তামিমের মতো বিগহার্ট মানসিকতা কারও নেই: আশরাফুল
কান্নাজড়িত কণ্ঠে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে বিদায় জানিয়েছেন দেশের অন্যতম সেরা ওপেনার তামিম ইকবাল। বৃহস্পতিবার (৬ জুলাই) দুপুর ১২টায় চট্টগ্রামের হোটেল টাওয়ার ইনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ বিদায়ের ঘোষণা দেন তিনি।
তামিমের অবসরের ঘোষণার পর সতীর্থ এবং সাবেক ক্রিকেটারদের অনেকেই তার এ সিদ্ধান্তকে সমর্থনের পাশাপাশি তাকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনারও আহ্বান জানিয়েছেন। এমনকি বিসিবিও তামিমকে তাঁর সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার অনুরোধ জানিয়েছে। তামিমের অবসরের সিদ্ধান্তে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন বাংলাদেশের একসময়ের অধিনায়ক মোহাম্মদ আশরাফুলও।
তামিমের এমন সিদ্ধান্ত হতবাক এবং শকড হয়েছেন বাংলাদেশের সাবেক এ অধিনায়ক। একইসঙ্গে তার ‘ফিরে আসার’ আশাপ্রকাশও করেছেন তিনি। তামিমের হঠাৎ বিদায়ের পর এক লাইভে এসব কথা বলেন আশরাফুল।
তামিমের সিদ্ধান্তের বিষয়ে আশরাফুল বলেন, গত এক বছর ধরেই শুনছিলাম, বাংলাদেশ বিশ্বকাপ জয়ের আশা নিয়ে ভারতে যাচ্ছে- এমন ঘোষণা দেওয়ার স্বপ্ন ছিল তার। কিন্তু ঘুম থেকে ওঠেই দেখলাম সে অবসর নিয়ে ফেলেছে। যদিও এভাবে হুট করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অভ্যাস তার পুরনো। তবুও অবাক হয়েছি, তা সত্ত্বেও বলব সে চমৎকার একটা সিদ্ধান্ত নিয়েছে। কারণ আর ২-১টা ম্যাচ হারলে তাকে বাজেভাবে অধিনায়কত্ব ছাড়তে হতো। তার সাম্প্রতিক ফর্ম থেকে সাধারণ মানুষ সেই ২০০৭ সালের তামিমকে দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু সেটা তো সম্ভব নয়।
তিনি আরও বলেন, আমি শকড। আর হয়তো ৬-৭টা ম্যাচ পরেই বিশ্বকাপ। তার আগেই এমন সিদ্ধান্ত। জীবনটাই এরকম, তাকেও হঠাৎই সিদ্ধান্ত নিতে হয়েছে। বাংলাদেশের সব ফরম্যাটে তিনি টপ স্কোরার ছিলেন এবং ২৫টা সেঞ্চুরি অবশ্যই বিরাট অ্যাচিভমেন্ট। আমার মনে হয়না সে ফিরে আসবে, যেহেতু বিশ্বকাপের আগেও আর তেমন সময় নেই।
তামিমের ছোটবেলার কথা স্মরণ করে আশরাফুল বলেন, ছোটবেলা তেকে আমি তামিমকে চিনি। সে সময় তার ভাই নাফিস ইকবালের সঙ্গে খেলছিলাম, যখন সে হাফপ্যান্ট পরে আসতো। পরে ২০০৬ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সে জাতীয় দলে আসে। এর আগে ডিওএইচএসের হয়ে এক ম্যাচে ১৮৮ রান করেছিল, আমার মনে আছে। তখন থেকেই আমরা জানতাম একজন ড্যাশিং ওপেনার আসছে বাংলাদেশে। প্রথমে অফসাইডে খেলত বেশি, পরবর্তীতে জেমি সিডন্স এবং সালাউদ্দিনের মাধ্যমে সে লেগসাইডে খেলতেও অভ্যস্ত হয়।
তামিমের বিদায়ে বাংলাদেশের সামনের পথটা কঠিন হয়ে গেছে উল্লেখ করে বলেন, এর মাধ্যমে বাংলাদেশের জন্য পথটা কঠিন হয়ে গেল। যখন আমরা তৃতীয় ওপেনার খুঁজছিলাম, তার ভেতরই অভিজ্ঞ একজনকে হারালাম। তবে আমি আশা করব তামিম ইজিলি আরও ৩-৪ বছর ঘরোয়া লিগে খেলবে এবং আন্তর্জাতিকেও ফিরতে পারেন। তার বয়স তো এত বেশি হয়নি আসলে, অন্তত অবসর নেওয়ার মতো নয়। কিছুদিন রেস্ট নিয়ে তিনি ফিরতেও পারেন। যাইহোক, অল দ্য বেস্ট তামিম।
তামিমের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন আশরাফুল, তামিম তোমাকে ধন্যবাদ, গত ১৯টা বছর তুমি আমাদেরকে অনেক ইন্টারটেইন করেছ। ২০০৭ বিশ্বকাপে প্রথমে ভারতের দেওয়া ১৯১ রানের জবাবে ডমিন্যান্ট করার মানসিকতা দেখিয়েছ। এরপর বাংলাদেশের হয়ে অনেক অর্জন তোমার, আমার জুনিয়র হলেও তুমি আমার আগেই অবসরের ঘোষণা দিয়েছ। যেটা সিনিয়র হয়েও আমি এবং মাশরাফি এখনও পারিনি। তামিমের বিগ হার্ট, ওর মতো বিগহার্ট মানসিকতা কারও নেই। তার এমন দৃঢ় মনোবল এবং ব্যক্তিত্ব আসলেই অসাধারণ।