সই ভুল করায় ছাত্রকে পিটিয়ে টিসি দিয়ে বের করে দিলেন শিক্ষক!

পরীক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ
পরীক্ষার্থীকে বেত্রাঘাতের অভিযোগ  © প্রতীকী ছবি

লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় সই ভুল করায় পরীক্ষার্থীকে এলোপাতাড়ি পিটিয়ে ছাড়পত্রসহ (টিসি) স্কুল থেকে বের করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। রোববার (১৯ জুন) দুপুরে ন্যায়বিচার চেয়ে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে ভুক্তভোগী ওই পরীক্ষার্থী।

অভিযোগকারী এএইচবি হুসাইন মুহাম্মদ অপূর্ব উপজেলার মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের ৮ম শ্রেণির ছাত্র। অপূর্ব ওই এলাকার বারঘড়িয়া গ্রামের তমিজার রহমানের ছেলে।

অভিযোগে, উপজেলার মহিষখোচা বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ে ষান্মাসিক পরীক্ষা শুরু হলে প্রতিদিনের মতো ১৪ জুন পরীক্ষায় অংশ নেয় অপূর্ব। পরীক্ষার হলে হাজিরা খাতা পৌঁছালে ভুলে নিজের ঘরের পরিবর্তে অন্যের ঘরে সই শুরু করে সে। হল পরিদর্শক বিদ্যালয়টির সহকারী শিক্ষক সাইফুল ইসলাম বিষয়টি দেখে হাজিরা কেড়ে নেন। এরপর অপূর্বকে গালমন্দ করেন এবং এলোপাতাড়ি বেত্রাঘাত করেন।

একপর্যায়ে তাকে পরীক্ষার হল থেকে জোরপূর্বক বের করে দেওয়া হয়। পরে আহত পরীক্ষার্থী অপূর্ব স্থানীয় পল্লি চিকিৎসকের কাছে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়ে বাড়ি ফিরে বিষয়টি তার বাবা ও মাকে অবহিত করে। তার বাবা ও মা বিষয়টি প্রতিষ্ঠান প্রধানকে মোবাইলে অবগত করে ন্যায়বিচার দাবি করেন। এতে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ক্ষুব্ধ হন।  এর দুইদিন পর ১৬ জুন ওই শিক্ষার্থীর ছাড়পত্র (টিসি) বাড়ির ঠিকানায় পাঠায় প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।

রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন হওয়ার পরে এ জোরপূর্বক টিসিতে হতভম্ব হয়ে পড়ে অপূর্বের পরিবার। বিষয়টি নিয়ে একাধিকবার প্রতিষ্ঠান প্রধানকে অবগত করেও কোন সদুত্তর পাননি তারা। অবশেষে রোববার (১৯ জুন) দুপুরে টিসি বাতিল ও ন্যায়বিচার চেয়ে আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে অপূর্ব।

অপূর্বের বাবা তমিজার রহমান বলেন, ভুল সংশোধনের জন্যই তো সন্তানদের বিদ্যালয়ে পাঠানো হয়। সইয়ে সামান্য ভুলের জন্য বেত্রাঘাত আবার রেজিস্ট্রেশন সম্পন্ন করা ছাত্রকে জোরপূর্বক টিসি দেওয়া কতটুকু যৌক্তিক। ছেলের শিক্ষাজীবনকে ধ্বংস করতেই কোনো ধরনের নোটিশ ছাড়াই তারা হিংসাত্মক সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তিনি ন্যায়বিচার দাবি করেন।

মহিষখোচা বহুমূখী উচ্চ বিদ্যালয় ও কলেজের অধ্যক্ষ শরওয়ার আলম বলেন, ওই পরীক্ষার্থী এক ছাত্রীর সইয়ের ঘরে একটি সংকেতিক চিহ্ন লিখে দেয়। এজন্য হল পরিদর্শক তাকে তিরস্কার করেছে, বেত্রাঘাত করেনি। আর অভিভাবকের চাপে তাকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।

আদিতমারী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা জি আর সারোয়ার বলেন, অভিযোগ পেয়েছি। তদন্ত করে বিধিমত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।