অনলাইন ক্লাসে বাজলো ‘নাগিন ড্যান্স’, শিক্ষককে দুষলেন অভিভাবকরা
ভার্চুয়াল মিটিং প্লাটফর্ম জুম-এ চলছিল ছাত্রীদের অনলাইন ক্লাস। কিন্তু হঠাৎই অজ্ঞাত এক ব্যক্তি মিটিংয়ে প্রবেশ করে স্ক্রিনে ছেড়ে দেয় হিন্দি ‘নাগিন’ গানের নাচ, দেখায় আপত্তিকর ছবিও। মুহুর্তেই সব ছাত্রী, অভিভাবক আর শিক্ষক হন বিব্রত আর আতঙ্কিত। কিছু বুঝে না উঠতে পেরে মিটিংয়ের অ্যাডমিন ও ক্লাসের শিক্ষক অজ্ঞাত ওই ব্যক্তিকে ব্লক করে দেয়। কিন্তু বিদায় হবার আগে সে বলে যায়- ‘পারলে আমায় ধরেন।’
গত ২০ সেপ্টেম্বর (সোমবার) বিব্রতকর ও অনাহুত এই ঘটনাটি ঘটেছে বগুড়ার বিয়াম মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের সপ্তম শ্রেণির ‘চ’ শাখার ছাত্রীদের গণিত বিষয়ের অনলাইন ক্লাসে।
জানা যায়, ওই ক্লাসে মোট ৩৫ জন ছাত্রী ছিল। অ্যাডমিন ছিলেন, স্কুলের গণিত বিভাগের শিক্ষক সাকিব হাসান। ক্লাস শুরুর পরপরই অজ্ঞাত কেউ ক্লাসে ঢুকে প্রথমে ‘নাগিন নাচ’ এরপর দুই বার আপত্তিকর ছবি দেখায়। এ সময় ছাত্রী ও পাশে থাকা বাবা-মা বিব্রত হয়ে ক্লাস থেকে বের হয়ে যায়। ছাত্রীরা চিৎকার করে শিক্ষক সাকিব হাসানের দৃষ্টি আকর্ষণ করলে তিনি ওই অজ্ঞাতকে ব্লক করে দেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রীর মা বলেন, শিক্ষার্থীরা অনলাইন ক্লাসে প্রবেশ করলে তাদের নাম ও রোল দেখায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে অনলাইন ক্লাসের ক্ষেত্রে অ্যাডমিনের অনুমতি নিয়ে ক্লাসে ঢুকার ব্যবস্থা রাখা হয়। তাহলে অন্য ব্যক্তি কীভাবে ক্লাসে ঢুকে অশ্লীল ছবি দেখাল?
ওই ক্লাসের ছাত্রী ও তাদের অভিভবকরা বলছেন, এমন ঘটনা আগেও হয়েছে। স্কুলের শিক্ষকদের অনলাইন ক্লাসের প্রযুক্তি সম্পর্কে ভালো ধারণা না থাকায় এমন ঘটনা ঘটেছে বলে তাদের অভিযোগ। ওই গণিত ক্লাসের শিক্ষককেও সন্দেহের চোখে দেখছেন তারা। কারণ, এ ঘটনার পরে শিক্ষক সাকিব হাসান বিষয়টি অধ্যক্ষকে অবহিত করেননি কিংবা আইনের আশ্রয়ও নেননি। তারা বলছেন, এমন অনভিজ্ঞ শিক্ষক দিয়ে জুমে ক্লাস করানো ঠিক হয়নি।
এ ঘটনার পর থেকে শিক্ষার্থীরা ক্লাসে অংশ নিতে আর সাহস পাচ্ছেন না। আর অভিভাবকরা এ বিষয়ে প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করে বলেন, এমন ঘটনা আবার ঘটলে সন্তানদের অনলাইন ক্লাসে পাঠাবেন না।
এ বিষয়ে জানতে শিক্ষক সাকিব হাসানের সাথে যোগাযোগ করতে চাইলে তাকে ফোনে পাওয়া যায়নি। তবে প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ মুহা. মুস্তাফিজার রহমান জানান, সংশ্লিষ্ট শিক্ষকের সঙ্গে কথা বলে তিনি বিষয়টা জেনেছেন। এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন তারা।
জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা হযরত আলী বলেন, এমন ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এ বিষয়ে রোববার (২৬ সেপ্টেম্বর) প্রতিষ্ঠান প্রধানের সঙ্গে কথা বলবো। এখানে কারও গাফিলতি পেলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।