ভক্ত শাহিনের পাশে হাস্যোজ্জ্বল তামিম, দিলেন খেলা দেখার টিকিট
পোলিও আক্রান্ত শাহীন ফকিরের উচ্চতা ১৮ ইঞ্চি। শাহীন টাইগারদের ওয়ানডে অধিনায়ক তামিমের ভক্ত। তার জীবনের সবচেয়ে বড় স্বপ্ন ছিল তামিম ইকবালের সঙ্গে দেখা করা। কয়েকদিন আগে গণমাধ্যমে সেই তামিমভক্তির কথা জানিয়েছিলেন শাহীন। সাথে এটাও জানিয়েছিলেন, তামিমের সাথে দেখা করার খুব ইচ্ছাটা তার প্রবল। তামিমও তাকে নিরাশ করেননি। দেরি না করে নিজ উদ্যোগে শাহীনকে আনলেন সিলেটে। সময় দিয়েছেন, দিয়েছেন খেলা দেখার টিকিট। আর এতেই মুগ্ধ ওই ভক্ত।
শাহীন বরিশালের মুলাদী উপজেলার চর কমিশনার এলাকার আবুল হাসেম ফকিরের ছেলে। বাবা-মা, দুই ভাই, চার বোন ও ভাবী-ভাতিজীকে নিয়ে যৌথ পরিবারে বাস করেন তিনি। তিন বোনের বিয়ে হয়েছে। এক ভাই মালয়শিয়া প্রবাসী। চতুর্থ শ্রেণির পর পড়াশোনা চালিয়ে নিতে পারেননি তিনি।
জন্মের পর পোলিও আক্রান্ত হয়ে শারীরিক প্রতিবন্ধকতা নিয়ে বেড়ে ওঠেন শাহীন। একটি সংবাদমাধ্যমে তার তামিমকে দেখার স্বপ্নের কথা জানিয়ে সংবাদ প্রচার হয়। সেটি নজরে আসে দেশসেরা ওপেনারের। তাকে নিয়ে আসতে বলেন তামিম।
ওয়ানডে সিরিজ শুরুর একদিন আগে শুক্রবার ট্রফি উন্মোচন ও ফটোসেশনে অংশ নিয়েছেন অধিনায়ক তামিম ইকবাল। সেই আনুষ্ঠানিকতা সেরেই টিম হোটেলে শাহীনের সাথে দেখা করেন তামিম। সময় নিয়ে ভক্তের সাথে কথাও বলেছেন এই অধিনায়ক।
জাতীয় দলের সতীর্থ মুশফিকুর রহিমকেও ডেকে শাহীনের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেন তামিম। এছাড়া জাতীয় দলের লজিস্টিক ম্যানেজার নাফিস ইকবাল এবং বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের সহকারী ম্যানেজার শাহরিয়ার নাফিসও ছিলেন সেখানে।
তামিমের সাথে দেখা করার পর প্রতিক্রিয়ায় শাহীন বলেন, ‘আমি বাংলাদেশ ক্রিকেট দলের সবাইকে পছন্দ করি। কিন্তু তামিম ইকবাল সবচেয়ে পছন্দের। এরপর সাকিব আল হাসান।’
আলোচনার এক পর্যায়ে শাহীনকে একটি জার্সি দেন তামিম। তাতে অটোগ্রাফ ছিল মুশফিকুর রহিম, তামিম ইকবাল, শাহরিয়ার নাফিসদের। শাহীনের যাতায়াত ও থাকা-খাওয়ার জন্য পর্যাপ্ত টাকাও দিয়েছেন অধিনায়ক। মুশফিক শাহীনকে দিয়েছেন ম্যাচ দেখার টিকিট। এছাড়া মুশফিক ও তামিম মিলে শাহীনকে একটি মোটরচালিত হুইলচেয়ার উপহার দেওয়ারও প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন।
ইকবালের কল্যাণে এবারই প্রথম মাঠে বসে দেখবেন বাংলাদেশের খেলা। শাহিন ফকির তার অনুভূতি জানিয়ে বললেন, আমি প্রথমবারের মতো স্টেডিয়ামে গিয়ে খেলা দেখবো। আমার সাথে আরও ৫ জন আছেন। আমাদেরকে খেলা দেখার জন্য ৫টি টিকেট দিয়েছেন
শারীরিক প্রতিবন্ধকতার সঙ্গে যুদ্ধ করে গত পাঁচ বছরে নিজের ছোট ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান দাঁড় করিয়েছেন শাহীন। ত্রিশোর্ধ্ব এই যুবক নিজের দোকানে মোবাইল ব্যাংকিং সেবার পাশাপাশি শিশুদের জন্য চকলেট, বিস্কুটসহ নানা ধরনের পণ্য বিক্রি করেন।