০৩ সেপ্টেম্বর ২০২২, ১৬:২১

SOP বা মোটিভেশন লেটার কী, কেন, কীভাবে লিখতে হয়?

  © প্রতিকী ছবি

SOPমানে হলো Statement of Purpose। এটিকে আবার Letter of Motivation বলা হয়। মূলত এটি এক ধরণের চিঠি যা উচ্চশিক্ষার জন্য আবেদনকারীকে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ বা স্কলারশিপ প্রদানকারী কর্তৃপক্ষের কাছে লিখতে হয়। এই SOP খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণ এর মাধ্যমে একজন শিক্ষার্থীর গুণগত মান বিচার করা হয়। তাই, সময় হাতে নিয়ে ও অত্যন্ত মনোযোগ নিয়ে এই SOP লেখা উচিত।

SOP লেখার নিয়ম/সতর্কতা
আপনার SOP হতে হবে নির্ভুল। এখানে Spelling Mistake অথবা Sentence Making-এ ভুল থাকতে পারবে না। তাই লেখার পর অনেক বার চেক করুণ। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ কারও পরামর্শ নিন। তাদের দিয়ে দেখিয়ে নিন আপনার লেখার Grammar, Sentence Structure ও  অন্যান্য বিষয়াদি যথার্থ আছে কিনা। অনেক সময় আপনার চোখে যে ভুল ধরা পড়বে না- তা অন্য কারো চোখে ধরা পড়বে। তাই এক্ষেত্রে অবশ্যই অন্য কারো সহযোগিতা নেওয়া ভালো। আপনি চাইলে Grammarly (grammarly.com) দিয়েও অনলাইনে চেক করিয়ে নিতে পারেন।

আরও পড়ুন: বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য কোন ব্যাংকে, কীভাবে স্টুডেন্ট ফাইল ওপেন করবেন

SOP কিভাবে লেখতে হয়/স্ট্রাকচার
SOP এর তিনটি অংশ থাকেঃ যথা- Introduction, Body এবং Conclusion. মূলত এর আঙ্গিক সাধারণ Essay এর মত হলেও এটি লিখতে আপনাকে হতে হবে Artistic – যেন এটি পড়ে আপনার স্কলারশিপ বা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ আপনাকেই সিলেক্ট করে। আপনি চাইলে Body Part-এ অনেক কিছু যুক্ত করতে পারেন, যাতে আপনার লেখাগুলো আপনার অনেক দিক নিয়ে আলোচনা থাকে। তবে এক্ষেত্রে খেয়াল রাখাতে হবে, অনেক Paragraph সংযুক্ত করতে গিয়ে যেন এলোমেলো বা অগোছালো না হয়ে যায়। অথবা, আপনার লেখা দিকহারা না হয়ে যায়। আপনার SOP হবে Concise, Explanatory, Convincing and Dynamic- Diversified. 

Introduction
Introduction এর ব্যাপারে প্রথম কথা যা মনে রাখতে হবে তা হল “First Impression is the last impression”. এই সেগমেন্টে আপনার সম্পূর্ণ লেখার দিক নির্দেশনা ও সার সংক্ষেপ থাকতে হবে। আপনি কোন Subject ও Department এ পড়াশুনা করতে চান সে বিষয়ে উল্লেখ থাকতে হবে। আর আপনি যদি হন রিসার্চার তাহলে আপনার রিসার্চ নিয়ে কিছু কথা থাকতে হবে। মোট কথা, আপনার Introduction পড়ে যেন কর্তৃপক্ষের পরবর্তী বিষয় নিয়ে পড়তে ইচ্ছা করে।

