৩০ এপ্রিল ২০২৩, ২১:৫২

পরীক্ষার হলে থাকা নারগিসের সন্তান জেলা প্রশাসকের কোলে 

কেন্দ্র পরিদর্শনে এসে পরীক্ষার হলে থাকা শিক্ষার্থীরা শিশু-সন্তানকে কোলে তুলে নেন জেলা প্রশাসক  © টিডিসি ফটো

শিশুসন্তানকে নিয়ে এসএসসি পরীক্ষা দিতে এসেছিলেন নারগিস সুলতানা। সন্তানকে মায়ের কাছে রেখে পরীক্ষার হলে বসেন এই পরীক্ষার্থী। এ সময় সেই শিশুকে কোলে তুলে নিলেন নোয়াখালীর জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান। এরপর তিনি মা নারগিস সুলতানার খবর নেন এবং বিভিন্ন পরামর্শ দেন।

রবিবার (৩০ এপ্রিল) সকালে নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ে পরিদর্শনে গিয়ে শিশুটির নানি শাহিন আক্তারের কাছ থেকে আবদুল্লাহ আল তাওসিবকে কোলে তুলে নেন তিনি। এ সময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা ও আইসিটি) অজিত দেবসহ বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।

নোয়াখালীর আল মদিনা একাডেমির এসএসসি পরীক্ষার্থী নারগিস সুলতানার দশম শ্রেণিতে থাকতে বিয়ে হয়। কিছু দিন আগে সন্তান ভূমিষ্ঠ হলেও পরীক্ষা দেবেন বলে প্রত্যয়ী ছিলেন তিনি। রবিবার সন্তান নিয়েই নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয় কেন্দ্রের আল ফারুক একাডেমি স্কুলে মানবিক বিভাগ থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন।

নোয়াখালী সরকারি বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষিকা ও কেন্দ্রসচিব মেহেরুন নেছা বলেন, বাচ্চা কোলে নিয়েই এক শিক্ষার্থী পরীক্ষা দিতে আসে। এরপর বাচ্চাকে নানির কোলে রেখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে সে। জেলা প্রশাসক স্যার অনেকক্ষণ শিশুটিকে কোলে রাখেন এবং সার্বিক খোঁজখবর নেন।

শিশুটির নানি শাহিন আক্তার জানান, জেলা প্রশাসক স্যার এসে বাবুকে কোলে নিলেন। মেয়ের পড়াশোনার খবর নিলেন। অপ্রাপ্ত বয়সে বিয়ে দিয়েছি কি না জিজ্ঞেস করেছেন। ১৮ বছর হওয়ার পর মেয়েকে বিয়ে দিয়েছি সেটা স্যারকে বলেছি। স্যার অনেকক্ষণ বাবুকে কোলে রেখেছেন।

জেলা প্রশাসক দেওয়ান মাহবুবুর রহমান বলেন, কেন্দ্রসচিব থেকে জানতে পেরে আমি পরীক্ষার্থীকে দেখতে যাই; খোঁজখবর নিই। শিক্ষার্থীর মায়ের কাছে জানতে পেরেছি ১৮ বছর হওয়ার পর বিয়ে দিয়েছেন। শিশুটিকে অনেকক্ষণ কোলে রাখি। এ সময় মেয়েটি পরীক্ষা দিচ্ছিল। পরবর্তীতে মেয়েটির সঙ্গে কথা বলে সাহস দিয়েছি। শিক্ষার কোনো বিকল্প নেই। তাই সামনের পরীক্ষাগুলোতে যেন অংশগ্রহণ করে সে বিষয়ে পরামর্শ দিয়েছি।

প্রসঙ্গত, এ বছর নোয়াখালীর নয়টি উপজেলার ৭৪টি কেন্দ্রে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হচ্ছে।  এসএসসি, দাখিল ও ভোকেশনালে একযোগে ৪৫ হাজার ৬৪৫ জন পরীক্ষার্থী অংশগ্রহণ করার কথা ছিল। কিন্তু প্রথম দিনের বাংলা পরীক্ষায় ৮১১জন পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত ছিলেন।