এক ম্যাচে দুই জার্সি ব্রাজিলের, গিনিকে দিল চার গোল
আফ্রিকান দেশ গিনির বিপক্ষে ভিনিসিয়ুস জুনিয়রের প্রতি বর্ণবাদী আচরণের প্রতিবাদ হিসেবে আয়োজিত প্রীতি ম্যাচে প্রথমবারের মতো কালো রঙের জার্সি পরে নেমেছিল সেলেসাওরা। এই ম্যাচে ব্রাজিলের বড় জয়ে অভিষিক্ত জোয়েলিনটন এবং ভিনিসিয়ুসরা দারুণ অবদান রেখেছেন। এতে যেন নিজেদের চেনা ছন্দই হারিয়ে ফেলেছিল সেলেসাওরা। দলের তারকা নেইমার জুনিয়র পুরোপুরি ফিট না হওয়ায় ছিলেন না। তবুও গিনির জালে ‘এক হালি’ গোল দিয়ে জয়ে ফিরল পাঁচবারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা।
শনিবার (১৭ জুন) দিবাগত রাতে বার্সেলোনার আরসিডিই স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছিল আফ্রিকা ও লাতিন আমেরিকার দেশ দুটি। বর্ণবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে এদিন প্রথমার্ধে কালো জার্সি পরলেও, দ্বিতীয়ার্ধে ব্রাজিল নিজেদের হলুদ রঙের ব্যান্ড কিট পরে নামে আমেরিকার অন্যতম পরাশক্তিরা। দুটি প্রীতি ম্যাচের জন্য ঘোষিত ব্রাজিল দলে আগে থেকেই কয়েকজন তারকা ফুটবলার ছিলেন না।
এদিন সেলেসাওদের জার্সিতে দুজন ফুটবলারের অভিষেক হয়। ক্লাব ফুটবলে সামর্থ্যের জানান দেওয়া নিউক্যাসলের মিডফিল্ডার জোয়েলিনটন জাতীয় দলের অভিষেক ম্যাচটা গোল দিয়ে রাঙিয়েছেন। একইসঙ্গে অভিষেক হয়েছিল দেশের ঘরোয়া ক্লাবে খেলা ডিফেন্ডার আইরতন লুকাসের।
রিচার্লিসন, ভিনিসিয়ুসদের রীতিমতো বেশ কিছুটা সময় বোতলবন্দী করে রাখে গিনির ডিফেন্ডাররা। ম্যাচের ২১তম মিনিটে তাকে হলুদ কার্ড দেখান রেফারি। এর মিনিট ছয়েক পরেই জালের দেখা পায় সবশেষ ২০০২ সালে বিশ্বকাপজয়ীরা। রদ্রিগোর ফ্রি কিকের শটে বল জালে জড়ান জাতীয় দলে প্রথমবার মাঠে নামা জোয়েলিনটন।
এর আগেও অবশ্য ব্রাজিল গোলের সুযোগ তৈরি করেছিল। সপ্তম মিনিটে ভিনিসিয়ুসের থ্রু বল ধরে পাকুয়েতার শট ফিরিয়ে দেন গোলরক্ষক। দশম মিনিটে রদ্রিগোর শট এক ডিফেন্ডারের পায়ে লেগে বাইরের জাল কাঁপায়। তবে এরপর একের পর এক গোলে রক্ষণদেয়াল অক্ষুণ্ন রাখতে পারেনি গিনি। প্রথম গোলের তিন মিনিট পরই ব্রাজিল দ্বিতীয় গোল পেয়ে যায়। এবার স্কোরশিটে নাম তোলেন রিয়ালে অসাধারণ খেলা তরুণ ফরোয়ার্ড রদ্রিগো।
৩৬তম মিনিটে গিনি ফুটবলার ইসিয়াগার কাট ব্যাকে বল পেয়ে যান ফরোয়ার্ড গিরাসি। মার্কিনিয়োস ও আইরতন লুকাসের মাঝখান থেকে লাফিয়ে হেড দিয়ে তিনি বল জালে পৌঁছান। এরপর ২-১ ব্যবধান নিয়ে বিরতিতে যায় দু’দল। দ্বিতীয়ার্ধে বিরতির পর তারা নিজেদের পছন্দের হলুদ কিট বদল করে নামে। বিরতির পরপরই তৃতীয় গোল পেয়ে যায় ক্যাসেমিরোর দল। ৪৭তম মিনিটে পাকুয়েতার ফ্রি-কিক থেকে পাওয়া বল হেডে লক্ষ্যভেদ করেন এডার মিলিটাও।
৭৬তম মিনিটে ‘ডাবল’ গোলরক্ষক এডারসন তাদের দুইবার সেভ করেন। বক্সের বাইরে থেকে উড়ে আসা শট ফেরানোর পর ইসিয়াগার ফিরতি শটও তিনি পা দিয়ে আটকান। তবে ব্রাজিল এরপর আবারও ব্যবধান বাড়াতে পারতো। কিন্তু গোলরক্ষককে একা পেয়েও সুযোগ লাগাতে পারেননি রিচার্লিসন। ৮৮তম মিনিটে বক্সের মধ্যে ম্যালকম ফাউলের শিকার হলে পেনাল্টির বাঁশি বাজান রেফারি। সেখান থেকে সফল স্পট কিকে ব্রাজিলের জয় নিশ্চিত করেন ভিনিসিয়ুস।
কাতার বিশ্বকাপের পর প্রথম জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে ব্রাজিল। একইসঙ্গে অন্তর্বর্তীকালীন কোচ র্যামন মেনেজেসেরও এটি প্রথম জয়। আগামী মঙ্গলবার (২০ জুন) পর্তুগালের লিসবনে সেনেগালের মুখোমুখি হবে ব্রাজিল। বর্ণবাদ বিরোধী অভিযানে ভিনিসিয়াসের প্রতি সমর্থনে এই ম্যাচটিও আয়োজন করা হবে।