ফল পুনঃনিরীক্ষণ

এসএসসিতে নতুন করে জিপিএ-৫ পেল হাজারের বেশি, ফেল থেকে পাস ৮৮৭ জনের

পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ
পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ  © ফাইল ফটো

চলতি বছরের এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার পুনঃনিরীক্ষণের ফল প্রকাশ করা হয়েছে। আজ মঙ্গলবার (১১ জুন) এ ফল প্রকাশ করা হয়েছে। মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণে ৯টি সাধারণ, কারিগরি ও মাদ্রাসা বোর্ডে ফেল থেকে পাস করেছে ৮৮৭ জন শিক্ষার্থী।  নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১ হাজারের বেশি। ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৫ জন। সব মিলিয়ে ফল পরিবর্তন হয়েছে ৮ হাজারেরও বেশি শিক্ষার্থীর। 

এসএসসি ও সমমান পরীক্ষার ফলে পাসের হার ৮৩ দশমিক ০৪ শতাংশ। জিপিএ-৫ পায় ১ লাখ ৮২ হাজার ১২৯ জন। গত ১২ মে প্রকাশিত ফলে কারও কাঙ্ক্ষিত ফল না এলে পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন বা খাতা চ্যালেঞ্জ করার সুযোগ দেয় শিক্ষাবোর্ডগুলো। গত ১৩ মে থেকে এ কার্যক্রম চলে ১৯ মে পর্যন্ত। 

ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডে, এবার এই বোর্ড থেকে এসএসসি পরীক্ষার ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে ৭০ হাজার ১২৯ জন। তারা মোট ১ লাখ ৭৯ হাজার ১৪৮টি পত্রের ফল পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে। এর মধ্যে ২ হাজার ৭২৩ জনের ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ফেল থেকে পাস করেছে ১২৭ জন। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ৩৪৪ জন। 

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে, এই বোর্ডে ফলাফল পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করে মোট ২৮ হাজার ৩৫১ জন পরীক্ষার্থী। তারা ৭৬ হাজার ৪২টি উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের জন্য আবেদন করে। এদের মধ্যে দুই হাজার ৬০ জন পরীক্ষার্থীর নম্বর পরিবর্তন হয়েছে। মোট জিপিএ বেড়েছে ৮৭১ জনের, জিপিএ ও সিজিপিএ বেড়েছে ৭০৬ জন পরীক্ষার্থীর। আবার জিপিএ বেড়ে সিজিপিএ অপরিবর্তিত রয়েছে ১৬৫ জনের। ফেল থেকে পাস করেছেন ১০২ পরীক্ষার্থী। ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে একজন। কেবল নম্বর বেড়েছে কিন্তু জিপিএ বাড়েনি এমন পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৮৯। 

বরিশাল শিক্ষা বোর্ডে, ৭ হাজার ৫৯৩ জন শিক্ষার্থী মোট ২২ হাজার ৬৬৩টি আবেদন করে। এর মধ্যে ফল পরিবর্তন হয়েছে ১৬২ জনের। ফেল থেকে পাস করেছেন ৩ জন এবং নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৫ জন। 

রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডে. ২২ হাজার ৮৭০ জন শিক্ষার্থী তাদের ৫৩ হাজার ১৭৪টি খাতা পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করে। পুনঃনিরীক্ষণে ৫৭১ জন শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪ জন ফেল থেকে পাস করেছে। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২৪৩ জন। এদের মধ্যে চারজন ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে। 

যশোর শিক্ষা বোর্ডে. ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছেন ৮ শিক্ষার্থী। নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১১৫ শিক্ষার্থী। ফেল থেকে পাস করেছেন ৪২ জন। মোট ফল পরিবর্তন হয়েছে ২০৩ জনের। 

ময়মনসিংহ শিক্ষা বোর্ডে. নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১০০ শিক্ষার্থী। ফেল থেকে পাস করেছেন ১৫৪ জন। সিলেট শিক্ষা বোর্ডে নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২২ জন শিক্ষার্থী। ফেল থেকে পাস করেছেন ৩৫ জন। ফল পরিবর্তন হয়েছে ২২৭ জন শিক্ষার্থীর। 

দিনাজপুর বোর্ডে, মোট আবেদন জমা হয় ৫৬ হাজার ৬৪০ টি। এর মধ্যে ফেল থেকে পাস করেছে ৪৭ জন, ফেল থেকে জিপিএ-৫ পেয়েছে ২ জন এবং নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে ১৬০ জন। ফল পরিবর্তন হয়েছে ৯১৭ জনের। 

মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডে, ২৬ হাজার ২৯৪ জন পরীক্ষার্থী মোট ৪৮ হাজার ৫৮১টি উত্তরপত্র পুনঃনিরীক্ষণের আবেদন করেছিল। পুনঃনিরীক্ষণের আবেদনকারীদের মধ্যে ফল পরিবর্তন হয়েছে ৩৮২ জনের। তাদের মধ্যে ১৪৪ জন ফেল থেকে পাস করেছে এবং ৪৯ জন নতুন করে জিপিএ-৫ পেয়েছে। জিপিএ পরিবর্তন হয়েছে ১২৫ জনের। ২২ জন ফেল করে ফল চ্যালেঞ্জ করলেও পাস করতে পারেনি। 

কারিগরি শিক্ষা বোর্ডে, মোট আবেদন জমা হয় ১৭ হাজার ৪৪৫টি। এর মধ্যে ফেল থেকে পাস করেছে ৪২ জন শিক্ষার্থী। যেখানে ছেলে ২৯ জন এবং মেয়ে ১৩ জন। নতুন করে জিপিএ ফাইভ পেয়েছে ৩ জন। এর মধ্যে ছেলে ১ জন ও মেয়ে ২ জন।

সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পুনঃনিরীক্ষণে নতুন করে কোনো উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হয় না। শুধু উত্তরপত্রে শিক্ষার্থীর প্রাপ্ত নম্বরের যোগ-বিয়োগগুলো দেখা হয়। এতেই এতো সংখ্যক শিক্ষার্থীর ফল পরিবর্তন হয়েছে। যদি আবার মূল্যায়নের সুযোগ দেওয়া হয় তবে পরিস্থিতি কি হবে প্রশ্ন রেখে তারা বলছেন, শুধু পরীক্ষকদের গাফিলতিতে এমনটা হচ্ছে। এজন্য ৬০ দিনের মধ্যে ফল প্রকাশ করার রীতিকে দায়ী করছেন তারা।

এর আগে ২০১৯ সালে টানা তিন বছর ধারাবাহিক গাফিলতির কারণে ১ হাজার ২৬ পরীক্ষককে শাস্তির আওতায় আনে শিক্ষাবোর্ড। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে বোর্ডের আইন অনুযায়ী বিভিন্ন ধরনের শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হয়। অভিযুক্ত বেশিরভাগ পরীক্ষককে কালো তালিকাভুক্ত, কাউকে সারা জীবনের জন্য কোনো বোর্ডের পরীক্ষক হতে না পারার মতো শাস্তি দেওয়া হয়। তবে যে-সব পরীক্ষক খাতা মূল্যায়নে কেলেঙ্কারি বা ক্রাইমে যুক্ত হন, তাদের বেতন-ভাতা বন্ধ এবং চাকরিচ্যুতির নজির রয়েছে। এরপর বিভিন্ন সময় তদন্ত করে দায়ীদের শাস্তির আওতায় আনা হলেও সংখ্যাটা খুবই কম।

 

সর্বশেষ সংবাদ