বাবার নাম ‘জাল’ করেছেন সাকিব!
বাংলাদেশ জাতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সেরা তারকা ও বিশ্বসেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। সম্প্রতি গত কয়েকদিন ধরেই নানা আলোচনা-সমালোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেন তিনি। শেয়ার বাজার কারসাজিতে তার নাম উঠে আসার পর এবার শেয়ার ব্যবসার প্রতিষ্ঠান মোনার্ক হোল্ডিংস এর অফিসিয়াল কাগজপত্রে তার বাবার নাম সঠিক দেননি বলে জানা গেছে।
নিজের ব্রোকারেজ ফার্ম ‘মোনার্ক হোল্ডিংস লিমিটেড’-এর পক্ষে শেয়ার মার্কেটে লাইসেন্স পেতে জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন তিনি। তাতে সবাইকে অবাক করে দিয়ে, শেয়ারবাজারে ব্যবসা করার জন্য মোনার্ক হোল্ডিংসের অফিসিয়াল নথিতে তার বাবার নাম ‘জাল’ করেছেন দেশের ক্রিকেটার সবচেয়ে বড় তারকা।
এ বিষয়ে বাংলাদেশের জাতীয় দৈনিক ডেইলি সানের খবর বলছে, তাদের কাছে মোনার্ক হোল্ডিংসের একটি নথি এসেছে যেখানে সাকিব খন্দকার মাশরুর রেজার পরিবর্তে তার বাবার নাম কাজী আবদুল লতিফ বলে উল্লেখ করেছেন। এ ঘটনার পরপরই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সাকিবকে ঘিরে শুরু হয়েছে ফের আলোচনা।
উপরে উল্লেখিত জাতীয় দৈনিকের প্রতিনিধি সাকিবের বিরুদ্ধে জালিয়াতির অভিযোগ যাচাইয়ের জন্য কথা বলেন বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চেয়ারম্যান অধ্যাপক অধ্যাপক শিবলী রুবায়েত-উল-ইসলামের সঙ্গে।
আরও পড়ুন: প্রথম রাউন্ড থেকেই বাদ পড়বে পাকিস্তান, দল নির্বাচনের সমালোচনায় শোয়েব
বিএসইসি চেয়ারম্যান অভিযোগটি সরাসরি নাকচ করে দিয়ে বলেছেন, এনআইডির মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের তথ্য যাচাই করায় পিতার ভুয়া নাম ব্যবহারের সুযোগ নেই।
‘এনআইডির মাধ্যমে যথাযথ যাচাই করায় তার (সাকিব আল হাসান) বাবার ভুয়া নাম ব্যবহারের সুযোগ নেই। দয়া করে তার ক্ষতি করবেন না। তিনি আমাদের শুভেচ্ছা দূত,’ অধ্যাপক শিবলী বলেন।
এ বিষয়ে নিশ্চিত হতে সাকিবের বাবার সঙ্গে যোগযোগ করে ডেইলি সান। তখন সাকিবের বাবা তার নাম খন্দকার মাশরুর রেজা বলে নিশ্চিত করেন। তিনি কখনও আবদুল লতিফ নাম ব্যবহার করেননি।
এদিকে সাকিব ওই জাতীয় দৈনিককে বলেছেন, তিনি তার বাবার নাম সংশোধন করবেন। ‘কোন ভুল হলে কোম্পানি তা সংশোধন করবে,’ বলেন সাকিব।
আরও পডুন: খেলার মধ্যেই বদলে ফেলা যাবে প্রথম একাদশ!
বিএসইসির ‘শুভেচ্ছা দূত’ থাকাকালীন সাকিব গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে তার ব্রোকারেজ ফার্ম ‘মোনার্ক হোল্ডিংস’-এর অনুমোদন পান। শেয়ার কারসাজির দায়ে দণ্ডিত আবুল খায়ের হিরোর স্ত্রী কাজী সাদিয়া হাসান মোনার্ক হোল্ডিংসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক এবং জাভেদ এ মতিন ও আবুল কালাম মাতবর প্রতিষ্ঠানটির পরিচালকের দায়িত্বের আছেন। তবে চেয়ারম্যান হিসেবে আছেন সাকিব নিজেই।
এর আগে আগস্টে জুয়াড়ি প্রতিষ্ঠানের শুভেচ্ছা-দূত হয়ে বিতর্কের জন্ম দেন সাকিব। পরে চলতি মাসে নতুন করেন জড়ান শেয়ারবাজারে-কারসাজি এবং জুয়ার মত গুরুতর অপরাধের বিতর্কে। কিন্তু বিএসইসি তদন্তে তাদের শুভেচ্ছা দূতের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের কোনো প্রমাণ পায়নি।
তবে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাম্প্রতিক তদন্তে দেখা গেছে, ওয়ান ব্যাংক, ফরচুন সুজ এবং এনআরবিসি ব্যাংকের শেয়ার লেনদেনে অনিয়ম করেছেন সাকিব। ডিএসইর তদন্ত বলছে, সাকিব এসব কোম্পানির প্রায় ১০.৪ মিলিয়ন শেয়ার লেনদেনে জড়িত ছিলেন।