বিদ্যালয়ের দুই পাশে সিএনজি-অটোস্ট্যান্ড, ইভটিজিংয়ের শিকার ছাত্রীরা
নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলা সদরে নারী শিক্ষার প্রসারে গড়ে ওঠা একমাত্র মাধ্যমিক শিক্ষা প্রতিষ্ঠান সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। বিদ্যালয়টির দুই পাশে সিএনজি অটোরিক্সাস্ট্যান্ড থাকায় বখাটেদের হাতে প্রতিনিয়তই ইভটিজিংয়ের শিকার হচ্ছেন ছাত্রীরা। ফলে প্রতিনিয়ত নানা শঙ্কা নিয়ে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়া করতে হচ্ছে নারী শিক্ষার্থীদের। প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোনো প্রতিকার বা প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা না থাকায় এখানে প্রতিনিয়তই ঘটছে ইভটিজিংয়ের মতো ঘটনা।
নারী শিক্ষার প্রসারে ১৯৮৩ সালে নেত্রকোনা কেন্দুয়া সড়কের পাশে উপজেলা সদরে স্থাপিত হয় সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষার মান উন্নয়নে পাঠদানসহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা ভালো থাকায় বিদ্যালয়টিতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে ছাত্রীর সংখ্যা। বর্তমানে শিক্ষালয়টিতে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত ছাত্রীর সংখ্যা ১ হাজার ৩৪৭ জন এবং শিক্ষক-শিক্ষিকা রয়েছেন ১৮ জন।
এ নিয়ে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মুখলেছুর রহমান বাঙ্গালী দ্যা ডেইলি ক্যাম্পাসকে জানিয়েছেন, নারী শিক্ষার প্রসারে বিদ্যালয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। বিদ্যালয়ের গেটের সামনে এবং ডানে বামে দুই পাশে সিএনজি অটো স্ট্যান্ড রয়েছে। এই সিএনজি অটো স্ট্যান্ডের যানবাহনে বসে বখাটে যুবকেরা অনেক সময় ছাত্রীদের বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার ক্ষেত্রে ভিডিও ধারণ করে থাকে। তাছাড়া নানান কায়দায় ছাত্রীদের ইভটিজিং করে বলেও জানান তিনি।
এর আগে এ নিয়ে সোমবার (২০নভেম্বর) উপজেলা মাসিক আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভায় বিদ্যালয়টির প্রধান শিক্ষক মুখলেছুর রহমান বাঙ্গালী এসব সমস্যার কথা তুলে ধরে সিএনজি অটো স্ট্যান্ড অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে ছাত্রীদেরকে নিরাপদে বিদ্যালয়ে আসা যাওয়ার সুযোগ করে দেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। এছাড়াও এ বিষয়ে উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনাও করেছেন তিনি।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ছাত্রীরা জানিয়েছেন, বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। নির্বিঘ্নে বিদ্যালয়ে আসা-যাওয়া নিশ্চিতে শিক্ষার্থীরাও সিএনজি অটোস্ট্যান্ডটি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক অটো চালকের কাছে যাত্রীবেশী বখাটেদের ইভটিজিংয়ের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তাছাড়া যদি স্ট্যান্ড অন্য জায়গায় দেওয়া হয় আমরা সেখানেই চলে যাব। আমাদের সামনে এরকম কেউ করতে পারে না।
এ নিয়ে কেন্দুয়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো: এনামুল হক জানান, সাবেরুন্নেছা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে থেকে সিএনজি অটোরিক্সা স্ট্যান্ড অন্যত্র সরিয়ে নেওয়ার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ নিয়ে সিএনজি অটোস্ট্যান্ডের শ্রমিক নেতাদের সাথে কথা বলে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এই কর্মকর্তা।
উপজেলা আইন শৃঙ্খলা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা কাবেরী জালাল বলেন, ছাত্রীদেরকে স্বাধীনভাবে চলাফেরার সুযোগ দিতে হবে। ছাত্রীদের নিরাপদে চলাচলের ক্ষেত্রে ছাত্র শিক্ষক অভিভাবকসহ সকল শ্রেণি পেশার মানুষকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে তাদের সমস্যা সমাধানে সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।