বঞ্চিত ২৭টি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় জাতীয়করণের দাবি
সারাদেশে ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় শিক্ষার মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ঘোষিত ৩১৫টি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মধ্যে ২৭টি প্রতিষ্ঠান আজও সরকারিকরণের বাইরে রয়ে গেছে। দীর্ঘদিনের অপেক্ষা ও দাবির পরও এ বিদ্যালয়গুলো জাতীয়করণের আওতায় না আসায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন সংশ্লিষ্ট শিক্ষক, শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও স্থানীয় জনগণ।
রোববার (৩১ আগস্ট) জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী হলে জাতীয়করণ বঞ্চিত মডেল প্রতিষ্ঠান কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এমন দাবি জানানো হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, এসব বিদ্যালয় আধুনিক একাডেমিক ভবন, মাল্টিমিডিয়া শ্রেণিকক্ষ, বিজ্ঞানাগার ও কম্পিউটার ল্যাবসহ সকল প্রয়োজনীয় অবকাঠামো ও সরকারি শর্ত পূরণ করলেও রাজনৈতিক প্রভাব, স্বজনপ্রীতি ও প্রশাসনিক অনিয়মের কারণে তারা সরকারিকরণ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
আরও পড়ুন: একাদশে তৃতীয় ধাপের আবেদন শুরু আজ, সময় দু’দিন
বক্তারা অভিযোগ করেন, ২০১৫ সালে উপজেলা পর্যায়ে একটি করে মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের উদ্যোগ নেয় সরকার, এবং উপজেলা শিক্ষা অফিসগুলো এই মডেল প্রকল্পভুক্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকেই অগ্রাধিকার দিয়ে তালিকা প্রেরণ করে। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, অনেক কম যোগ্য বা প্রভাবশালী মহলের প্রভাবে তালিকার বাইরের প্রতিষ্ঠান সরকারিকরণ হয়েছে, যা চরম বৈষম্য ও হতাশার জন্ম দিয়েছে।
বঞ্চিত এসব বিদ্যালয় গত সাত বছর ধরে নিয়মিতভাবে সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি প্রদান, উচ্চপর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ ও দাবি আদায়ের জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্প্রতি প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে জমা দেওয়া স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়, এই ২৭টি বিদ্যালয় সরকারের মানদণ্ড ও নীতিমালা অনুযায়ী জাতীয়করণের যোগ্যতা রাখে এবং এর মধ্যে দুটি প্রতিষ্ঠানের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বর্তমানে সরকারে গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরত আছেন।
সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা বলেন, বিগত ছয় মাসের মধ্যে নতুন করে ১১টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় সরকারিকরণের ঘোষণায় আমরা ইতিবাচক ইঙ্গিত পেলেও, পুরাতন ও অপেক্ষমাণ মডেল বিদ্যালয়গুলোর দাবির নিষ্পত্তি না হওয়ায় এটিকে এক ধরনের অবিচার হিসেবে দেখছে সাধারণ মানুষ।
তারা দাবি করেন, দীর্ঘদিন ধরে এই বিদ্যালয়গুলো স্থানীয় পর্যায়ে মানসম্মত শিক্ষা ও পাবলিক পরীক্ষার কেন্দ্র হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। অথচ শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রভাব ও অনৈতিক হস্তক্ষেপের কারণে এ প্রতিষ্ঠানগুলো বঞ্চনার শিকার হয়েছে, যা দেশের সার্বিক শিক্ষাব্যবস্থার জন্যও হতাশাজনক বার্তা বহন করে।
বক্তারা বলেন, প্রধান উপদেষ্টা যেহেতু শিক্ষা ক্ষেত্রে ন্যায়, সমতা ও অগ্রাধিকার নিশ্চিত করার কথা বলে আসছেন, তাই এই ২৭টি বিদ্যালয়কে অবিলম্বে সরকারিকরণের আওতায় আনলে সেই অঙ্গীকার বাস্তবায়ন পাবে এবং উপকৃত হবে লাখো শিক্ষার্থী ও অভিভাবক।
সংশ্লিষ্টরা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, অবিলম্বে দাবি মানা না হলে তারা ন্যায্য অধিকার আদায়ে কঠোর আন্দোলনে যেতে বাধ্য হবেন।