০৪ মে ২০২৩, ১৭:২৯

দেশের ফুটবল পাতালে, সালাউদ্দিনের অহংকার আকাশে

বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিন  © ফাইল ছবি

ফুটবলের বিশ্ব মানচিত্রে বাংলাদেশের অবস্থান তলানিতে। ফিফার সদস্য সংখ্যা ২১১, এর ভেতর অনেকগুলোই ঠিক সার্বভৌম দেশ নয় বরং অন্য কোনো দেশের অধীনস্থ দ্বীপ। এই ২১১ দলের ভেতর বাংলাদেশের অবস্থান ১৯২তম।

বাংলাদেশ ফুটবল দল দেশের মাটিতেও হারে অপেশাদার খেলোয়াড়দের নিয়ে গড়া সেশেলস দলের কাছে। ফুটবল ফেডারেশনের শীর্ষ কর্তা আবু নাঈম সোহাগ ফিফার তদন্তে দুর্নীতিতে ধরা খেয়ে হয়েছেন নিষিদ্ধ। টাকার অভাবে অলিম্পিক বাছাই পর্বে পাঠানো যায় না দল।

তবুও যেন গর্বের শেষ নেই বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতি কাজী মোহাম্মদ সালাউদ্দিনের। ক্ষমতার দম্ভে একের পর এক বেফাঁস মন্তব্য করেই চলেছেন সাবেক এই ফুটবল তারকা। তার চোখে ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা ফিফা অকার্যকর আর দেশের ক্রীড়া সাংবাদিকরা সমাজের নিচু স্তর থেকে আসা যে কারণে তিনি তাদের ঢুকতে দিতে চান না বাফুফে ভবনে।

এক সময়ে সালাউদ্দিন ছিলেন দেশের সবচেয়ে বড় তারকা খেলোয়াড়। দেশজুড়ে লাখো তরুণ ছিল সালাউদ্দিনের ভক্ত। স্বাধীন বাংলা ফুটবল দলের খেলোয়াড় ছিলেন, ঢাকার ক্লাব ফুটবলে খেলেছেন বড় দুই দল আবাহনী ও মোহামেডানের হয়ে। হংকংয়ের পেশাদার লিগেও খেলেছেন ক্যারোলিন হিল এফসির হয়ে। খেলোয়াড়ী জীবনের পর কোচ হিসেবেও সালাউদ্দিন সফল। ক্রীড়া প্রশাসনে পা রাখেন ২০০৩ সালে, বাফুফের সহ-সভাপতিই হিসেবে।

২০০৮ সালের ২৮ এপ্রিল, বাফুফের সভাপতি নির্বাচিত হন সালাউদ্দিন, টানা চতুর্থ মেয়াদে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন ৬৮ বছর বয়সী সালাউদ্দিন। ক্ষমতার দম্ভে ধরাকে সরা জ্ঞান করা সালাউদ্দিন বাফুফেতে প্রশ্রয় দিয়েছেন দুর্নীতিকে আর যারা তার কর্মকান্ড নিয়ে প্রশ্ন তুলছে সেই গণমাধ্যমকর্মীদের নিয়ে করেছেন আপত্তিকর মন্তব্য।

১৪, এপ্রিল ২০২৩। দিনটি ছিল বাংলাদেশে পহেলা বৈশাখ অর্থাৎ বাংলা নববর্ষের ছুটির দিন। সেদিনই সাম্প্রতিক সময়ে ফুটবলে সবচেয়ে বড় দুঃসংবাদ পায় বাংলাদেশ। ফিফার তহবিল থেকে খরচের হিসাব বুঝিয়ে দিতে জাল দলিল ও তথ্য উপাত্ত সরবরাহের অভিযোগে ফিফা দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে বাফুফের সেসময়কার সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগকে। সেই সঙ্গে তাকে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ জরিমানাও করা হয়।

