ব্রাজিলের জয়ের রাতে নাইজেরিয়ার কাছে হেরে বিশ্বকাপ থেকে বিদায় আর্জেন্টিনার
যুব বিশ্বকাপ খেলতে আর্জেন্টিনায় পা রেখেছিল পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন ব্রাজিলের যুবারা। কিন্তু নিজেদের প্রথম ম্যাচেই ইতালির কাছে হেরে বসে তারা। তবে টানা তিন ম্যাচ জিতে এখন অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে ব্রাজিল এদিকে এবারের অনূর্ধ্ব-২০ ফুটবল বিশ্বকাপে হট ফেভারিট ছিল আর্জেন্টিনা। কিন্তু গ্রুপ পর্বে তাদের পারফরম্যান্সে সেই দাপটও ছিল। তবে নকআউট পর্বে এসে নাইজেরিয়ার কাছে আটকে গেল স্বাগতিকরা।
বুধবার (৩১ মে) রাতে আর্জেন্টিনার দিয়েগো আরমান্দো স্টেডিয়ামে শেষ ষোলর ম্যাচে তিউনিসিয়াকে ৪-১ গোলে উড়িয়ে দিয়েছে ব্রাজিলের যুবারা। আর্জেন্টিনার স্যান হুয়ান ডেল বিসেন্টেনারিও স্টেডিয়ামে আর্জেন্টিনাকে ২-০ গোলে হারিয়ে অনূর্ধ্ব-২০ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠেছে নাইজেরিয়া।
পুরো ম্যাচে ৫৫ শতাংশ বল পজিশনে রেখে এগিয়ে ছিল তিউনিসিয়া। প্রতিপক্ষের গোলে ২৪টি শট নিয়েছিল তারা। কিন্তু জয় নিয়ে মাঠ ছাড়তে পারেনি। অন্যদিকে ব্রাজিল রেখেছিল ৪৫ শতাংশ বল পজিশন। তারা প্রতিপক্ষের গোলে শট নিয়েছিল ১১টি। সেখান থেকে চারটি গোল আদায় করতে সক্ষম হয় সেলেসাও যুবারা।
শক্তির বিচারে যে ব্রাজিল তিউনিসিয়ার চেয়ে এগিয়ে তা প্রমাণে বেশি সময় নেয়নি সেলেসাওরা। ম্যাচের ১১তম মিনিটে প্রতিপক্ষ গোলরক্ষকের ভুলে পেনাল্টি পেয়ে যায় টুর্নামেন্টের পাঁচবারের চ্যাম্পিয়নরা। সফল স্পট কিক থেকে গোল করতে ভুল করেননি মার্কোস লিওনার্দো। ম্যাচের ৩১তম মিনিটে মার্কোস লিওনার্দোর অ্যাসিস্ট থেকে ব্রাজিলের লিড দ্বিগুণ করেন আন্দ্র সান্তোস।
২ গোলে পিছিয়ে পড়ে কিছুটা খেলায় ফেরার চেষ্টা করে তিউনিসিয়া। কিন্তু কাঙ্ক্ষিত গোলের দেখা পাচ্ছিল না তারা। তবে বিরতির ঠিক আগে ১০ জনের দলে পরিণত হয় ব্রাজিল। প্রথমার্ধ যখন প্রায় শেষের পথে তখনই তিউনিসিয়ান ফরোয়ার্ডকে ফাউল করে লাল কার্ড দেখেন রবার্ট রেনান। অতিরিক্ত সময়ের প্রথমার্ধে ব্রাজিলের তৃতীয় গোলটি করেন ম্যাথিউস মার্টিনস। ইনজুরি টাইমের দশম মিনিটে নিজের দ্বিতীয় ও দলের চতুর্থ গোল করেন আন্দ্রে সান্তোস।
শক্তির বিচারে নাইজেরিয়ার থেকে এগিয়ে আর্জেন্টিনা। ম্যাচের পরিসংখ্যানও বলছে সেটাই। বল দখল থেকে শুরু করে আক্রমণ, পাস কিংবা টার্গেটে শট সবকিছুতেই বেশ এগিয়ে আর্জেন্টাইনরা। শুধু ফলাফলটাই তাদের বিপরীতে গেছে। শুরুর দিকে কিছুটা ম্যাড়মেড়ে ফুটবল খেলেছে দুদলই। ঘরের মাঠে আত্মবিশ্বাসী আর্জেন্টিনা ধীরে ধীরে আক্রমণের ধার বাড়ায়। তবে গোলশূন্যভাবেই শেষ হয়েছে প্রথমার্ধের খেলা।
৫৮ তম মিনিটেই প্রায় লিড নিয়ে ফেলেছিল আফ্রিকান দলটি। কিন্তু আদেনিরান লাওয়ালের শট গিয়ে লাগে পোস্টে। ফিরতি শটে সুযোগ পেলেও জালে বল জড়াতে পারেনি নাইজেরিয়ানরা। সুযোগের জন্য অপেক্ষা করতে হয়নি নাইজেরিয়াকে। ৬১ তম মিনিটে আদেনিরানের পাস থেকেই জালে বল জড়ান পিছিয়ে পড়ার পর গোলের জন্য আরও মরিয়া হয়ে ওঠে আর্জেন্টিনা।
৬৪তম মিনিটে কার্বোনির দুর্দান্ত শট দারুণ দক্ষতায় ফিরিয়ে দেন নাইজেরিয়ান গোলরক্ষক। ৮৩ তম মিনিটে তো স্রেফ ভাগ্যের জোরে বেঁচে যায় নাইজেরিয়া। রোমেরোর নেয়া শট গোলকিপারকে পরাস্ত করলেও পোস্টে লেগে ফিরে আসে। আর্জেন্টিনার কফিনে শেষ পেরেকটা ঢুকান সারকি, অতিরিক্ত সময়ে। প্রতি আক্রমণে গোলটা আদায় করে নেয় নাইজেরিয়ানরা। সহজ জয় নিয়ে মাঠ ছাড়ে আফ্রিকান দলটি। আর চলমান বিশ্বকাপের স্বপ্ন এখানেই শেষ হয় আর্জেন্টিনার।
স্বাগতিক আর্জেন্টিনা ছিটকে গেলেও চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ব্রাজিল নিশ্চিত করেছে শেষ আটের টিকিট। আগামী ৩ জুন তাদের কোয়ার্টার ফাইনালে প্রতিপক্ষ ইসরায়েল।