বয়স জটিলতায় ভর্তি অনিশ্চিত হাজারো শিক্ষার্থীর
বয়স জটিলতার কারণে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হতে পারছে না হাজারো শিক্ষার্থী। পাবনার ভাঙ্গুড় উপজেলায় এ জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে। বয়স জটিলতার কারণে অনলাইন ভর্তির লটারিও স্থগিত রয়েছে। প্রশাসন জানিয়েছে, বয়সের কোটা যাদের পূরণ হয়নি তাদের অযোগ্য ঘোষণা করে ২৮ ডিসেম্বর লটারি অনুষ্ঠিত হবে। এতে বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা।
শিক্ষা বোর্ডের ভর্তি নির্দেশনা অনুযায়ী, পিএসসি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ ১০+ বয়সের ছাত্র-ছাত্রীর ভর্তির সুযোগ থাকলেও মাউশি ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের জারিকৃত পরিপত্রে ১১+ বছর বয়সের শিক্ষার্থীদের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির যোগ্যতা নির্ধারণ করা হয়েছে। ফলে ১০+ বয়সের শিক্ষার্থী যারা আবেদন করেছিল তাদের আবেদন গ্রহণ করা সম্ভব হচ্ছে না।
আরও পড়ুন- সরকারি স্কুলে ভর্তিতে লটারির উদ্বোধন
উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস সূত্রে জানা যায়, এ বছর সমাপনী উত্তীর্ণ শিক্ষার্থীর সংখ্যা ২ হাজার ৬৯৮ জন। এদের মধ্যে প্রায় অর্ধেক ছাত্রছাত্রীর বয়স ১০+ বছর। সুতরাং হাজারো শিক্ষার্থীর বয়স জটিলতার কারণে আগামী জানুয়ারিতে ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তি হতে পারবে না।
অভিভাবকরা জানিয়েছেন, সমাপনি শেষ করার পর মাউশির এ নতুন নিয়ম অসুবিধায় ফেলেছে। ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা নিয়েই এখন দুশ্চিন্তার মধ্যে আছি। উপজেলা প্রশাসনের কাছে বারবার ধর্না দিয়েও কোন কাজ হচ্ছে না। তারা জানিয়েছেন, নির্ধারিত বয়স পূর্ণ না হলে কাউকেই ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হতে দেবেন না। আমরা এখন কী করবো? ছেলেমেয়েরা কী এক বছর বসে থাকবে?
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদফতর ও মাউশির আলাদা আলাদা বয়সসীমার কারণে এ জটিলতা তৈরি হয়েছে বলে জানান উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবুল কালাম আজাদ।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. সাইফুল আলম বলেন, প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত অধ্যয়ন করে যারা ১১+ বছর বয়সে পিএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে তারাই কেবল সরকারি-বেসরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে।
আরও পড়ুন- বেসরকারি স্কুলে ভর্তির লটারি আজ
বয়সসীমা পূরণ না করলে ভর্তির সুযোগ নেই জানিয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ নাহিদ হাসান খান বলেন, মাউশি ও স্থানীয় সরকারের পরিপত্র অনুযায়ী ১১+ বছর বয়সের শিক্ষার্থীদের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির নির্দেশনা পাওয়ায় ওই স্কুলের স্থগিত করা ভর্তি লটারি আগামী ২৮ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হবে। এর আগে আবেদন করা কম বয়সের শিক্ষার্থীদের বাছাই করে তাদের ষষ্ঠ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য অযোগ্য ঘোষণা করতে বলা হয়েছে।
গত ১৫ ডিসেম্বর সরকারি স্কুলের আবেদনকারীদের মধ্যে লটারি করে ফল প্রকাশ করা হয়। মাউশি জানায়, আগামী বছরের জন্য সরকারি স্কুলগুলোয় প্রথম থেকে নবম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থী ভর্তির জন্য আবেদন করেছেন ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৬৬ জন।
প্রথম থেকে নবম শ্রেণিতে সরকারি স্কুলে ভর্তির জন্য গত ২৫ নভেম্বর থেকে অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শুরু হয়। রবিবার (১২ ডিসেম্বর) রাত ১২টার আগে অনলাইন আবেদন কার্যক্রম শেষ হয়েছে।
আরও পড়ুন- স্কুলে ভর্তির ফলাফলে এক ছাত্রীর নাম পাঁচবার!
সারাদেশে ৪০৫টি সরকারি স্কুলে ৮০ হাজার ১৭টি আসনে ভর্তির জন্য অনলাইন আবেদন শেষ হয়েছে। এতে ১০ লাখ ২৬ হাজার ৭৪৬টি পছন্দক্রম হিসেবে আবেদন জমা হয়েছে। এসব পছন্দক্রমের ক্ষেত্রে ৫ লাখ ৩৮ হাজার ৮৬৬ জন প্রার্থী আবেদন করেছেন। সেই হিসেবে একটি আসনের জন্য ১৪ জনের বেশি শিক্ষার্থীকে অপেক্ষায় থাকতে হবে।
আর বেসরকারি স্কুলের ভর্তির লটারি আজ অনুষ্ঠিত হবে।