ফিফার এই ঘোষণার আগে তদন্ত কমিটির মুখোমুখি হতে সুইজারল্যান্ডে গিয়েছিলেন সোহাগসহ বাফুফের আরও তিন কর্মকর্তা; জাবের বিন আনসারী, হাসান মাহমুদ, অনুপম সরকার ও তাদের আইনজীবী। এই ব্যপারে সালাউদ্দিনকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন যে ‘আমি জানি না’। পরে ১৯ ফেব্রুয়ারি সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সালাউদ্দিন ব্যখ্যা করেন যে ফিফার গোপনীয়তার নিয়মের কারণেই তিনি সত্যিটা বলতে পারেননি। 

একই ব্রিফিংয়ের এক পর্যায়ে সালাউদ্দিন বলে বসেন, ‘এটাই হচ্ছে নতুন ফিফা। আমি তিনটা ফিফাতে ( ফিফার নির্বাহী কমিটির অধীনে) কাজ করেছি, এরা (বর্তমান কমিটি) কিন্তু কোন উন্নয়নে নাই। তারা আগে যা হচ্ছিল সেটাই অনুসরণ করছে। শুধু যোগ করেছে অনুবর্তিতা (কমপ্লায়েন্স)। যেসব করা তারা বের করেছিল ব্ল্যাটার আর অন্যদেরএরা চেষ্টা করেছিল দুই বছরে একটা বিশ্বকাপ করতে, তারা সেটা করতে ব্যর্থ হয়েছে। 

তারপর একটা লিগ করতে চেয়েছিল, সেখানেও তারা ব্যর্থ হয়েছে। স্পোর্টিং সবকিছুতে ব্যর্থ হয়ে এখানে আসছে; কমপ্লায়েন্স,কমপ্লায়েন্স, কমপ্লায়েন্স। কথায় কথায় কমপ্লায়েন্স। আমি এই ফিফা আর এএফসিতে মজা পাই না। আগে গেলে ফুটবলের আলাপ হত, ফুটবলে যাইতাম।এখন এখানে গেলে খালি কথাবার্তা হয় কথাবার্তা হয় কথাবার্তা হয়। এখানে ফুটবলের চেয়ে বেশি এই ধরনের জিনিষগুলো'।

ব্যক্তি সালাউদ্দিন ছড়ি ঘোরান বাফুফের সব কর্মকাণ্ডে। এখানে তার ইচ্ছাই সব। কিন্তু ২০২৩ সালে এসে যে স্বেচ্ছাচারিতার এমন সুযোগ নেই, বিশেষ করে জাতিসংঘের চেয়েও সদস্য সংখ্যায় বড় সংগঠন ফিফাতে সেটা সালাউদ্দিনের বোঝার ক্ষমতাই যেন নেই। তার দৃষ্টিতে বাফুফের মত ফিফা এএফসি চলবে কোন রকম দায়বদ্ধতা ও স্বচ্ছতা ছাড়াই।

একই ব্রিফিংয়ে বাফুফের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু নাঈম সোহাগও বিষেদগার করেন ফিফার বিরুদ্ধে, ‘মনে করেন, আমাদের আগের গ্রাউন্ডস কমিটির চেয়ারম্যান একটা ঘাসকাটার মেশিন কিনেছে ১ লাখ ২০ হাজার টাকা দিয়ে। আমাকে জুরিখে গিয়ে উত্তর দিতে হয়েছে কিভাবে কেনা হয়েছিল, কোটেশন কয়টা নিয়েছিলা এটা অনুমোদন করেছে কে, পেমেন্ট প্রসিডিওর কি। সাধারণত পাঁচ বছরের হিসেব চায় তবে সঙ্গে প্যাঁচ লাগানো আছে। তারা চাইলে যত ইচ্ছা তত দিনের।

