এসএসসি অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর এন্ট্রির শেষ দিন আজ
মহামারি করোনার কারণে দেড় বছর পর গত ১২ সেপ্টেম্বর থেকে খুলে দেওয়া হয় সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। বন্ধের করণে শিক্ষার্থীদের পড়াশোনার মধ্যে রাখতে শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট দেওয়া হয়। এসএসসি শিক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্ট মূল্যায়ন বা নম্বর প্রদানের নির্দেশনাও দেয় মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা (মাউশি) অধিদপ্তর।
এবার সেই ধারাবাহিকতায় ২০২১ সালের এসএসসি বা সমমান পরীক্ষার্থীদের অ্যাসাইনমেন্টে প্রাপ্ত নম্বর পাঠানোর জন্য বলেছে ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড। বোর্ডের ওয়েবসাইটে নির্ধারিত প্যানেলে লগইন করে প্রতিষ্ঠানপ্রধান ও শিক্ষকদের তথ্য এন্ট্রি করতে হবে।
২৮ অক্টোবরের মধ্যে তথ্য অন্তর্ভুক্ত করতে হবে জানিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
এর আগে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড ১৬ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় সপ্তাহের; ৭ থেকে ১৩ অক্টোবর পর্যন্ত চতুর্থ ও পঞ্চম সপ্তাহের আর ১৪ থেকে ২১ অক্টোবর পর্যন্ত ষষ্ঠ, সপ্তম, অষ্টম সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর এন্ট্রি করতে বলেছিল। তবে সব সপ্তাহের অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর এন্ট্রির সময় ২৮ অক্টোবর পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে।
এসএসসি পরীক্ষার্থীদের নম্বর এন্ট্রি কীভাবে করতে হবে, তার বিস্তারিত জানিয়েছে ঢাকা শিক্ষা বোর্ড।
নম্বর এন্ট্রি করা নিয়ম:
প্রথমেই বোর্ডের ওয়েবসাইটে (www.dhakaeducationboard.gov.bd) ওইএমএস (OEMS) প্যানেলের মাধ্যমে প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকেই লগইন করে অ্যাসাইনমেন্ট এন্ট্রি প্যানেলে (Assignment Entry Panel) প্রবেশ করতে হবে। সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানকে অ্যাসাইনমেন্টর বিষয়ভিত্তিক ফাঁকা নম্বর ফর্দ প্রিন্ট করে দায়িত্বপ্রাপ্ত নির্ধারিত শিক্ষককে তার অংশ সরবরাহ করতে হবে।
এরপর ফাঁকা নম্বর ফর্দে শিক্ষার্থীদের নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর থাকবে। দায়িত্বপ্রাপ্ত শিক্ষককে জমা দেওয়া অ্যাসাইনমেন্টে শিক্ষার্থীর নাম, রেজিস্ট্রেশন নম্বর নিশ্চিত হয়ে অ্যাসাইনমেন্টের টপশিটে এসএসসির রোল নম্বর লেখার জন্য নির্ধারিত ফাঁকা ঘরে মোটা কালির কলম দিয়ে (লাল কালির সাইনপেন ব্যবহার করলে ভালো হবে) এসএসসির রোল নম্বর লিখতে হবে।
বিষয়ভিত্তিক প্রতিটি অ্যাসাইনমেন্টের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে বরাদ্দ করা অ্যাসাইনমেন্টে একই নিয়মে রোল নম্বর তুলতে হবে। একইভাবে এক থেকে আট পর্যন্ত প্রতিটি অ্যাসাইনমেন্টের টপশিটে রোল নম্বর তুলতে হবে। একটি অ্যাসাইনমেন্টের মূল্যায়ন ও রোল নম্বর বসানো শেষে অ্যাসাইনমেন্টগুলো রোল নম্বর অনুযায়ী ক্রমানুসারে সাজিয়ে রাখতে হবে।
