অবশেষে বেরিয়ে এলো স্কুলছাত্রীর হত্যার রহস্য
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১১:৪৮ AM , আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২১, ১১:৪৮ AM
অবশেষে টাঙ্গাইলের কালিহাতীর এলেঙ্গায় স্কুলছাত্রী সুমাইয়া (১৬) হত্যা রহস্য উৎঘাটন করল র্যাব। এ হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন আসামি সুমাইয়ার সাবেক প্রেমিক মনিরকে (১৭) ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব।
সুমাইয়ার গলাকাটা লাশের পাশে আহতাবস্থায় পড়ে থাকা গুরুতর আহত কিশোর মনিরই সুমাইয়াকে হত্যা করে নিজে আত্মহত্যার চেষ্টা করেছে। গ্রেফতারকৃত মনির কালিহাতী উপজেলার চরভাবলা গ্রামের মেহের আলীর ছেলে।
র্যাবের কোম্পানি কমান্ডার লে. কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেছেন, ঘটনার পর থেকেই র্যাবের গোয়েন্দা টিম তদন্ত করে জানতে পারে মনির নামে এক বখাটে ছেলের সঙ্গে সুমাইয়ার প্রেমের সম্পর্ক ছিল। এই তথ্যের সূত্র ধরে ছেলেটির পরিচয় বের করে এবং হত্যার সঙ্গে কোন সংশ্লিষ্টতা আছে কি না অনুসন্ধান করতে থাকে। মনিরের বন্ধুদের জিজ্ঞাসাবাদে ধীরে ধীরে উন্মোচিত হতে থাকে হত্যাকাণ্ডের রহস্য। মনিরের বন্ধুর মোবাইলের ছবি ও ভিডিও এর সূত্রধরে বিভিন্ন বিষয়ের তথ্যের সন্নিবেশ ঘটিয়ে হত্যা রহস্য উদঘাটন করা হয়।
তথ্যে জানা যায়, নিহত স্কুলছাত্রী সুমাইয়ার সঙ্গে ট্রাকের হেলপার মনিরের দীর্ঘ দুইবছরের প্রেমের সম্পর্ক ছিল। মনির অত্যন্ত বদমেজাজি এবং মাদকাসক্ত ছিল।
সে সুমাইয়ার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক করার জন্য বিভিন্ন সময় চাপ দিত। করত বিভিন্ন শারীরিক নির্যাতন। ধীরে ধীরে সুমাইয়া তার সঙ্গে সম্পর্ক ছেদ করে দু’মাস আগে অন্য একটা ছেলের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এতে মনির ক্ষুব্ধ হয়। সপ্তাখানেক আগে মনির সুমাইয়াকে রাস্তায় একা পেয়ে মারপিট করে। এতে তার কান দিয়ে রক্ত চলে আসে এবং চিকিৎসা করাতে হয়। এই চড় থাপ্পড় মারার দৃশ্য মনির ভিডিও করে রেখে বন্ধুদের দেখায়। ২৬শে অক্টোবর রাত ১০ টায় মনির তার ৫/৬ জন বন্ধুদের নিয়ে এলেঙ্গা সামসুল হক কলেজে মিটিং করে এবং সুমাইয়া ও তার নতুন প্রেমিকের উপর প্রচন্ড ক্ষোভ প্রকাশ করে। মনির পাগলের মত আচরণ করতে থাকে এবং ২০-৩০ মিনিট পর সবাই যার যার বাড়ি চলে যায়।
ভিডিও বিশ্লেষণে দেখা গেছে, হেলপার মনির একটি সুইচ গিয়ার সংগ্রহ করে এবং লাইকির জন্য ভিডিও তৈরি করে। বিভিন্ন স্টাইলে মনির ওই সুইচ গিয়ার চাকুর ব্যবহার করার ভিডিও করে। যা র্যাবের টাঙ্গাইলের গোয়েন্দা টিম উদ্ধার করে। এই সুইচ গিয়ারের সূত্র ধরে ঘটনাস্থলে একই রক্তাক্ত সুইচ গিয়ার পড়ে ছিল। যা বর্তমানে পুলিশ জব্দ করেছে। এভাবে র্যাবের ছায়া তদন্তে স্কুলছাত্রী (১৬) হত্যার প্রধান সন্দেহভাজন হিসেবে ট্রাক হেলপার মাদকাসক্ত মনিরকে শনাক্ত করে।
মনির সুমাইয়াকে খুন করার পর আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এসময় ঘটনাস্থল থেকে তাকে প্রথমে টাঙ্গাইল জেনারেল হাসপাতালে ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মুমূর্ষু অবস্থায় চিকিৎসাধীন রয়েছে সে।
র্যাব আরো জানিয়েছে, র্যাবের গোয়েন্দা তৎপরতায়, প্রযুক্তির এবং র্যাবের ছায়া তদন্তে মাধ্যমে র্যাব, টাঙ্গাইল এর কোম্পানী কমান্ডার লেঃ কমান্ডার আব্দুল্লাহ আল মামুন এর নেতৃত্বে একটি আভিযানিক দল ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রধান সন্দেহভাজন আসামি মনিরকে বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় গ্রেপ্তার করে। বর্তমানে সে র্যাব হেফাজতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।