পলিটেকনিক শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরতে বললেন কারিগরি সচিব

  © টিডিসি ফটো

সম্প্রতি সেশনজট নিরসনসহ ৪ দফা দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ করে পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা যে আন্দোলন করছেন, সেসব দাবির ব্যাখ্যা দিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান।

তিনি বলেন, এসব দাবি নিয়ে শিক্ষার্থীদের রাজপথে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করা মোটেও সমীচীন ও নৈতিক নয়। আমি বিশ্বাস করি তারা ঘরে ফিরে আসবে। তাদের পরীক্ষার সিডিউল হচ্ছে এবং যথা নিয়মে শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষায় অংগ্রহণ করবে।

রবিবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুর সাড়ে ১২টায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্যে করেন তিনি।

সচিব বলেন, আশা করি তারা ফরে ফিরে আসবে। আর যদি তাদের অপতৎপরতা অব্যাহত রাখে তাহেল ধরে নেব শিক্ষার বাইরেও তাদের অন্যকোন উদ্দেশ্য রয়েছে। একটা অস্থিতিশীলতা, বিভ্রান্তি এগুলো সৃষ্টি করা তাদের একটা অপচেষ্টা রয়েছে।

সম্প্রতি ৪ দফা দাবিতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় সড়ক অবরোধ করেন পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা। তাদের দাবিগুলো হলো— সেশনজট নিরসন করা; দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ৬ষ্ঠ পর্বের তাত্ত্বীক পরীক্ষায় অটোপাস এবং প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম পর্বের ক্লাস চালু করে শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া; অতিরিক্ত ফি প্রত্যাহার এবং প্রাইভেট পলিটেকনিকে সেমিস্টার ফি অর্ধেক করা এবং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের জন্য আসন বরাদ্দ করা।

শিক্ষার্থীরা জানান, তারা সেশনজটের শিকার হচ্ছেন। প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের কাছ থেকে ফি আদায় করছে। এসব কারণে তাদের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। সমস্যা সমাধানে কর্তৃপক্ষের দৃষ্টিগোচর করতেই সড়ক অবরোধ কর্মসূচি পালন করেছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে সচিব মো. আমিনুল ইসলাম খান বলেন, সম্প্রতি পলিটেকনিক শিক্ষার্থীরা নানান বিশৃঙ্খলা কার্যকলাপে লিপ্ত হয়েছে। এটা অযৌক্ত এবং সাধারণ জনগণকে তারা বিভ্রান্ত করছে। যা আমাদের কাছে কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়।

তাদের ৪ দফা দাবি নিয়ে বলতে গেলে— প্রথমত তারা বলছে, ১ বছরের সেশনজট নিরসন করতে হবে। সেক্ষেত্রে আমরা সিলেবাস রি-ডিজাইন করে ৬ মাসের সেমিস্টার ৪ মাস করেছি। সেটি ৬ সেমিস্টার করে ২ বছরে শেষ হবে। সেক্ষেত্রে ১ বছেরের সেশনজট আর থাকবে না।

দ্বিতীয়ত—  দ্বিতীয়, চতুর্থ ও ৬ষ্ঠ পর্বের তাত্ত্বীক পরীক্ষায় অটোপাস এবং প্রথম, তৃতীয়, পঞ্চম ও সপ্তম পর্বের ক্লাস চালু করে শর্ট সিলেবাসে পরীক্ষা নেওয়া। আমরা আগেই বলেছি এটার অটোপাস দেওয়া সম্ভব নয়। এতে আমরা পরীক্ষার রি-ডিজাইন করেছি।

তৃতীয়ত— অতিরিক্ত ফি প্রত্যাহার ও প্রাইভেট প্রাইভেট পলিটেকনিকের সেমিস্টার ফি প্রত্যাহার। আপনারা জানেন যে, এ নিয়ে আমরা বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি— সরকারি পলিটেকনিকে টিউশন-পরীক্ষা ফি ছাড়া বাকিগুলো ওয়েব করেছি। আর প্রাইভেটগুলোকেও অনুরোধ করেছি তারাও এসব ফি যতটুকু পারে মওকুপ করতে। তবে প্রাইভেট প্রতিষ্ঠানের ব্যয় একটু বেশি। তারপরও তারা সম্মত হয়েছে কোন ছাত্র যাতে বঞ্চিত না হয় সেটি দেখবে। অতিরিক্ত কোন ফি নেওয়া হবে না।

চতুর্থত— সকল প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের জন্য আসন বরাদ্দ করা। গাজীপুরের ডুয়েটে কারিগরি শিক্ষার্থীদের জন্য সেখানে ডিপ্লোমা করা পর ভর্তি সুযোগ রয়েছে। এছাড়াও আমরা ৪ জেলায় ৪টি সরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ করা হবে। সেখানে এসব শিক্ষার্থী থেকে ৫০ শাতংশ এবং বাকি ৫০ সরাসরি ভর্তির সুযোগ পাবে। এসব বুয়েটের তত্ত্বাবধানে এটা করা হবে। এরফলে প্রচুর সংখ্যা ডিপ্লেমা পাস করা শিক্ষার্থী বিএসসি ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে পড়ার সুযোগ পারে। সেই বিষয়টিও সরকারের মনোযোগে আছে।


সর্বশেষ সংবাদ