পাঁচ বছর আগের একটা বিষয়, কি জানি আমি এটা সম্পর্কে। জাতীয় দল খেলতে গেসে, জার্সি কেনা হইসে এস্টাবলিশ কর এটা ফেয়ার প্রাইস। কি ভাবে করবা জানি না, চার তলা থেকে লাফ দাও দিয়ে জীবিত থাকতে হবে, তুমি কিভাবে জীবিত থাকবা জানি না।' সালাউদ্দিন এবং আবু নাঈম সোহাগ, দুজনের কথাবার্তাতেই স্পষ্ট ফুটে ওঠে ফিফার কমপ্লায়েন্স নীতিমালা সম্পর্কে তাদের অশ্রদ্ধা। যার প্রমাণ মেলে শেষ পর্যন্ত ফিফার তদন্ত প্রতিবেদনে।

আরও পড়ুন: আবারও সাফের সভাপতি হলেন কাজী সালাউদ্দিন

ফিফার কমপ্লায়েন্স উপবিভাগ এর অনুসন্ধানী কক্ষকে  কন্ট্রোল রিস্ক গ্রুপ নামের একটি পরামর্শক প্রতিষ্ঠান জানায় বাফুফের কাগজপত্র ও হিসেবে অসংগতি আছে। ফরেনসিক রিভিউ এর জন্য বিডিও (এলএলপি) নামের একটি নিরীক্ষা সংস্থাকে নিয়োগ দেয়া হয় যারা বাফুফের ১ জানুয়ারি ২০১৭ থেকে ৩০ সেপ্টেম্বর ২০২০ এই সময়ের ভেতর ফিফার তহবিল থেকে খরচের অনেক অসংগতি পায়।

এই অভিযোগের প্রেক্ষিতে আবু নাঈম সোহাগকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে ফিফা। তার বিরুদ্ধে ফিফা ফরোয়ার্ড তহবিলের অপব্যবহার ও ফিফার তহবিল থেকে বাফুফের খরচের জাল দলিল দস্তাবেজ প্রমাণ হিসেবে দাখিল করার অপরাধ প্রমাণিত হওয়াতেই এই শাস্তি।

সোহাগের অপরাধের তালিকাটা লম্বা। জাতীয় দলের জন্য ৩০ হাজার ২৭ মার্কিন ডলারের ক্রীড়া সামগ্রী ক্রয়ের দরপত্রে যে তিন প্রতিষ্ঠানের নাম, তাদের অবস্থান পাশাপাশি এবং সবার দরপত্রেই একই বানান ভুল। এসব দেখে ফিফার বিশেষজ্ঞের উপলব্ধি, পরস্পরের যোগসাজশেই দেয়া হয়েছে এই সব দরপত্র।

এছাড়া মেয়েদের কাপড়ের দোকানের কাছ থেকে ফুটবল কেনা, বেনামি ভুঁইফোঁড় প্রতিষ্ঠানের দরপত্র দেখানো, আমদানিকারকের লাইসেন্স বিহীন প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আমদানিকৃত পন্য ক্রয়, বিমান টিকিট ক্রয়ে এমন সব প্রতিষ্ঠানের দরপত্র দেখানো যারা টিকেটের ব্যবসা করেই না করে মানবসম্পদ রপ্তানির ব্যবসা। সেই সঙ্গে ভুয়া দলিল দস্তাবেজ তৈরি, কোচদের বেতন একবার অ্যাকাউন্টে প্রেরণ দেখানো আবার নগদে প্রদান দেখানোসহ সন্দেহজনক অনেক লেনদেনই ফিফার তহবিল থেকে করেছেন সোহাগ।

তবে এসব যে সোহাগ একা করবার সাহস করেননি সেটা দিনের আলোর মতই স্পষ্ট। বাফুফেতে দুর্নীতিই মূলনীতি এবং কোন কমপ্লায়েন্সের বালাই নেই বলেই যে ফিফার কমপ্লায়েন্স নিয়ে বাফুফের শীর্ষ মহলের এত মাথাব্যথা।

