা করা হয়েছিল তামিমকে বিশ্বকাপ দল থেকে বাদ দেওয়ার পায়তারা চলছে এমন ক্ষেভে তিনি ড্রেসিং রুম ছেড়ে যান।