ঐতিহ্যবাহী স্কুলের বেহাল দশা, ভেঙে পড়তে পারে যেকোনো সময়
- বরগুনা প্রতিনিধি
- প্রকাশ: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:২৮ PM , আপডেট: ১১ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৫:০৬ PM
বরগুনা সদর উপজেলার ঢলুয়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী নলী মুসলিম মাধ্যমিক বিদ্যালয়টি ১৯৩৬ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। প্রতিষ্ঠার প্রায় ৯০ বছর অতিক্রম করলেও এখন পর্যন্ত অবকাঠামোগত উন্নয়ন থেকে বঞ্চিত বিদ্যালয়টি। ক্লাসরুম সংকটের কারণে শিক্ষার্থীরা অতিরিক্ত কষ্টে পড়ালেখা করছেন।
এদিকে সেমি-পাকা দেওয়াল আর ফাটল ধরা ছাদ নিয়ে ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। স্থান সংকুলান না হওয়ায় শিক্ষার্থীরা বাধ্য হয়ে বারান্দায় বসে ক্লাস করছেন। পুরোনো ভবনের দুর্বল অবস্থার কারণে যেকোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটার আশঙ্কা রয়েছে।
এই বিষয়ে দশম শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী লামিয়া বলেন, ‘আমাদের স্কুলটি অনেক পুরানো হলেও আমাদের স্কুলে কোনো ভালো ভবন নেই। আমাদের ক্লাস করতে খুবই কষ্ট হয়।’ তিনি আরও জানান যে, ‘কম্পিউটার ল্যাব ও বিজ্ঞানাগারের জন্য আলাদা কোন রুম না থাকায় আমরা সেগুলো ব্যবহার করতে পারছি না।’
আরেক শিক্ষার্থী সামিরা জাহান, দশম শ্রেণির মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী, জানান, ‘স্কুলের ভবন পুরাতন হওয়ায় অনেক জায়গায় ফাটল ধরেছে। মাঝে মাঝে ক্লাস চলাকালীন সময়ে ছাদের টিন ভেঙে মাথার ওপর পড়ে।’ তিনি আরও বলেন, ‘বৃষ্টির দিনে ছাদ থেকে পানি পড়ে এবং শ্রেণীকক্ষে বসে থাকাটা অত্যন্ত বিপজ্জনক।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মতিয়ার রহমান বলেন, ‘আমাদের বিদ্যালয়ের ভবনগুলোর বেশিরভাগ জায়গায় ফাটল ধরেছে। বৃষ্টির দিনে ছাদ থেকে পানি পড়ে, ফলে শ্রেণীকক্ষে শিক্ষার্থীদের বই ও খাতা ভিজে যায়।’ তিনি জানান যে, ‘এই বিদ্যালয়ে আধুনিক শ্রেণীকক্ষে পাঠদান করা সম্ভব হচ্ছে না, কারণ আমাদের কাছে পর্যাপ্ত শ্রেণীকক্ষ নেই।’
এছাড়া বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ জুবায়ের ও মঈন বলেন, ‘স্কুলের অবস্থা এত খারাপ যে, বৃষ্টির দিনে ছাতা নিয়ে আসতে হয়। অনেক সময় ছাদ থেকে বালু সিমেন্ট পড়ে।’ তাঁরা সরকারের কাছে একটি নতুন ভবনের জন্য দাবি জানান।
বিদ্যালয়ের অভিভাবকরা বলেন, ‘এই বিদ্যালয়টি উপকূলীয় এলাকায় শিক্ষার আলো পৌঁছানোর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু অবকাঠামোগত কোনো উন্নয়ন না হওয়ায়, আমাদের সন্তানদের নিরাপত্তা নিয়ে আমরা চিন্তিত।’
এই বিদ্যালয়ের ৫ তলা বিশিষ্ট নতুন ভবনের দাবি উত্থাপন করা হলেও, এখন পর্যন্ত কোনো কার্যকরী উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। বিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা সরকারের কাছে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য আবেদন করছেন।