তাই তো সোহাগের নিষেধাজ্ঞা জারি হবার পরও সালাউদ্দিন ব্যস্ত ছিলেন তাকে বাঁচাতে, বারবার সাংবাদিকদের বলেন যে সোহাগ অন্যায়ের শিকার। ১৫ এপ্রিল বাফুফে ভবনে সংবাদ সম্মেলনে সালাউদ্দিন বলেন, ‘একটা খারাপ সংবাদের কারণে আজ আমরা সবাই একত্র হয়েছি। বাফুফে সাধারণ সম্পাদক দুই বছরের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। সোহাগের সঙ্গে রাতে কথা হয়েছে। তিনি মনে করেন তার উপর অবিচার হয়েছে, তিনি আদালতে যাবেন।'

দিন তিনেক পর বাফুফের সহ সভাপতি ও ফিন্যান্স কমিটির প্রধান সালাম মুর্শেদীও ফিফার অভিযোগ অস্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, ‘কোনো দুর্নীতি হয়নি। আপনার এই শব্দ প্রত্যাহার করুন। ফিফা কোনো দুর্নীতির কথা বলেনি।' অথচ তার পাশে বসেই সালাউদ্দিন জানান সোহাগকে বাফুফেতে আজীবন নিষিদ্ধ করার কথা। ফিফার রায়ে স্পষ্ট উল্লেখ আছে জালিয়াতি, তহবিল তছরূপ ও ক্ষমতার অপব্যবহার এর অপরাধসমূহ।

সোহাগের বিদায়ে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক পদে অস্থায়ী ভাবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে বাফুফেতে সালাউদ্দিনের ব্যক্তিগত সহকারী ইমরান হোসেনকে। ধারণা করা হচ্ছে সালাউদ্দিনের তল্পিবাহক ইমরান মূলত শিখণ্ডি, অন্তরালে থেকে যাবেন দুর্নীতির কারিগরেরাই।

বাফুফের দুর্নীতি প্রকাশ্যে আসছে সাংবাদিকদের লেখায়, প্রতিবেদনে। সম্প্রতি মেয়ে ফুটবলারদের অলিম্পিক প্রাক-বাছাই খেলতে মিয়ানমারে না পাঠানোর কারণ হিসেবে অর্থের অভাব উল্লেখ করেছিলেন বহিষ্কৃত সাধারণ সম্পাদক সোহাগ। সরকারের কাছে ৯৩ লাখ টাকা চেয়ে আবেদন করেছিল বাফুফে, যেখানে মেয়েদের বাফুফে ভবন থেকে বিমানবন্দরে যাতায়াতের ভাড়া দেখানো হয়েছিল ২৫ হাজার টাকা! এছাড়াও উচ্চ মূল্যের বিমান টিকিট সহ অনেক খাতেই বেহিসেবি খরচ দেখানো হয়েছিল, তাতেই বোঝা যায় বাফুফে কর্তাদের দুর্নীতির বহর কতটা লম্বা।

২ মে ২০২৩ তারিখে, ফিফার শাস্তি, বাফুফের নিজস্ব তদন্ত এসব নিয়ে সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ের আগে সভাপতি সালাউদ্দিন ও সহ-সভাপতি কাজি নাবিল নিজেদের মধ্যে আলাপে অত্যন্ত অশালীন ও আপত্তিকর মন্তব্য করেন সাংবাদিকদের নিয়ে। সালাউদ্দিন নাবিলকে বলছিলেন, ‘জার্নালিস্টরা এখানে ঢুকতে গেলে ফটো (ছবি) দিতে হবে, তাদের বাপ-মার।' এরপর পাশ থেকে সালাম মুর্শেদী ও আতাউর রহমান মানিকের মধ্যে কেউ একজন কিছু বললে, প্রত্ত্যুতরে সালাউদ্দিন বলেন, ‘আরেকটা কন্ডিশন হলো তার বাপের ফটো পাঠাতে হবে জুতা পরা। ঠিক আছে (হাসি)! এটা হতে হবে মেন্ডেটরি। বাপের জুতা পরা ছবি থাকতে হবে।' পাশে বসা নাবিলও কি যেন বলে সায় দিচ্ছিলেন এবং এক পর্যায়ে বলেন, ‘হু স্টার্টেড ওয়্যারিং আন্ডারওয়্যার অ্যান্ড হু ডিড নট।' সালাউদ্দিন পরে ক্ষমা চেয়েছেন, বলেছেন তিনি রসিকতা করছিলেন, ‘একটা নিউজ আমি দেখছি, যেখানে সাংবাদিকদের আঘাত করার জন্য একটা কথা বলেছি।

