বাঁচতে চায় স্কুলছাত্রী মেহজাবিন, চিকিৎসায় লাগবে ২০ লাখ টাকা  

হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে করছে মেহজাবিন
হাসপাতালের বেডে যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে করছে মেহজাবিন   © সংগৃহীত

বাঁচার অকুতি জানিয়ে বিত্তবানদের কাছে সাহায্য চেয়েছে ব্লাড ক্যান্সারে আক্রান্ত অষ্টম শ্রেণির ছাত্রী মেহজাবিন খন্দকার মাহিদা। সাভারের স্বর্ণকলি আদর্শ বিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রী মেহজাবিন ব্লাড ক্যান্সারের পাশাপাশি বোন ম্যারো সমস্যাতেও ভুগছে। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, ক্যানসারের চিকিৎসায় প্রায় ২০ লাখ টাকা লাগবে। আর বোন ম্যারো রোগের চিকিৎসা নিতে হবে ভারতে যেয়ে। সেখানেও টাকা লাগবে প্রায় ৫০ হাজার।

মেয়ের চিকিৎসার জন্য এত অর্থ জোগার করা প্রায় অসম্ভব ব্যাপার হয়ে গেছে পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম পোশাকশ্রমিক বাবা খন্দকার মারুফুর রহমানের জন্য। তাই মানবিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।

জীবিকার তাগিদে মানিকগঞ্জ থেকে সাভারে বাসা বেঁধেছেন মেহজাবিনের বাবা খন্দকার মারুফুর রহমান। সাভারের পোশাক কারখানা আল-মুসলিমে কাজ করেন। তাদের গ্রামের বাড়ি মানিকগঞ্জ জেলা সদরের কাটি গ্রামে। দুই ছেলে-মেয়েকে নিয়ে সুখেই চলছিল সংসার। কিন্তু মেয়ে মেহজাবিন হঠাৎ করেই দুরারোগ্য ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়।

মেডিকেল পরীক্ষা শেষে চিকিৎসক জানায়, মেহজাবিন বোন ম্যারো রোগে আক্রান্ত। গত ৪ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হয় তার চিকিৎসা। সেই চিকিৎসার খরচ মেটাতে গিয়ে সব জমা শেষে ধারের জন্য হাত পাততে হয় অন্যের কাছে। বিপদের ওপর আরও বিপদ আকারে আসে নতুন দুঃসংবাদ। চিকিৎসক জানায়. গত ২২ সেপ্টেম্বর নতুন করে মেহজাবিনের শরীরে ধরা পড়ে ব্ল্যাড ক্যানসার। মেয়েকে বাঁচানোর আশা ছেড়ে না দিলেও কোন কূল পাচ্ছেন না বাবা মারুফ। এমন অবস্থায় নিরুপায় হয়ে সহায়তা চেয়েছেন সমাজের বিত্তবানদের কাছে।

খন্দকার মারুফুর রহমান জানান, তার মেয়ে মেহজাবিন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেলে ভর্তি রয়েছে। দীর্ঘদিন ধরে সাভারের আড়াপাড়ার ইলিয়াস মজুমদারের বাড়িতে ভাড়া থেকে পোশাক কারখানায় চাকরি করছেন তিনি। ইচ্ছা ছিল গার্মেন্টসে কাজ করলেও সন্তানকে লেখাপড়া শিখিয়ে বড় মানুষ করবেন। কিন্তু এখন চিকিৎসা করতেই তার যা ছিল সব শেষ হয়ে গেছে।

বাঁচার জন্য মেয়ের আকুঁতির কথা জানিয়ে তিনি বলেন, মেয়েটা যন্ত্রণায় ছটফট করে। বলে বাবা আমি বাঁচবো তো? কিন্তু বাবা হয়ে ডুকরে কাঁদা ছাড়া আর কিছুই করার নেই। তবুও মিথ্যা আশ্বাস দেই। মা তুমি বেঁচে থাকবে, আবার স্কুলে যাবে। ডাক্তার বলেছে ব্ল্যাড ক্যানসারের জন্য ১৫-২০ লাখ টাকা লাগবে। আর বোন ম্যারো রোগের চিকিৎসা নিতে যেতে হবে ভারতে। কিন্তু সেখানেও টাকা লাগবে ৪০-৫০ হাজার। এত টাকা আমি কি করে সংগ্রহ করব? হয়তো শেষ পর্যন্ত মেয়েটার সুচিকিৎসা করাতে পারব না। এমন করেই ধুকে ধুকে মরবে মেয়েটা। 

খন্দকার মারুফুর বলেন, রোগব্যাধি কখন কাকে আক্রমণ করবে তা কেউ বলতে পারবে না। আমার ছোট্ট মেয়েটা যত কষ্ট পাচ্ছে আল্লাহ্ যেন অন্য কাউকে এই কষ্ট না দেয়। আল্লাহর কাছে দোয়া করা ছাড়া আর কিছু করার ক্ষমতা নেই আমার। ব্যর্থ বাবাটার মেয়ের চিকিৎসার জন্য মানবিক সহযোগিতা পেলে একটু হলেও শান্তি পেতাম।

মেহজাবিন বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের তৃতীয় তলার ডি-ব্লকে চিকিৎসাধীন রয়েছে। মেহজাবিনকে বাঁচাতে অনেকেই সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। কিন্তু তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। তাই মানবিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন মেহজাবিনের পরিবার। সংকোচ ভুলে মেয়েকে বাঁচাতে এই সাহায্যের আবেদন করেন তিনি।

মেহজাবিনের বাবা বলছেন, গার্মেন্টসের কোনো ফান্ড, সরকার কিংবা কোনো সংস্থা সহযোগিতা করলেই আমার মেয়েটার কষ্ট লাঘব হতো। স্কুলছাত্রী মেহজাবিনকে কেউ সাহায্য করতে চাইলে এই নম্বরে ০১৭০৩২২২৪২৫ বিকাশ করতে পারবেন


সর্বশেষ সংবাদ