আরাভ ইস্যুতে সাকিবের রক্ষাকর্তা বিসিবি

সাকিব আল হাসান
সাকিব আল হাসান  © ফাইল ছবি

আরাভ জুয়েলার্স ইস্যুতে গত কয়েকদিন ধরে আলোচনায় রয়েছেন দেশের ক্রিকেটের পোস্টার বয় সাকিব আল হাসান। ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করার পরদিনই দুবাইয়ে যান জুয়েলার্স উদ্বোধন করার জন্য। এরপর জানা যায়, তিনি যে জুয়েলার্স শপ উদ্বোধন করতে গেছেন; তার মালিক রবিউল ইসলাম ওরফে আরাভ খুনের মামলার আসামী। এ নিয়ে নানা আলোচনা-সমালোচনা তৈরি হয়। 

এবার বিষয়টি নিয়ে নিজেদের অবস্থান জানিয়েছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলেছেন, সিরিজের পর প্রয়োজনে এ নিয়ে তদন্ত হবে। তবে আপাতত এ আলোচনা থেমে যাক, এটাই চাওয়া তার। সাকিব যদি ভুল করে সেখানে যান তাহলে কি তাকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসবে বিসিবি? এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেছেন, অবশ্যই। কারণ সাকিব শুধু আমাদের বিসিবির সম্পদ না, দেশের সম্পদ। তার দিকে লুক আফটার করা আমাদের দায়িত্ব।

তিনি বলেন, এটা নিয়ে এই সিরিজের মাঝখানে নিয়ে আলাপ করতে চাচ্ছিলাম না। কিন্তু যেহেতু আপনি প্রশ্ন তুলেছেন, আমি বলছি। পুরো ব্যাপারটা কিন্তু আমরা মিডিয়ায় দেখিছি, শুনেছি। যে ঘটনাটা ঘটেছে খুবই সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে। যখন নাকি একদিনের ব্যবধানে এটা হয়েছে। একটা সিরিজ শেষ হলো, আরেকটা সিরিজ যখন শুরু হলো; তখন শুরু হয়েছে। যা কিছু ঘটেছে, আমরা যা কিছু দেখেছি, আমরা মিডিয়ার মাধ্যমে দেখেছি। আমাদের ওই সময় হয়নি পুরো বিস্তারিত জানার বা যারা এটার মধ্যে কনসার্ন আছেন তাদের জিজ্ঞেস করার। এটা সিরিজ শেষ হোক, অবশ্যই এই ব্যাপারে আমরা জানতে চাইবো। কী ঘটনা ঘটেছে, কী না ঘটেছে, কার ইনভলভমেন্ট কী, এগুলো আমাদের ব্যাপার না। আমরা বোর্ড থেকে দেখবো আমরা কতটুকু এখানে কনসার্ন। সে ব্যাপারটাই বেশি গুরুত্ব দেবো। 

সাকিব কেন্দ্রীয় চুক্তিতে আছেন। তিনি বিসিবির কাছে দায়বদ্ধও। তাদের জানিয়েই সাকিবের যাওয়ার কথা এমন অনুষ্ঠানে। ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান জালাল ইউনুস বলছেন, তিনি জানেন না, জানতো না তার বিভাগও। দুই সিরিজের মাঝখানের একদিনের ছুটি কাজে লাগিয়েছেন, এমন দাবি জালাল ইউনুসের।  

ক্রিকেট অপারেশন্স চেয়ারম্যান বলছেন, আমরা জানি না, আমার ক্রিকেট অপারেশন্স জানে না ব্যাপারটা। জেনারেলি সিরিজের মাঝখানে একটা ছুটি ছিল। দুটা সিরিজের মাঝখানে একটা ছুটির মতো ছিল, সেটা সে এভেইল করেছে, ব্রেকটা এভেইল করেছে। জানা ছিল ১৭ তারিখ দলের সঙ্গে জয়েন করবে এটা আমরা জানতাম। কোথায় গেছে কী করেছে, বা কার সঙ্গে কী ছিল, বাণিজ্যিক ইনভলমেন্ট ছিল কি না এটা আমরা পরে জানতে পেরেছি। দ্বিতীয় ব্যাপার হচ্ছে এমন কোনো ঘটনা ঘটলে আমরা অবশ্যই দেখবো। কিন্তু সিরিজের মাঝে আলাপ করতে চাচ্ছি না। 

সাকিবকে ‘সেন্সেবল বয়’ হিসেবেও উল্লেখ করেন জালাল, আমরা মনে করি সাকিব ইজ অ্যা ভেরি সেন্সেবল বয়। তার সবকিছু জ্ঞান আছে এসব ব্যাপারে। কোথায় কী করতে হবে না করতে হবে খুব ভালো জানে। ব্যাপারটা কী ঘটেছে, সেজন্যই বললাম কেন ঘটেছে, কীভাবে ঘটলো, কীভাবে ইনভলভমেন্ট হলো সেটা আমরা এখন পর্যন্ত জানি না। কারণ এটা নিয়ে আমরা তাদের সঙ্গে এটা নিয়ে আলাপ-আলোচনা করিনি। 

জালাল ইউনুস বলেন, একটু আগে বললাম একদিন পরই সিরিজ শুরু হয়ে গেছে। একই সঙ্গে বোর্ডের সভাপতি ও সিইও বাইরে আছেন আইসিসি মিটিংয়ে, উনারা আসলে নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা করে ঠিক করবো কী করা যায়। ব্যাপারটা হচ্ছে আমাদের এখানে কমিটি আছে ডিসিপ্লিনারি। উনারা যদি মনে করে এখানে কোনো কিছু আরও তদন্ত দরকার। উনারা দেখবেন। আমার মনে হয় একটু অপেক্ষা করা দরকার। এখন এগুলো নিয়ে এখন আলাপ করাই ভালো। 

বিসিবি থেকে আরেকটু ভালোভাবে এসব খেয়াল করা দরকার কি না এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, এখানে ক্রিকেট অপারেশন্স থেকে আমরা দেখবো কেন্দ্রীয় চুক্তিতে কী আছে তার। সেটা ভাঙা হয়েছে কি না। বাণিজ্যিক চুক্তি বোর্ডের সঙ্গে ক্ল্যাশ করে কি না। যদি তেমন কিছু থাকে ডিসিপ্লিনারিতে আমরা রেফার করতে পারি। এজন্য বললাম কোনো কিছু না জেনে, সবার থেকে জিজ্ঞেস না করে, ব্যাপারটা পুরোপুরি তদন্ত না করে মন্তব্য করা ঠিক হবে না।

এটা নিয়ে যদি হৈচৈ বেশি করি কিছু না জেনে। এটা তার পারফরম্যান্সেও তো একটা সমস্যা হবে। আমার মনে হয় আগে ব্যাপারটা জানি আমরা সবাই। সবারই এখানে সমর্থন দরকার। যদি সে না জেনে থাকে, যেটা বললেন, তাহলে পরামর্শ তাকে দেওয়া যায় কিনা, উপদেশ দেওয়া যায় কি না, আমাদের কোনো নির্দেশনা আছে কি না, সেটা নিয়ে আমরা আলাপ আলোচনা করতে পারি বলেও জানান তিনি।


সর্বশেষ সংবাদ