স্কুল কমিটি নিয়ে আওয়ামী লীগ নেতাদের দ্বন্দ্ব, প্রধান শিক্ষকের কক্ষে তালা
আওয়ামী লীগ নেতাদের নতুন-পুরোনো কমিটির দ্বন্দ্বের জেরে রাজশাহী নগরের নওদাপাড়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ আসে। কিন্তু দুই কমিটির শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিই ক্ষমতাসীন দলের নেতা। এ জটিলতায় আজ বৃহস্পতিবার দিনভর তালা খোলা যায়নি।
শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, পুরোনো কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই নতুন আরেকটি কমিটির অনুমোদন দিয়েছে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ড। পুরোনো কমিটি বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করে সহকারী প্রধান শিক্ষককে দায়িত্ব দিয়েছে। নতুন কমিটির সদস্যরা বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ে পরিচিতি সভা করতে এসেছিলেন। কিন্তু আগের কমিটির পক্ষ থেকে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেওয়া হয়। এ পরিস্থিতিতে নতুন কমিটির পরিচিতি সভা আর হয়নি। সকাল ১০টা থেকে বেলা ২টা পর্যন্ত তর্কবিতর্কের পর দুই পক্ষ বিদ্যালয় ত্যাগ করে।
নতুন কমিটির সভাপতি রাজশাহী মহানগরের ১৩ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও রাজশাহী জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মো. ওয়াহেদুন নবী। আর পুরোনো কমিটির সভাপতি রাজশাহী মহানগর যুবলীগের সাবেক সভাপতি রমজান আলী।
রমজান আলী অভিযোগ করেন, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক খোন্দকার নাহিদা নাসরিন তাঁর স্বাক্ষর জাল করে গত মার্চ মাসের বেতন তুলেছেন। কিন্তু বৈশাখী ভাতা তিনি আটকে দিয়েছেন। তাঁর সন্দেহ হয়েছে, প্রধান শিক্ষক যদি তাঁর স্বাক্ষর জাল করে বেতন ওঠাতে পারেন, তাহলে ব্যাংক হিসাবের টাকাও নয়ছয় করতে পারেন। সেই সন্দেহ থেকে তিনি গত ২৫ এপ্রিল প্রধান শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করেছেন। বিষয়টি তদন্তের জন্য একটি কমিটি করে দিয়েছেন। এ ব্যাপারে তিনি হাইকোর্টে একটি রিট আবেদন করেছেন, যাতে তদন্ত শেষ না হওয়া পর্যন্ত তাঁকে কমিটির সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়া হয়। তিনি বলেন, তাঁর মেয়াদে বিদ্যালয়ের কোনো আর্থিক অনিয়ম হয়ে থাকলে তাঁকেই সেই দায় নিতে হবে। সে জন্য প্রধান শিক্ষককে সাময়িক বরখাস্ত করার সঙ্গে সঙ্গে তিনি সহকারী প্রধান শিক্ষক লতিফা খাতুনকে সাময়িকভাবে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব দিয়েছেন। তদন্ত শেষে তিনি দায়িত্ব হস্তান্তর করবেন।
সভাপতির স্বাক্ষর জাল করার অভিযোগ অস্বীকার করে প্রধান শিক্ষক খোন্দকার নাহিদা নাসরিন বলেন, রমজান আলী সভাপতি হিসেবে ১৫ বছরের বেশি সময় ধরে আছেন। কোনো দিন তাঁর স্বাক্ষর জাল করলেন না। এখন চলে যাওয়ার সময় তাঁর স্বাক্ষর কেন জাল করতে যাবেন?
জানতে চাইলে রাজশাহী শিক্ষা বোর্ডের বিদ্যালয় পরিদর্শক জিয়াউল হক বলেন, নতুন কমিটি ১৬ মে থেকে দায়িত্ব পালন করবে। এ বিষয়ে তাঁরা একটি সংশোধনী আদেশ জারি করেছেন।