পরকালে সফল হতে না পারলে শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই থেকে যাব: তানজিম
এশিয়া কাপে ভারতের বিপক্ষে আন্তর্জাতিক ম্যাচে পা রেখেই দুর্দান্ত পারফর্ম করেন পেসার তানজিম হাসান সাকিবের। সেই ম্যাচে ৮ বলে অপরাজিত ১৪ রান করার পর নিয়েছেন ২ উইকেট। ভারতের বিপক্ষে ম্যাচ জিতিয়ে রাতারাতি নায়ক হয়ে গিয়েছিলেন তানজিম হাসান সাকিব। কিন্তু অভিষেকেই এমন নৈপুণ্যের একদিন পরেই সাকিবের পুরনো কিছু ফেসবুক পোস্ট ভাইরাল হয়েছে। যা নিয়ে তোপের মুখে পড়েছেন ২০ বছর বয়সী এই পেসার।
অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপজয়ী তরুণ পেসার তানজিম হাসান সাকিবকে নিয়ে সমালোচনার ঝড় ওঠে সামাজিক যোগাযোগামাধ্যমে। তরুণ উদীয়মান তারকার সেসব পোস্ট নিয়ে দ্বিধাবিভক্ত বাংলাদেশ ক্রিকেটের ভক্ত সমর্থকরা। অনেকেই তরুণ এই ক্রিকেটারের সমালোচনা করলেও অনেকে সমর্থন দিচ্ছেন তাকে।
তানজিম সাকিব পুরানো ফেসবুক পোস্ট নিয়ে সমালোচনার জবাব দিয়েছেন। গণমাধ্যমকে তানজিম সাকিব বলেছেন, ‘আল্লাহ তো কুরআনে বলেই দিয়েছেন আমি জিন এবং মানব জাতিকে সৃষ্টি করেছি আমার এবাদতের জন্য। ক্রিকেট আমার পেশা, আমি এখান থেকে ইনকাম করি। আমার তো মেইন জীবনটা অফলাইনের জীবন। আর মৃত্যুকে সকলেরই মোকাবিলা করা লাগবে। কখন কে মারা যাবে, কেউ কিছু জানে না। আমি পরকালে সফল হতে না পারলে তো শেষ পর্যন্ত ব্যর্থই থেকে যাব।
তিনি আরও বলেন, সুতরাং সেই হিসেব করে আমি ইসলামকে মেনে চলার চেষ্টা করি। চেষ্টা করি সবসময় ইসলামের মধ্যে থাকার জন্য। আর এই জিনিসটি আমাকে খেলার মধ্যেও অনেক সাহায্য করে।’ ‘ইসলাম আমাকে শৃঙ্খলার মধ্যে থাকতে সাহায্য করে। তাতে মানসিকভাবে আমি শক্ত থাকতে পারি। আমার মানসিকতা অন্যদিকে যায় না। একটি নির্দিষ্ট জায়গায় নিজের মানসিকতা ধরে রাখতে পারি। সুতরাং এটি আমাকে দুনিয়া এবং আখিরাত- দুইদিক থেকেই সাহায্য করছে।’
তিনি বলেন, ‘সতীর্থরা আমার এই বিষয়টা খুবই পজিটিভলি নেয়। যখন তারা কোনো জিনিস না বুঝে, বা ইসলামী কোনো একটা জিনিস জানার চেষ্টা করে তখন আমাদের দুজনের কাছেই আসে। সেই বিষয়গুলো আমাদের জানা না থাকলে আমরা জেনে তাদের উত্তর দেয়ার চেষ্টা করি।’
২০২২ সালের ৯ সেপ্টেম্বর তানজিম সাকিব তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট দিয়েছিলেন। এই পোস্ট নিয়েই মূলত বিতর্কের সূত্রপাত।
সেই পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘স্ত্রী চাকরি করলে স্বামীর হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে সন্তানের হক আদায় হয় না, স্ত্রী চাকরি করলে তার কমনীয়তা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পরিবার ধ্বংস হয়, স্ত্রী চাকরি করলে পর্দা নষ্ট হয়, স্ত্রী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়। স্ত্রীকে যেই স্বামী বলে- আমার স্ত্রীর চাকরি করার দরকার নেই। আমি যা পাই তোমাকে খাওয়াব, সে তাকে রাজরানি হয়ে আছে। এখন সে রাজরানি না হয়ে কর্মচারী হতে চায়। আসলে স্ত্রী স্বামীর মর্যাদা বোঝেনি, স্ত্রী নিজের মর্যাদাও বোঝেনি। ঘর একটি জগৎ।
একই পোস্টের শেষে বলা হয়েছে, ‘অতএব মা-বোনেরা নিজের আত্মমর্যাদা রক্ষার্থে স্বামীর আনুগত্য ও বাসায় অবস্থান করে রানির হালাতে অবস্থান করুন। অতএব মা-বোনেরা দুনিয়া কামাতে যেয়ে আখেরাত না হারিয়ে ঘরে অবস্থান করে স্বামী-সন্তানের খেদমত করে দুনিয়া ও আখেরাত দুটিই কামাই করতে পারবেন ইনশা আল্লাহ।’
এছাড়া পোস্টের শেষে একটি মাইক্রোফোনের ইমোটিকনসহ ‘শায়খ আবু বকর মুহাম্মাদ জাকারিয়া (হাফিযাহুল্লাহ)’ নামটি লেখা ছিল। তবে তানজিম সাকিবের সেই পোস্ট এই মুহূর্তে ফেসবুকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
উল্লেখ্য, বছর দুয়েক আগে ভাইরাল হয়েছিল এক নারীর সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ার সাবেক টেস্ট অধিনায়ক টিম পেইনের কিছু আপত্তিকর চ্যাটিংয়ের স্ক্রিনশট। এরপর তিনি অধিনায়কত্ব থেকে ইস্তফা দেন। ক্যারিয়ারও শেষ হয়ে যায়। তাই ক্রিকেটাররা এসব ক্ষেত্রে ভীষণ সতর্ক থাকেন।