রাজশাহীতে প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ
- টিডিসি রিপোর্ট
- প্রকাশ: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:০৭ PM , আপডেট: ২৩ সেপ্টেম্বর ২০২১, ০৫:০৭ PM
রাজশাহীর গোদাগাড়ী উপজেলার মাটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা মোসা. ইসমত আরার বিরুদ্ধে স্কুলের সরকারি বই বিক্রির অভিযোগ উঠেছে।
বই বিক্রির ঘটনায় ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছে স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সাদিকুল ইসলাম। আর ইসমত আবার দাবি, তিনি মৌখিক অনুমতি নিয়েই বই বিক্রি করেছেন।
তবে সরকারি নিয়মে বই বিক্রি করা নিষিদ্ধ জানিয়ে জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিস বলছে, অভিযোগ প্রমাণ হলে প্রধান শিক্ষিকাকে বরখাস্ত করা হবে।
অভিযোগের বিষয়ে জানা গেছে, গত ১৫ সেপ্টেম্বর সকালে স্কুলের পরিচ্ছন্নতাকর্মী শরিফুল ইসলাম পিয়ন রাসেলকে ২০ বস্তা বই ভ্যানে করে অন্যত্র নিয়ে যেতে দেখেন। এ সময় শরিফুল জানতে চাইলে রাসেল জানায়, প্রধান শিক্ষিকা বইগুলো তিনি বিক্রি করে দিয়েছেন এবং তাকে বইয়ের বস্তাগুলো ভ্যানে তুলে দিতে বলেছেন। একই দিন সন্ধ্যায় পিয়ন রাসেল আবারও পাঁচটি ভ্যানে করে বইয়ের বস্তা বাইরে নিয়ে যায়। স্কুলের নৈশপ্রহরী রবিউল ইসলাম সে সময় ডিউটিতে ছিলেন।
এ ঘটনায় ওই প্রধান শিক্ষিকার বিরুদ্ধে গত ১৯ সেপ্টেম্বর গোদাগাড়ী উপজেলা নির্বাহী অফিসার, গোদাগাড়ী উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা এবং রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন মাটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য সাদিকুল ইসলাম।
রাজশাহী জেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার নাসির উদ্দিন জানান, সরকারি নিয়মে বই বিক্রি করা নিষিদ্ধ। কোনো স্কুলে শিক্ষার্থীদের মাঝে বিতরণের পর বই অবশিষ্ট থাকলে প্রধান শিক্ষককে সংশ্লিষ্ট মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে চিঠি দিয়ে বইয়ের সংখ্যা জানাতে হবে। শিক্ষা কর্মকর্তা যথাযথ মাধ্যমে শিক্ষা অধিদপ্তরকে বিষয়টি জানাবেন। অধিদপ্তর তারপর বিক্রির অনুমতি দিলে উপজেলা মাধ্যমিক কর্মকর্তাকে প্রধান করে নিলাম কমিটি গঠন করতে হবে। কমিটি উন্মুক্ত নিলামে প্রতিযোগিতামূলক দরে বই বিক্রি করতে পারবেন। বিক্রির সেই টাকা সরকারি কোষাগারে জমা দিতে হবে। কিন্তু কোনো প্রধান শিক্ষক কোনোভাবেই নিজে বই বিক্রি করতে পারবেন না, সেটি গোপনে হোক বা প্রকাশ্যে।
স্কুল ম্যানেজিং কমিটির কয়েকজন সদস্য জানান, বছর তিনেক আগে প্রধান শিক্ষিক হিসেবে নিয়োগ পান ইসমত আরা। তার পরপরই স্কুলের বিদ্যমান শিক্ষার্থীর সংখ্যা দ্বিগুণ দেখিয়ে বছরে দ্বিগুণ বই উত্তোলন করে আসছেন তিনি। সেখান থেকে শিক্ষার্থীদের মাঝে অর্ধেক বই বিতরণ করে বাকি বই নিজে বিক্রি করে দেন ইসমত আরা।
স্কুলের বই বিক্রির বিষয়ে শিক্ষা কর্মকর্তা নাসির উদ্দিন বলেন, প্রধান শিক্ষিকা সরকারি বই বিক্রি করে দিয়ে থাকলে অপরাধ করেছেন। বিষয়টি তদন্ত হচ্ছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে তাকে তাৎক্ষণিকভাবে বরখাস্তের নির্দেশ রয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে মাটিকাটা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ইসমত আরা জানান, বই বিক্রির বিষয়ে তিনি উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন। মৌখিক অনুমতি নিয়েই তিনি বই বিক্রি করেছেন।
তবে এ বিষয়ে এখনও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।