অটো প্রমোশন চান এসএসসি পরীক্ষার্থীরাও

পরীক্ষার্থীরা
পরীক্ষার্থীরা  © ফাইল ফটো

আগামী বছর ফেব্রুয়ারিতে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবার কথা। তবে করোনা পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হলে এই পরীক্ষা ঠিক সময়ে হওয়া নিয়েও রয়েছে সংশয়। এই পরিস্থিতি পরীক্ষার্থীরা অটোপাসের দাবি তুলেছেন। এইচএসসি পরীক্ষা বাতিলের ঘোষণায় এই দাবি আরও জোরেশোরে উঠেছে। অন্যদিকে এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে আগাম মন্তব্য করতে রাজি নয় বোর্ডগুলো।

শিক্ষার্থীদের মতে, করোনার কারণে গত মার্চ থেকে সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রয়েছে। ফলে তখন থেকেই তাদের ক্লাস-পরীক্ষা সব থমকে যায়। এছাড়া রয়েছে কোচিং এবং প্রাইভেট বন্ধ থাকায় তারা দীর্ঘদিন ধরে পড়ালেখার বাইরে রয়েছে। ফলে নিজেদের পরীক্ষার জন্য সেভাবে প্রস্তত করতে পারেনি। এছাড়া এখনো তাদের মূল্যায়ন পরীক্ষাও অনুষ্ঠিত হয়নি। টেস্ট পরীক্ষার পর একজন পরীক্ষার্থী নিজেদের ঘাটতি সম্পর্কে জানে এবং নিজেকে প্রস্তুত করতে তিনমাস সময় পায়। তবে তাদের সেই সুযোগ এবার থাকছে না বলেই অভিমত তাদের।

তারা বলছেন, ফেব্রুয়ারিতে হয়তো করোনা চলে যাবে, পরীক্ষার হলেও বসার পরিবেশ তৈরি হবে। কিন্তু গত প্রায় এক বছর ক্লাস করতে না পারায় যে ক্ষতি হয়েছে; সেটা কীভাবে পূরণ হবে? এই অবস্থায় পরীক্ষা না নিয়ে অটোপসাই একমাত্র উপায় বলে মনে করছেন ছাত্র-ছাত্রীরা। কেননা তারাহুরো করতে গেলে শিক্ষার্থীদের উপর এর বিরূপ প্রভাব পড়ার সঙ্কা রয়েছে।

এদিকে পরীক্ষা না নেয়ার দাবির পক্ষে সমর্থন জোগাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে ‘এসএসসি ব্যাচ-২১’ নামে একটি গ্রুপও খোলা হয়েছে। এই গ্রুপে শিক্ষার্থীরা তাদের নিজেদের মতামত শেয়ার করছেন। দেখাচ্ছেন অটোপাসের পক্ষে বিভিন্ন যুক্তিও। গ্রুপে প্রায় এক লাখ ২০ হাজার মেম্বার। যার অধিকাংশই এসএসসিতে অটোপাসের পক্ষে মত দিয়েছেন।

এ বিষয়ে ভিকারুননিসা নূন স্কুল এন্ড কলেজের ধানন্ডি শাখার ছাত্রী ও এসএসসি পরীক্ষার্থী মারশিয়া কবির জানান, করোনার কারণে আমরা কেউই নিজেদের প্রস্তুত করতে পারিনি। ফেব্রুয়ারিতে আমাদের পরীক্ষা হবার কথা। তবে বিষয়টি নিয়ে কোনো মহল থেকে কোনো বক্তব্য না আসায় আমরা চিন্তিত। তাই এখনই যদি এসএসসি হবে কিনা জানা যায় তাহলে শিক্ষার্থীদের অনেক উপকার হবে। পরীক্ষা আমাদের হাতে সময় আছে আর মাত্র ৩ মাস। এর মধ্যে আমাদের টেস্ট পরীক্ষাও দিতে হবে। এই বিষয়গুলো দ্রুত করতে গেলে শিক্ষার্থীরাই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। তাই পরীক্ষা বাতিল করে অটোপাস দেওয়া উচিৎ।

মোহাম্মদপুরের ন্যাশনাল প্রি-ক্যাডেট এন্ড হাই স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতে যাওয়া আব্দুর রাজ্জাক জানান, করোনার প্রকোপ শুরুর পর থেকে আমরা ঘরবন্দী, ক্লাস-পরীক্ষা কোনও কিছুই দিতে পারিনি। এই অবস্থায় আমরা পরীক্ষা দিতে চাই। সব কিছু স্বাভাবিক হলেও আমাদের প্রস্তুতির জন্য অন্ত ছয় মাস প্রয়োজন। তাই সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনায় আমাদের অটোপাস দেয়া হোক।

তবে এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে এখনই কোনো মন্তব্য করতে রাজি হয়নি শিক্ষা বোর্ড চেয়ারম্যানরা। তারা বলছেন, এখন সবাই এইচএসসি পরীক্ষার ফলাফল নিয়ে ব্যস্ত। উচ্চ মাধ্যমিকের ফল প্রকাশ হয়ে গেলে তখন বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করা যাবে।

এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বরিশাল শিক্ষাবোর্ডর চেয়ারম্যান শনিবার (১০ অক্টোবর) দুপুরে দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, আমরা আগাম কোনো কিছু নিয়ে কথা বলতে চাই না। এসএসসি পরীক্ষার সময় করোনার পরিস্থিতি কোন দিকে যাবে সেটি আমরা কেউই বলতে পারছি না। তাই এই বিষয়ে এখনি মন্তব্য করাটা সমীচীন হবে না। আগে এইচএসসি পরীক্ষার ফল প্রকাশ হবে ডিসেম্বরে। 

দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডর চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. আবু বক্কর সিদ্দিক দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে বলেন, এসএসসি পরীক্ষা নিয়ে এখনো আলোচনার সময় হয়নি। পরিস্থিতি কোন দিকে যায় আমাদের সেটি আগে দেখতে হবে। তাই এখনি এই বিষয়ে আগাম কিছু বলতে পারছি না। তবে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিয়ে রাখা উচিৎ বলে মনে করেন এই বোর্ড চেয়ারম্যান।


সর্বশেষ সংবাদ