এসএসসিতে ফেল, খাতা পুনর্মূল্যায়নে হাসি ফিরলো প্রতিবন্ধী জুলিয়ার মুখে
চলতি বছর এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল প্রতিবন্ধী জুলিয়া আক্তার। ভালো পরীক্ষা দিয়েও অকৃতকার্য হয়েছিল সে। এমন ফলাফল দেখে সে ভেঙে পড়েছিল। খাতা পুনর্মূল্যায়ন করা হলে ভালো ফলাফল আসবে এব্যাপারে তার আত্মবিশ্বাস ছিল। অবশেষে জুলিয়ার খাতা পুনর্মূল্যায়ন করে দেখা যায়, সে অকৃতকার্য হয়নি, বরং জিপিএ-৫ পেয়েছে।
জুলিয়া কালীগঞ্জ উপজেলার চাপালী গ্রামের প্রতিবন্ধী নজরুল ইসলামের মেয়ে। জুলিয়া এ বছর ঝিনাইদহের কালীগঞ্জের সলিমুন্নেছা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের কারিগরি শাখা থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল।
আরও পড়ুন: স্থায়ী সনদ ছাড়াই চলছে নর্থ সাউথ-ব্র্যাকসহ ৪৬ বিশ্ববিদ্যালয়
জুলিয়া কথা বলতে পারে না। তবে তার মুখের হাসি বলে দিচ্ছে, সে বেশ খুশি। ইশারায় জুলিয়া সবাইকে বোঝাচ্ছে, সে পড়াশোনা করে অনেক বড় হতে চায়। তার ইচ্ছা, পড়াশোনা করে সে চাকরি করবে। তবে আর্থিক টানাটানির সংসারে প্রতিবন্ধী মেয়েকে পড়াতে পারবেন কি না, তা নিয়ে চিন্তিত জুলিয়ার বাবা নজরুল ইসলাম।
জুলিয়ার মা সেলিনা বেগম বলেন, এই ফলাফলে তাঁরা সবাই খুব আনন্দিত। এখন মেয়েকে কলেজে ভর্তির পরিকল্পনা করছেন তাঁরা। যদিও তাঁর মেয়ের শখ ছিল মানবিক বিভাগে পড়ালেখা করে বড় চাকরি করবে। তবে প্রতিবন্ধী হওয়ায় বিদ্যালয়ের শিক্ষকেরা তাকে কারিগরি শাখায় ভর্তি করিয়েছিলেন।
তার বাবা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘ছোট মেয়ে প্রতিবন্ধী। সে কথা বলতে ও শুনতে পায় না। বুদ্ধি করে চলতেও পারে না। তবে ছোটবেলা থেকেই পড়ার প্রতি খুব আগ্রহ। বই পেলেই পড়তে বসে। মেয়ের এ ইচ্ছার জন্যই তাকে পড়ালেখা করাচ্ছি। পরীক্ষার পূর্বে রাত জেগে অনেক পড়েছে। নিজের মতো করে পড়ালেখা করত, বিদ্যালয়ে নিয়মিত ক্লাসও করত।’
সলিমুন্নেছা পাইলট মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের শিক্ষক শাহিনুল হাসান বলেন, জুলিয়ার পড়াশোনার প্রতি প্রবল আগ্রহ আছে। তবে কোনো কারণে তার ফলাফল ভুল এসেছিল। পুনর্নিরীক্ষার ফলাফলে জুলিয়া জিপিএ-৫ পেয়েছে। প্রতিবন্ধকতা জয় করে জুলিয়া এত ভালো ফল করায় বিদ্যালয়ের সবাই বেশ খুশি।