Description
এখানে আপনি আপনার সকল গুরুত্বপূর্ণ দিক ও অর্জন নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করবেন। পূর্বের বিশ্ববিদ্যালয়ে কি কি করেছেন সকল বিষয়ে আলোচনা করতে হবে। আপনার বিশ্ববিদ্যালয়ের QS World Ranking তুলে ধরুণ। আপনার CGPA উল্লেখ করুণ। আর বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকাকালীন সময়ে আপনি কি কি Co-Curriculum Activity করেছেন সে বিষয়ে উল্লেখ করতে ভুলবেন না। আপনি IELTS/ TOEFLS এবং GRE/ GMAT/ SAT যে পরীক্ষাগুলো দিয়েছেন, তাও উল্লেখ করুণ। আপনি যদি রিসার্চ করে থাকেন, সে বিষয়ে উল্লেখ করতে হবে। আপনার রিসার্চ স্কিল প্রমাণ করার জন্য কোন পাবলিকেশন্স থেকে প্রকাশিত হয়েছে সেটা উল্লেখ করুণ। আপনার রিসার্চ সফটওয়্যার দক্ষতা থাকলে সেগুলো উল্লেখ করতে হবে। এরপর আপনি কেন আবেদনকৃত বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে চান সে বিষয়ে আলোচনা করুণ। তারপর, এই বিষয়ে পড়ার মাধ্যমে আপনি আপনার দেশ-জাতি সর্বোপরি মানবতার কল্যাণে আপনি কি করবেন সে বিষয়ে লিখতে হবে।

আপনি যদি আপনার Subject Change বা Track Change করেন তাহলে সেই বিষয়ে একটি প্যারা লিখতে হবে। যেমন ধরুণ আপনি ব্যাচেলর করেছেন Engineering বিষয়ে, এখন আপনি MBA করতে চাচ্ছেন- তাহলে আপনি কেন ইঞ্জিনিয়ারিং থেকে MBA করছেন সে বিষয়ে উল্লেখ করতে হবে। দুই বিষয়ে আবশ্যই সংযোগ করতে হবে। আপনার পূর্বোক্ত পঠিত বিষয়ের সাথে এখন যে বিষয়ে পড়তে চাচ্ছেন তার কি কি মিল আছে সেটা ঠিক রাখতে হবে। আর আপনি যে বিষয়ে পড়তে চাচ্ছেন সে বিষয়ে আপনি কিছু জানেন, সেটা আপনাকে উল্লেখ করতে হবে। সংযোগ স্থাপন করাটা এখানে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, আপনি যদি কোন Valid and Appropriate কারণ দেখাতে ব্যর্থ হন, তাহলে আপনার এডমিশন পর্যন্ত বাতিল হতে পারে।

আপনার রিসার্চ অথবা সাবজেক্ট নিয়ে লেখার সময় চেষ্টা করুণ যে বিশ্ববিদ্যালয়ে আবেদন করতে চান সে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন প্রফেসরকে মাথায় রেখে লিখতে। অর্থাৎ,প্রফেসরের রিসার্চ পেপার পড়ে তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আপনার পঠিত বিষয় নিয়ে লেখা এবং সে বিষয়ে উচ্চতর পড়াশোনার স্পৃহা ব্যক্ত করা।

Conclusion
শেষ প্যারায় থাকে Conclusion। এই Conclusion অংশে থাকে আপনি যে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে অথবা এই স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য যোগ্য ব্যক্তি সেই বিষায়ে পূর্বের আলোচনায় যে সকল যুক্তি আছে, সেইগুলো পুনরায় ব্যক্ত করা। আপনার যোগ্যতা ও দক্ষতা তুলে ধরার মাধ্যমে এটা প্রমাণ করা যে আপনি এই স্কলারশিপ বা নিদেন পক্ষে এডমিশন কনফর্ম করা। সামঞ্জস্য ও সংক্ষেপিত কিন্তু আপনার সকল দক্ষতার ও যোগ্যতার বিবরণ সম্বলিত SOP হবে আপনার এডমিশন ও স্কলারশিপের শেষ অস্ত্র।

SOP লেখা সময় সাপেক্ষ্য ব্যাপার। একটা ভালো SOP লেখার জন্য আপনাকে অনেকগুলো SOP পড়া উচিত। এতে আপনার লেখা ভালো হবে। তবে কখনোই অন্য SOP কপি করা উচিত হবে না। এতে বিপদ হতে পারে এমনকি কোন কারণে কপি হয়েছে সেটা তারা বুঝতে পারলে আপনার আবেদন বাতিল হয়ে যাবে।