প্রকৃত কথা হলো, আমি সাংবাদিকদের কষ্ট দেওয়ার জন্য বলিনি। আমি নাবিলের (কাজী নাবিল আহমেদ) সঙ্গে একটা বিষয় নিয়ে জোক করছিলাম। সেটা যে কেউ টেপ (রেকর্ড) করছিলেন, সেটা আমি জানি না। আমি এই কথায় যদি কাউকে কষ্ট দিয়ে থাকি, দুঃখ দিয়ে থাকি, তাহলে আমি খুবই দুঃখিত।' যদিও এই ব্যখ্যা মোটেও সন্তোষজনক মনে হয়নি।

বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতির সভাপতি ও আন্তর্জাতিক ক্রীড়া সাংবাদিক সঙ্ঘের এশিয়া অঞ্চলের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য সনৎ বাবলা এই প্রসঙ্গে বলেন, ‘বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সভাপতির চেয়ারে বসে ওনার এ রকম কথা শুনে বিস্মিত হয়েছি। বাংলাদেশের ফুটবলে সাম্প্রতিক সময়ে ফিফার নিষেধাজ্ঞা এবং বাফুফের নানা জালিয়াতির খবর যখন সংবাদমাধ্যমে আসছে, তখন তিনি এটা নিতে পারছেন না। এ কারণে তিনি সাংবাদিকদের মা-বাবা নিয়ে তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করতে শুরু করেছেন। এটা খুবই দুঃখজনক এবং নিন্দনীয়।

এরই মধ্যে বিএসপিএ থেকে সালাউদ্দিনের সম্মানজনক সদস্যপদ খারিজ করা হয়েছে এবং অন্যান্য সাংবাদিক সংগঠনগুলোও সালাউদ্দিনের এমন মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে তার পদত্যাগ দাবি করেছে। 

সাফল্য বা সম্পদ সাধারণত ইন্ধন জোগায় অহংকারের। সালাউদ্দিনের সাফল্য বা সম্পদ কিছুই নেই। তার আমলে বাংলাদেশের পুরুষ ফুটবল দলের র‍্যাংকিং নেমেছিল ১৯৬তে, বর্তমানে যা ১৯২। কোচের বেতন না দেয়াতে নিয়মিতই দেয়া লাগে জরিমানা। দেশের জাতীয় ফুটবল দল নিজের মাঠে হেরে যায় মাঝি বা জেলেদের নিয়ে গড়া সিশেলস দলের কাছে।

তিনি দায়িত্ব নেয়ার পর একবারও সাফ চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও খেলতে পারেনি বাংলাদেশ, অথচ বড় বড় বুলি শুনিয়েছিলেন ২০২২ বিশ্বকাপে খেলার। প্রকাশ্যে এসেছে তার প্রতিষ্ঠানে দূর্নীতি আর আর্থিক অনিয়মের খবর। তহবিলেও নেই পর্যাপ্ত অর্থ, হাত পাততে হচ্ছে বিভিন্ন সংস্থার কাছে আর জমে আছে পুরানো দেনাও। তবুও সালাউদ্দিনের গর্বের যেন শেষ নেই। ফুটবল গিয়ে ঠেকেছে পাতালে আর অহংকারে সালাউদ্দিনের মাথা যেন ঠেকেছে আকাশে। [সূত্র: ডয়চে ভেলে বাংলা]