ভিকারুননিসার প্রভাতী শাখার প্রধান শিক্ষিকা বরখাস্ত
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে রাজধানীর ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের প্রভাতী শাখার প্রধান শিক্ষিকা জিন্নাত আরাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌসেরও অপসারন দাবি করেছেন অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা।
গত সোমবার স্কুলটির নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী অরিত্রি অধিকারী রাজধানীর শান্তিনগরের নিজ বাসায় ‘আত্মহত্যা’ করেন। পরীক্ষার হলে মোবাইলের মাধ্যমে তিনি নকল করছিলেন- এমন অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয় এবং তার বাবাকে বিদ্যালয়ে ডেকে তিরষ্কার করা হয়। পরিপ্রেক্ষিতে অরিত্রি আত্মহত্যা করেছেনে বলে অভিভাবকদের দাবি।
ওই আত্মহত্যার ঘটনার জন্য ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষ এবং প্রভাতী শাখার প্রধান শিক্ষিকার পদত্যাগ দাবি করছেন অভিভাবক-শিক্ষার্থীরা। দাবির সমর্থনে মঙ্গলবার সকাল থেকেই তাঁরা ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছেন।
অরিত্রি আত্মহত্যার ঘটনায় সকালে গণমাধ্যমে দু:খ প্রকাশ করেছেন কলেজের অধ্যক্ষ নাজনীন ফেরদৌস। তিনি সকলের কাছে ক্ষমাও চান। একই সাথে শিক্ষা মন্ত্রণালয় এবং স্কুল কর্তৃপক্ষের দুটি পৃথক কমিটি তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিবে বলেও জানান।
দুপুর আড়াইটার দিকে স্কুলটির গভর্নিং বডির চেয়ারম্যান আশরাফ তালুকদার জানান, তদন্ত কমিটির প্রতিবেদন না আসা পর্যন্ত জিন্নাত আরাকে স্কুলের সব ধরনের কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।
এদিকে শুধু প্রধান শিক্ষিকা নন, অধ্যক্ষকেও বরখাস্ত করার দাবিতে বিক্ষোভ অব্যাহত রেখেছেন শিক্ষার্থীরা। সকালে পরীক্ষা শেষে বেরিয়ে স্কুল চত্বরেই বিক্ষোভ শুরু করেন তারা। সঙ্গে যোগ দিয়েছেন অভিভাবকরাও। বিভিন্ন স্লোগানে ও প্ল্যাকার্ডে আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেয়ার অভিযোগে বিচার দাবি করেছেন তারা।
সোমবার অরিত্রির বাবা দিলীপ অধিকারী জানান, অরিত্রির বার্ষিক পরীক্ষা চলছিল। নিষেধ থাকা সত্ত্বেও রবিবার পরীক্ষা চলাকালে স্কুলে মোবাইল নিয়ে যায় অরিত্রি। পরে তা দেখতে পেয়ে শিক্ষকরা ফোনটি নিয়ে যান এবং অরিত্রিকে পরীক্ষার হল থেকে বের করে দেন। গতকাল সকালে পরীক্ষা দেয়ার জন্য স্কুলে যায় অরিত্রি। কিন্তু তাকে পরীক্ষায় অংশ নিতে না দিয়ে মা-বাবাকে ডেকে পাঠায় স্কুল কর্তৃপক্ষ।
দিলীপ অধিকারী বলেন, খবর পেয়ে আমি ও আমার স্ত্রী স্কুলে যাই। সে সময় কর্তৃপক্ষ জানায়, অরিত্রি পরীক্ষায় মোবাইল ব্যবহার ও নকল করেছে। তাকে স্কুল থেকে টিসি দেয়া হবে। টিসি না দেয়ার জন্য স্কুলের শিক্ষকদের অনেক অনুরোধ করি। কিন্তু তারা অরিত্রিকে স্কুলে রাখা যাবে না বলে জানিয়ে দেন। এরপর অরিত্রি বাসায় যাওয়ার পর থেকে তার রুমের দরজা বন্ধ করে রেখেছে বলে খবর আসে। তাৎক্ষণিক বাসায় গিয়ে দরজা ভাঙলে অরিত্রিকে ফ্যানের সঙ্গে ওড়না দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। দ্রুত উদ্ধার করে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নেয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন।