এসএসসি পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভ

প্রতীকী
প্রতীকী

করোনাভাইরাসের মধ্যে ২০২১ সালের এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করেছে শিক্ষার্থী। ‘করোনার মধ্যে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা নয়’ ব্যানারে আগামী শুক্রবার (১৩ নভেম্বর) সারা দেশব্যাপী পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে এ কর্মসূচি পালিত হবে। বিষয়টি নিয়ে পরীক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে ফেসবুক গ্রুপের মাধ্যমে ভার্চুয়ালি জড়ো হচ্ছেন।

মঙ্গলবার দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সিরাজগঞ্জ রোড চৌরাস্তা উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ও ফেসবুক গ্রুপের এডমিন তানভীর আহমেদ হৃদয়। তিনি বলেন, করোনার মধ্যে এসএসসি ও দাখিল পরীক্ষা বাতিলের দাবিতে আগামী শুক্রবার সারাদেশে শান্তিপূর্ণ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হবে। রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে সকাল ১১টায় এ কর্মসূচির উদ্বোধন করা হবে।

তানভীর বলেন, আমরা করোনাভাইরাসের মধ্যে পরীক্ষা দিতে চাই না। করোনার ভয় যতদিন আছে ততদিন আমাদের এ একটাই দাবি থাকবে। তারপরও যদি আমাদের পরীক্ষা নিতেই হয়; তাহলে যেন ক্লাস নাইনে আমাদের যে সিলেবাস ছিল তার উপর প্রশ্ন করা হয়। কারণ আমরা ক্লাস টেনে গিয়ে কোন ক্লাস পাইনি। সুতরাং সে সিলেবাসের প্রশ্ন আমাদের সঙ্গে যাবে না।

এর আগেও গত বৃহস্পতিবার (০৫ নভেম্বর) একই দাবিতে রাজধানীসহ দেশের একাধিক জেলায় মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালিত হয়েছে। কর্মসূচি থেকে পরীক্ষার্থীরা ৬টি লিখিত দাবি জানিয়েছেন।

দাবিগুলো হল-

১. করোনা ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত স্কুল খোলা যাবে না।
২. করোনা চলাকালীন কোনো ধরনের পরীক্ষা (স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষা, টেস্ট পরীক্ষা ও এসএসসি পরীক্ষা) নেওয়া যাবে না।

৩. আমাদের স্কুল কার্যক্রম ৮ মাস বন্ধ ছিলো, তাই এই ৮ মাসের ক্ষতিপূরণ হিসাবে আমাদের এসএসসি পরীক্ষা ৮ মাস পেছাতে হবে।

৪. পরীক্ষার ৮ মাস পেছানো হলে তার জন্য সেশন জট সৃষ্টি হবে, এর ফলে আমাদের জীবন থেকে পরবর্তী ১ বছর শেষ হয়ে যাবে। তাই আমাদের এই সেশন জটের ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।

৫. যদি উপোরোক্ত দাবি না মেনে জোরপূর্বকভাবে করোনা চলাকালীন সময়ে এসএসসি পরীক্ষা নেওয়া হয় এবং পরীক্ষা চলাকালীন সময়ে যদি কেউ কভিড-১৯ পজিটিভ হয়, তাহলে সেই ছাত্রের দায়ভার সরকারকে নিতে হবে।

৬. যদি এসএসসি পরীক্ষা না নেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়, তাহলে আমাদের পিএসসি ও জেএসসি পরীক্ষার রেজাল্টের উপর ভিত্তি করে অটোপ্রমোশন দিতে হবে।

শিক্ষার্থীরা জানান, তারা কোনোভাবেই করোনা চলাকালীন সময়ে এবং করোনার ভ্যাকসিন না আসা পর্যন্ত পরীক্ষা দিতে এবং স্কুল যেতে রাজি নয়। বোর্ড পরীক্ষার থেকে তাদের জীবন অনেক মূল্যবান। তাই তারা এইচএসসির মত তাদেরও অটোপ্রমোশন দেয়ার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছেন।

জাহিদ আহমেদ নামে এক এসএসসি পরীক্ষার্থী তাদের দাবির বিষয়ে জানান, আমাদের জন্যেও অটোপাসের সিদ্ধান্ত দেয়া হোক। কারণ আমরা শুধুমাত্র ক্লাস ৯-এ ক্লাস করার সুযোগ পেয়েছি। তারপর ক্লাস ১০-এর প্রথম দিকেই করোনার জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে যায়। এর মাধ্যমে আমাদের পড়ালেখায় খারাপ প্রভাব পড়েছে।

জাহিদ বলেন, এই পরিস্থিতিতে আমাদের পড়ালেখা চালিয়ে যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। এছাড়াও অনলাইন ক্লাস থেকে অর্ধেকের বেশি শিক্ষার্থীই বঞ্চিত ছিল। এর জন্য আমাদের পাঠদান অসম্পূর্ণ থেকে যায়। তাছাড়া সামনে শীতে করোনার প্রকোপ বৃদ্ধির আশঙ্কা রয়েছে। সবমিলিয়ে আমরা পরীক্ষার জন্য আমরা প্রস্তুতি নিতে পারিনি।


সর্বশেষ সংবাদ