দায়িত্বপ্রাপ্ত সংশ্লিষ্ট শিক্ষক অ্যাসাইনমেন্টের বিষয়ভিত্তিক ফাঁকা নম্বরফর্দে রোল নম্বর, রেজিস্ট্রেশন নম্বর, নাম ইত্যাদি সতর্কতার সঙ্গে মিলিয়ে লাল কালির বলপয়েন্ট কলম ব্যবহার করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষার্থীর অ্যাসাইনমেন্টর এক থেকে আট পর্যন্ত প্রতিটি অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর আলাদাভাবে তুলতে হবে।
এরপর নম্বরফর্দে অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর তোলা শেষ হওয়ার পর প্রতিটি পৃষ্ঠায় নির্ধারিত স্থানে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে স্বাক্ষর দিয়ে প্রতিষ্ঠানপ্রধানের কাছে জমা দিতে হবে। সংশোধনের প্রয়োজন হলে ঘষামাজা বা ফ্লুইড ব্যবহার না করে, এক টান দিয়ে কেটে সংশোধন করে স্বাক্ষর দিতে হবে।
প্রতিষ্ঠানপ্রধান সংশ্লিষ্ট শিক্ষক কর্তৃক সরবরাহ করা নম্বরফর্দে প্রতি পৃষ্ঠায় স্বাক্ষর করবেন এবং তার প্রতিনিধির মাধ্যমে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের ওয়েবসাইটে অ্যাসাইনমেন্ট মার্কস এন্ট্রি প্যানেলে এন্ট্রি করবেন। এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকও উপস্থিত থেকে প্রয়োজনে এন্ট্রির কাজে সাহায্য-সহযোগিতা করবেন।
প্রত্যেক অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর এন্ট্রি পর প্রাথমিক তালিকা প্রিন্ট করে সংশ্লিষ্ট শিক্ষক পুনরায় যাচাই করে কোনো সংশোধন থাকলে লাল কালির কলম ব্যবহার করে তা সংশোধন করবেন এবং স্বাক্ষর করবেন। কোনো সংশোধন থাকলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে নিজ দায়িত্বে পুনরায় প্যানেলের মাধ্যমে সংশোধন করতে হবে।
সংশোধন শেষে ফাইনাল সাবমিট বাটনে ক্লিক করে একটি অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর এন্ট্রি কার্যক্রম শেষ করতে হবে। প্রসঙ্গত, ফাইনাল সাবমিট দেওয়ার পর আর সংশোধনের সুযোগ থাকবে না। একটি অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর এন্ট্রি শেষ হলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষককে নম্বরফর্দ ফেরত দিতে হবে।
প্রত্যকেটি অ্যাসাইনমেন্টের নম্বর এন্ট্রি শেষ হলে ফাইনাল সাবমিট করে চূড়ান্ত প্রিন্টআউট নিয়ে প্রতি পৃষ্ঠায় স্বাক্ষর করে এক কপি প্রতিষ্ঠানপ্রধান রাখবেন এবং মূল কপি সংশ্লিষ্ট শিক্ষক সংরক্ষণ করবেন।
বোর্ড থেকে যে কোনো অ্যাসাইনমেন্ট পুনর্নিরীক্ষণ বা পুনর্মূল্যায়নের জন্য চাইলে সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের কাছে সংরক্ষিত অ্যাসাইনমেন্ট এবং নম্বরফর্দের সংশ্লিষ্ট পৃষ্ঠার স্বাক্ষরিত কপি বোর্ডে নির্ধারিত সময়ে জমা দেবেন। প্রসঙ্গত, সংরক্ষিত অ্যাসাইনমেন্ট ও নম্বরফর্দ বোর্ডে জমা দেওয়ার সময় চাহিত অ্যাসাইনমেন্ট কোনো অবস্থায় পুনর্মূল্যায়ন করা যাবে না।
প্রসঙ্গত, এসএসসি পরীক্ষা শুরু হবে আগামী ১৪ নভেম্বর, শেষ হবে ২৩ নভেম্বর। এ পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে শুধু নৈর্বাচনিক বিষয়ে। অন্য আবশ্যিক বিষয়ে আগের পাবলিক পরীক্ষার সাবজেক্ট ম্যাপিং করে মূল্যায়নের মাধ্যমে নম্বর দেওয়া হবে। এ ছাড়া চতুর্থ বিষয়েরও পরীক্ষা নেওয়া হবে না। নির্ধারিত দিনে সকাল ১০টা থেকে বেলা সাড়ে ১১টা এবং দুপুর ২টা থেকে বিকেল সাড়ে ৩টা পর্যন্ত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।