মাধ্যমিকের পাঠ্যবইয়ে শতাধিক ভুল বের করল শিক্ষার্থীরা!

গত এক দশক ধরেই সরকারের বিনামূল্যের ‘বই উৎসব’ দেশজুড়ে সারা ফেলেছে
গত এক দশক ধরেই সরকারের বিনামূল্যের ‘বই উৎসব’ দেশজুড়ে সারা ফেলেছে  © ফাইল ছবি

বছরের প্রথম দিন মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে তুলে দেয়া বিনামূল্যের বই নিয়ে নতুন বিতর্ক শুরু হয়েছে। মাধ্যমিক লেভেলের এই পাঠ্যবই থেকে ভুল বের করেছে বলে দাবি করেছেন নেত্রকোনা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির পাঠ্যবইয়ে অন্তত তিন শতাধিক ভুল পেয়েছে বলে জানিয়েছেন তারা।

এর আগে ১ জানুয়ারি নেত্রকোনার ওই স্কুলটিতে নতুন বই বিতরণকালে জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম ঘোষণা দিয়েছিলেন, ‘কেউ যদি নতুন বইয়ে ভুল বের করতে পারে, তবে তাকে পুরস্কার দেওয়া হবে।’ প্রত্যেক শ্রেণিতে তিনজনকে সবচেয়ে বেশি ভুল ধরার জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হবে বলে জানিয়েছিলেন তিনি।

মূলত জেলা প্রশাসকের পুরস্কার ঘোষণা ও এটাকে চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করেই মাধ্যমিকের বইয়ে তিন শতাধিক ভুল বের করা হয়েছে বলে দাবি নেত্রকোনা আদর্শ বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের বালিকাদের। 

বিদ্যালয়টির সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী নুসরাত জাহান বলেন, ‘গত এক মাসে পাঠ্যবই থেকে ৬৫টি শব্দের বানান ভুল পেয়েছি। এই ভুলগুলো আমাদের ভুলই শেখাবে এবং সঠিকটা শেখার পথে বাধা হবে। এই ভুলকে সঠিক জ্ঞান অর্জনের ক্ষেত্রে বাধা হিসেবে উল্লেখ করেন ওই ছাত্রী একইভাবে স্কুলটির ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে নবম শ্রেণির ১৬ জন শিক্ষার্থী জীববিজ্ঞান, রসায়ন, ধর্মসহ তাদের সবগুলো পাঠ্যবই থেকে অসংখ্য ভুল খুঁজে বের করেছে। এদের মধ্যে কেউ ভুল পেয়েছে ৩৯টি, কেউ পেয়েছে ৪৬টি, আবার কেউ ৩০টি।

এর আগের প্রাথমিকের বই নিয়ে নানা বিতর্ক হয়েছে

ওই বিদ্যালয়ের শ্রেণিশিক্ষক তমা রায় বলেন, ‘পাঠ্যবইয়ে থাকা এসব ভুলের কারণে শিক্ষার্থীরাও ভুল শিক্ষা অর্জন করবে। তাই এই ভুলগুলো দ্রুত সংশোধন হওয়া দরকার। তাছাড়া আগামীতে পাঠ্যবই ছাপানোর সময় আরও সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।’

বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক লুৎফুর হায়দার ফকির বলেন, শিক্ষার্থীদের পাঠ্যবই পড়ায় মনযোগী করতে জেলা প্রশাসক মঈনউল ইসলাম বই উৎসবের দিন পাঠ্যবই থেকে ভুল ধরার প্রতিযোগিতায় পুরস্কারের ঘোষণা দেন। তার প্রেক্ষিতেই শিক্ষার্থীরা এই ভুল বের করেছে।  স্কুলের পাঠ্যবইয়ে থাকা ভুলগুলো সংশোধন করে দ্রুত সংশ্লিষ্ঠ কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে। পাঠ্যবইয়ে এই ভুলগুলো দ্রুত সংশোধন হওয়া প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। খবর-ইউএনবি

এর আগে প্রাথমিকের বইয়ে লিঙ্গবৈষম্য আলামত পাওয়া যায়; যা নিয়ে তুমুল বিতর্ক উঠে দেশজুড়ে। ওই সময় কবিতার বিকৃতি এবং নানা ভুলের ছাড়াছড়ি দেখা যায়। সে সময় অবশ্য জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)-এর চেয়ারম্যান অধ্যাপক নায়ায়ণ চন্দ্র সংবাদ মাধ্যমকে বলেছিলেন, ‘‘প্রতি বছর এ ধরনের কিছু ভুল হয়৷ পরে বিশেষজ্ঞ কমিটি এগুলো সংশোধন করে৷ এবারও ভুল জমা হওয়ার পর কমিটি এগুলো সংশোধন করে পরবর্তী বছর ছাপানোর সময় ঠিক করে দেবে।’’


সর্বশেষ সংবাদ