নবম গ্রেড ও ক্যাডারভুক্তির দাবিতে আন্দোলনে নামছেন সরকারি মাধ্যমিক শিক্ষকরা
সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি এবং দীর্ঘদিনের বকেয়া দাবির ভিত্তিতে নবম গ্রেডে উন্নীতকরণের জন্য আন্দোলনে নামছেন সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষকরা। ৫০ বছরের বঞ্চনা, পদসোপান বৈষম্য এবং প্রশাসনিক জটিলতার প্রতিবাদ হিসেবে তারা আগামী সপ্তাহ থেকে কর্মবিরতি ও কঠোর কর্মসূচি পালন করার ঘোষণা দিয়েছেন।
শিক্ষক নেতারা জানিয়েছেন, তারা ৩০ নভেম্বর পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন সরকারের কাছে। এর মধ্যে সরকারের পক্ষ থেকে ইতিবাচক কোনো পদক্ষেপ না নিলে বার্ষিক পরীক্ষার কক্ষ তদারকি, খাতা মূল্যায়ন, ফল প্রস্তুতি এবং ভর্তি কার্যক্রমসহ অন্যান্য কাজ বর্জন করার পাশাপাশি ঢাকায় মহাসমাবেশ ও সারাদেশে কমপ্লিট শাটডাউনসহ আরও কঠোর কর্মসূচি ঘোষণা করবেন।
ঢাকার কলেজিয়েট স্কুলের সহকারী শিক্ষক এবং শিক্ষক সমিতির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য আব্দুল্লাহ আল নাহিয়ান বলেন, অর্থনৈতিক দিক দিয়ে কোনো অভিযোগ না থাকলেও সহকারী শিক্ষকরা যথাযথ মর্যাদা পাচ্ছেন না। তাদের নবম গ্রেড পাওয়ার কথা থাকলেও তারা ৫০ বছর ধরে দশম গ্রেডে আটকে আছেন। অন্যদিকে, একই গ্রেডের বিভিন্ন পদ যেমন সমাজসেবা কর্মকর্তা, সাব-রেজিস্টার, পুলিশ ইন্সপেক্টরসহ একাধিক পদ গত এক দশকে নবম গ্রেডে উন্নীত হয়েছে।
তিনি আরও জানান, পিটিআই ইনস্ট্রাক্টর পদটি ১৯৯৬ সালে নবম গ্রেডে উন্নীত হলেও সহকারী শিক্ষক পদটি এখনও দশম গ্রেডেই রয়েছে। যদিও উচ্চ আদালতের রায় সহকারী শিক্ষকদের পক্ষে এসেছে, তবুও প্রশাসনিক জটিলতার কারণে সরকার তা কার্যকর করেনি বলে অভিযোগ করেন তিনি।
এসময় তিনি মাধ্যমিক শিক্ষকদের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ দাবি তুলে ধরেন, যার মধ্যে রয়েছে — সহকারী শিক্ষক পদকে বিসিএস (সাধারণ শিক্ষা) ক্যাডারে অন্তর্ভুক্তি এবং এন্ট্রি পদ নবম গ্রেড (ক্যাডার) করে চার থেকে ছয় স্তরের পদসোপান প্রবর্তন। এছাড়া, স্বতন্ত্র মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তর প্রতিষ্ঠার জন্য গেজেট প্রকাশের দাবি করা হয়।
জানা গেছে, সরকারি মাধ্যমিক বিদ্যালয়গুলোতে বর্তমানে ১০,৮৮৪ জন শিক্ষক কর্মরত থাকলেও শূন্যপদের সংখ্যা প্রায় ২৭.৪ শতাংশ, অর্থাৎ ২,৪৮৪টি পদ খালি রয়েছে। এর ফলে বাকি শিক্ষকদের উপর অতিরিক্ত চাপ পড়ে এবং শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করাটা কঠিন হয়ে পড়েছে।
উল্লেখ্য, ২০১৭ সাল থেকে পিএসসির নন-ক্যাডার বিসিএস উত্তীর্ণদের মাধ্যমে সহকারী শিক্ষক পদে নিয়োগ দেওয়া হচ্ছে, এবং বর্তমানে কর্মরত শিক্ষকদের প্রায় অর্ধেকই ৩৪, ৩৫, ৩৬, ৪১ ও ৪৩তম বিসিএসের নন-ক্যাডার তালিকা থেকে নিয়োগ পেয়েছেন।