এরপর যখনই বিদায় নেই সংবাদ সম্মেলন করবো না: তামিম
আফগানিস্তান সিরিজের মাঝপথে অনেকটা হুট করেই আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন তামিম ইকবাল। তামিমের এমন বিদায় মেনে নিতে পারেননি দেশের ক্রিকেটপ্রেমীরাসহ স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীও। অবসরেরর বিষয়ে আলোচনার জন্য পরদিনই তামিমকে ডেকে পাঠিয়েছিলেন গণভবনে। প্রধানমন্ত্রীর সাথে দীর্ঘ তিন ঘণ্টার আলোচনার পর অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করেছিলেন দেশের ক্রিকেট ইতিহাসের অন্যতম সেরা এ ওপেনার।
তবে অবসরের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করলেও অবসরের সিদ্ধান্তকে ঘিরে আলোচনা এখনও থামেনি। কেনো এমন একটি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন তামিম, কেনো মাঠের পরিবর্তে অশ্রুসিক্ত সংবাদ সম্মেলনে ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছিলেন জনপ্রিয় এ ক্রিকেট তারকা। সম্প্রতি এসব বিষয় নিয়েই দেশের একটি গণমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেছেন তামিম ইকবাল।
তামিম ইকবাল জানান, নিজ পরিবারের ২৭ জন সদস্যকে সাথে নিয়ে দুবাইয়ের উদ্দেশে উড়াল দিয়েছে বাংলাদেশ ওয়ানডে দলের অধিনায়ক তামিম ইকবাল খান। প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে দেড় মাসের ছুটির অংশ হিসেবে এই ভ্রমণে যাচ্ছেন তিনি। দুবাই থেকে যাবেন ইংল্যান্ডে। সেখানে নিজের চোটের চিকিৎসা করানোর কথা রয়েছে তার।
এরপর দেশে ফিরে বিশ্বকাপ ক্যাম্পেইনে যোগ দেয়ার কথা রয়েছে তামিমের। বিশ্বকাপের আগে অধিনায়ককে নিশ্চিতভাবেই ফুরফুরে মেজাজে পেতে চাইবে বাংলাদেশ দল। তবে তামিম জানালেন, ক্রিকেট বোর্ডের সাথে তার আলাপের উপরেই অনেক কিছু নির্ভর করবে।
আরো পড়ুন: শিক্ষা-গবেষণায় আঞ্চলিক সহযোগিতার চায় ইউজিসি
তিনি বলেন, ঢাকায় ফিরে বোর্ডে ক্রিকেট অপারেশন্স কমিটির সাথে কথা বলব। আমি তার (জালাল ইউনুস) সাথে পুরো বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করতে চাই, আমার এই সিদ্ধান্ত নেয়ার কারণ কি, গত ছয়-সাতমাস ধরে আমি কোন পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছি আর কেন আমার অবসরের সিদ্ধান্ত নেয়ার দরকার ছিল।
তবে কোন সংবাদমাধ্যমের সাথে কথা বলায় আগ্রহী নন তামিম। তিনি কেবল বিসিবির সাথেই কথা বলতে চান, ‘আমরা পেশাদারিত্ব নিয়ে কথা বলি এবং এটা গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আশ্চর্যের বিষয় আমরা সেটা মেনে চলি না। গোপনীয়তা বলে কিছুই নেই। আগেও এমন হয়েছে, আমি যখনই বোর্ডের সাথে ব্যক্তিগত কথা বলেছি, সেটাও গণমাধ্যমের কাছে জানানো হয়েছে। এটা শুধু আমার সাথে না, আরও অনেকের সাথেই ঘটেছে।
আমি আশা করি, ক্রিকেট অপারেশন্স প্রধানের সাথে আমি যাইই আলাপ করি, সেটা নিজেদের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকবে। জালাল ভাই (জালাল ইউনুস) এর প্রতি আমার সেই বিশ্বাস আছে। তাই আমি ওনার সাথে খোলামেলা আলোচনা করতে আগ্রহী। এরপরেই পরবর্তী বিষয় নিয়ে সিদ্ধান্ত জানাবো।
প্রধানমন্ত্রীর সাথে সাক্ষাৎ প্রসঙ্গে তামিম বলেন, মাননীয় প্রধানমন্ত্রী অত্যন্ত ব্যস্ত একজন মানুষ। আমি আশা করেছিলাম, ১০ থেকে ১৫ মিনিটের জন্য সাক্ষাৎয়ের সুযোগ হবে। কিন্তু আমরা তিন ঘণ্টা সময় ছিলাম সেখানে। তিন ঘণ্টার মধ্যে দেড় ঘণ্টার বেশি সময় উনার সঙ্গে আমি ব্যক্তিগতভাবে কথা বলি আলাদা করে। আমার যত সমস্যা ছিল, কী কারণে এটা করেছি, উনার সঙ্গে সবকিছু বলেছি। আমার নিজের কথা দেশের প্রধানমন্ত্রী জানতে চেয়েছেন, আমি খোলামেলা বলেছি।
এদিকে আগামী ২৯ জুলাই থেকেই শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ দলের বিশ্বকাপ কন্ডিশনিং ক্যাম্প। সেই ক্যাম্পে থাকার কথা ছিল তামিম ইকবালের। তবে বর্তমান পরিস্থিতির সাপেক্ষে তিনি ঠিক কবে যোগ দিবেন তা নিয়ে আছে শঙ্কা। প্রধান নির্বাচক মিনহাজুল আবেদীন নান্নু অবশ্য জানিয়েছেন, মেডিকেল বোর্ডের সবুজ সংকেত পেলেই দলের সাথে যোগ দিতে পারবেন তামিম।
সাক্ষাৎকারে পরবর্তীতে আর কখনো সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে বিদায় নেবেন না উল্লেখ করে তামিম বলেন, আমার বিদায়ের যা ছিল, মনের মধ্যে হয়ে গেছে আমার। এরপর যখনই ক্রিকেট ছাড়ি, সংবাদ সম্মেলন করে হবে না। এটা আমি এখনই বলতে পারি। সংবাদ সম্মেলন করে আর হবে না। যে জিনিসটা আমি সেদিন করেছি, এর চেয়ে ‘অনেস্ট’ কিছু আর হতে পারে না। মানুষের চোখের পানি কখনও নাটক হতে পারে না। সেদিন যা হয়েছে, তা ছিল ভীষণ ভীষণ ইমোশনাল। আমার তরফ থেকে ‘ইটস ডান।’ এখন ব্যাপারটি হলো, এক ম্যাচ খেলি বা ১০ ম্যাচ বা ২০ ম্যাচ, নিজের সবটুকু দিয়ে খেলব এবং সময় হলে, যতটা সিম্পল করে সম্ভব, জানিয়ে দেব।