ষাণ্মাসিক মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র ফেসবুকে শেয়ার দিলেই ব্যবস্থা: এনসিটিবি
গতকাল বুধবার থেকে সারা দেশে নতুন শিক্ষাক্রমের আলোকে মাধ্যমিক স্তরে ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন কার্যক্রম শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে চারটি বিষয়ের মূল্যায়নের প্রশ্নপত্র শিক্ষার্থীরা আগের রাতে হাতে পেয়ে যায় বলে যা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। তবে এই প্রশ্নফাঁসে সামগ্রিক মূল্যায়ন কার্যক্রমে কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না বলে জানিয়েছে জাতীয় শিক্ষাক্রম ও পাঠ্যপুস্তক বোর্ড (এনসিটিবি)।
সংস্থাটি বলছে, নতুন মূল্যায়ন পদ্ধতিতে প্রশ্নপত্র নৈপুণ্য অ্যাপের মাধ্যমে আগের রাতে প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো হচ্ছে। কোনো কোনো শিক্ষক তা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। যা শিক্ষকতার নৈতিকতা বিরোধী কার্যক্রম এবং চরম অ-শিক্ষকসুলভ আচরণ। নৈপুণ্য অ্যাপস ট্রাকিং আওতায়। কোনো শিক্ষক যদি এ ধরনের কার্যক্রম করেন তাকে চিহ্নিত করা সম্ভব। কোনো শিক্ষক যদি এ ধরনের কার্যক্রম করেন তার বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া বলে।
এনসিটিবির চেয়ারম্যান প্রফেসর মো. মশিউজ্জামান (রুটিন দায়িত্ব) স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে জরুরি নির্দেশনা বলা হয়, গতকাল থেকে প্রশ্নপত্রের আলোকে সমাধানও (কীভাবে কাজ করতে হবে) বাসায় বসেই শিখেছে শিক্ষার্থীরা। স্কুলে গিয়ে শুধু সেগুলো করে দিয়ে এসেছে তারা। এখানে প্রশ্নফাঁস হলেও সামগ্রিক ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নে কোনো সমস্যা হবে না।
নির্দেশনায় শিক্ষকদের প্রতি কঠোর নির্দেশনা দেওয়া হয় এনসিটিবির পক্ষ থেকে। মূল্যায়ন কার্যক্রমের মূল্যায়ন নির্দেশনাগুলো বিস্তারণের মতো এরকম স্পর্শকাতর একটি বিষয়ে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরও দায়িত্বশীল হতে হবে এবং সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে।
এতে বলা হয়, জাতীয় শিক্ষাক্রম-২০২২ এর আলোকে ষষ্ঠ থেকে নবম শ্রেণির ২০২৪ সালের ষান্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়ন ৩ জুলাই, ২০২৪ হতে সমগ্র দেশব্যাপী একসঙ্গে শুরু হয়েছে। এই ষাণ্মাসিক সামষ্টিক মূল্যায়নের ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ প্রতিটি বিষয়ের মূল্যায়নের আগের দিনে নৈপুণ্য অ্যাপের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠান প্রধানের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো হচ্ছে।
যদিও এই ‘মূল্যায়ন নির্দেশনাসমূহ’ কোনো শিক্ষার্থী আগে থেকে জেনে গেলেও সামগ্রিক মূল্যায়ন কার্যক্রমে কোনো ধরনের বিঘ্ন সৃষ্টি হবে না, তারপরও পরীক্ষার হলে প্রবেশের পূর্বেই এই ‘মূল্যায়ন নির্দেশনাসমূহ’ কতিপয় প্রতিষ্ঠান প্রধান বিভিন্ন মহলের সঙ্গে শেয়ার করে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়ছে। যার ফলে, কতিপয় অসাধু ব্যক্তি এবং সংস্থা এই ‘মূল্যায়ন নির্দেশনাসমূহ’ বিভিন্ন অসত্য, ভুল, অপ্রাসঙ্গিক এবং বিভ্রান্তিকর সমাধান ইউটিউব এবং অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশিত হচ্ছে । এই বিভ্রান্তিকর সমাধান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকদের ব্যাপকভাবে বিভ্রান্ত করছে এবং মূল্যায়ন কার্যক্রম বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতা তৈরি করছে।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান প্রধান, প্রধান শিক্ষকের নিজস্ব আইডিতে পাঠানো এই ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা’ বাইরের যে কারো সাথে শেয়ার করা শিক্ষকতার নৈতিকতা বিরোধী কার্যক্রম এবং চরম অ-শিক্ষকসুলভ আচরণ। নৈপুণ্য অ্যাপের ইউজার আইডির মাধ্যমে এই ‘মূল্যায়ন নির্দেশনা” ডাউনলোড এবং বিস্তারণ কার্যক্রম ট্র্যাকিং করার ব্যবস্থা আছে। এই ট্র্যাকিং এর আলোকে কোনো প্রতিষ্ঠান প্রধান যদি মূল্যায়ন নির্দেশনা কোন অপ্রাসঙ্গিক কমিউনিটি কিংবা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শেয়ার করেছেন এবং তা প্রমাণিত হয় তবে তার বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ।