খরচ চালাতে ছাগল চরাতে হয়েছে জিপিএ-৫ পাওয়া ফারহানার
এবার এসএসসি পরীক্ষায় ছাতনী উচ্চবিদ্যালয় থেকে জিপিএ-৫ পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে ফারহানা রহমান। নাটোর সদর উপজেলার ছাতনী গ্রামের লুৎফর রহমানের মেয়ে সে। তবে মেধার স্বীকৃতি অর্জনের পথ তার জন্য মোটেও সহজ ছিল না। খরচ চালাতে রীতিমত সংগ্রাম করতে হয়েছে তাকে।
ফারহানা জানায়, পড়ালেখার জন্য অনেক কষ্ট করতেও রাজি সে। ছাগল নিয়ে যখন মাঠে যেত, তখনো তাঁর হাতে থাকত বই। স্থানীয় কলেজে ভর্তি হয়ে উচ্চমাধ্যমিকে আরও ভালো করতে চায় ফারহানা।
ফারহানার বাবা লুৎফর রহমান পেশায় দিনমজুর হলেও শারীরিক দুর্বলতার কারণে সব সময় কাজে যেতে পারেন না। দুই মেয়েসহ চার সদস্যের পরিবারের খাবার জোগাতেই তিনি হিমশিম খান। মা আকলিমা বেগম মেয়েদের পড়ালেখার খরচ জোগাতে ছাগল পালন শুরু করেন।
কিন্তু খাবার কিনে ছাগল পালন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না তাঁর। বাধ্য হয়ে পড়ালেখার ফাঁকে ফাঁকে ফারহানা ছাগল নিয়ে মাঠে চলে যায়। তবু নিয়মিত ক্লাস করে যায় ফারহানা। সব বিষয়ে প্রাইভেট পড়ার সুযোগ হয়নি। স্কুলের এন্তাজ স্যার ইংরেজি বিষয়ে আংশিক খরচায় প্রাইভেট পড়িয়েছেন।
ফারহানার বাবা লুৎফর রহমান জানান, মেয়ের সব বই কেনার মতো সামর্থ্যও তাঁর নেই। তাই সহপাঠী ও শিক্ষকদের কাছ থেকে বই ধার করে এনে বাড়িতে পড়ত। শত কষ্ট করে হলেও তিনি দুই মেয়েকে উচ্চশিক্ষিত করতে চান।
তার স্কুলের প্রধান শিক্ষক নারায়ণ চন্দ্র বলেন, ফারহানা বাড়িতে ছাগল চরানোর পরও কখনো ক্লাস ফাঁকি দিত না। শুধু পড়ালেখা করতে পারলে সে আরও ভালো ফল করত।